স্বপ্ন প্রতিমা

প্রথম আলো ফাইল ছবি
প্রথম আলো ফাইল ছবি

বিকাশ পাল প্রতিমা শিল্পী। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে মেজ। বড় ভাই প্রকাশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে সরকারি কলেজের ইংরেজি শিক্ষক। বর্তমানে ঢাকায় কর্মরত। বর্তমান যুগে বাপ-দাদার পথ ধরে শুধুমাত্র প্রতিমা আর মাটির কাজ করলে সম্মান থাকে না। পেটও ভরে না। বাড়ির বড় ছেলে হিসেবে প্রকাশ সব সময়ই চেয়েছে সমাজের চোখে সম্মানজনক কোনো পেশা বেছে নিতে। তার সাফল্যে আত্মীয়স্বজন সকলেই গর্বিত। কেবল বাবা সুশীল পালের মনে খুঁতখুঁতি, বংশের জাত ব্যবসা থেকে তার সন্তানেরা সরে যাচ্ছে বলে।

বিকাশের ছোট বোন মালা বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দিচ্ছে। ওর ইচ্ছা ডাক্তার হবে। যদি চান্স না পায় তবে অন্তত ফার্মাসিতে অনার্স করবে। তিন ভাইবোনের মধ্যে বিকাশই একমাত্র ব্যতিক্রম। সে সব সময় সুন্দর সুন্দর প্রতিমা বানানোর স্বপ্ন দেখেছে। যখন ওর বয়স ছয় কী সাত তখন থেকেই বাবার সঙ্গে চলে যেত সরকার বাড়ির দুর্গা প্রতিমা বানাতে। প্রতি বছর সরকার বাড়ির প্রতিমা তৈরির কাজটি সুশীল পালের জন্য বাঁধা। দিনের পর দিন প্রতিমার কাঠামো বানানো থকে শুরু করে রং তুলিতে রূপদান পর্যন্ত প্রতিটি ধাপ বাবার সঙ্গে থেকে লক্ষ্য করত বিকাশ। প্রতিমা শিল্পে ছোট ছেলের এই আগ্রহ দেখে সুশীলের বুকটা ভরে উঠত।

কিন্তু বিকাশের মা সুলেখা খুব খুশি হতে পারেননি। তার ইচ্ছে ছেলে লেখাপড়া শিখে ভদ্র সমাজে চলার উপযুক্ত হয়ে উঠুক। ছেলেকে নিয়ে বাবা মায়ের ভিন্নমুখী প্রত্যাশা ও নিজের প্রাণের টান সব মিলিয়ে বিকাশ ভর্তি হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায়। এত দিন যে কাজটি সহজাত ভাবেই করেছে, সে কাজের পেছনের তত্ত্বগুলো জানতে পেরে বিকাশ বেশ উচ্ছ্বসিত। তবে প্রতি বছর দুর্গা পূজার আগে বাড়িতে গিয়ে বাবার কাজে সাহায্য করতে তার কখনো ভুল হয় না। এখন বিকাশ শুধু বাবার কাজের মুগ্ধ দর্শক নয়, সহকারীও বটে। আধুনিক চিত্রশিল্পের নানা বিষয়ে বাবা ছেলের কাছে জানতে চান। ছেলেও তার নতুন অর্জিত বিদ্যা বাবার সঙ্গে শেয়ার করতে পেরে মহা খুশি। প্রতিমা শিল্পেও যে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে সে বিষয়টিই তাদের আলোচনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রতিমা আর এখন শুধু খড়ের গাঁথুনির ওপর মাটির প্রলেপ দিয়ে তৈরি হয় না, পূজা শেষে বিসর্জন দেওয়ার জন্য।

প্রবাসীরা একবার প্রতিমা নিয়ে বারবার পূজা করেন। মাটির প্রতিমা এর জন্য উপযুক্ত নয়। এ জন্য ভিন্নভাবে প্রতিমা ‍তৈরি করতে হয়। অথচ ওপর থেকে দেখলে মনে হয় সেই মা দুর্গা ও তাঁর সন্তানেরা। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিকাশের সিনিয়র দাদা প্রভাত মাঝে মাঝেই কলকাতা যান প্রতিমা শিল্পীদের সঙ্গে দেখা করতে। তার ইচ্ছে বাংলাদেশেও এ ধরনের কাজ শুরু করার। এ কাজে বংশ পরম্পরায় চলে আসা শিল্পচর্চার পাশাপাশি আর্থিক লাভের দিকটিও বজায় থাকে। প্রতিমা তৈরিতে বিকাশের আগ্রহ দেখে প্রভাত বিকাশের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করে। দুজনে স্বপ্ন দেখে ভবিষ্যৎ প্রতিমা তৈরি করে বিদেশে পাঠানোর ব্যবসা শুরু করার।

এবার নববর্ষের দিন মঙ্গল শোভাযাত্রায় একটা বড়সড় মুখোশ বহন করতে বিকাশ ও তার বন্ধু শিবলি হিমশিম খাচ্ছিল। হঠাৎ শিবলিকে সরিয়ে দিয়ে প্রভাত এসে ওটার এক কোণা ধরে ফেলেন। বিকাশ ও শিবলি প্রথমে থমকে গেলেও পরে সামলে নেয়। প্রভাতদা এমনই। তবে ওরা জানত প্রভাত কলকাতা গেছেন। এরই মধ্যে ফিরে এসেছেন সেটা ওরা জানত না। তাই অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, কি ব্যাপার, তুমি না কলকাতায় গেলে?

: হ্যাঁ গেছিলাম, আবার চলেও এসেছি। একটা দারুণ খবর আছে।

: খবর, কীসের?

: শোন, কলকাতার এক প্রতিমা শিল্পী অনেকগুলো প্রতিমা বানানোর অর্ডার পেয়েছে। আমাকে বলেছে সবগুলোর গয়না, মুকুট তৈরি করে দিতে। বেশ কিছু টাকা পাওয়া যাবে।

: কিন্তু সময় কত দিন?

: দুই থেকে আড়াই মাস। জুনের শেষে ওদের ডেলিভারি দিতে হবে।

: বল কী, এত কম সময়ে কী করে হবে? পড়ালেখা, টিউশনি সব সামলে তুমি পারবে?

: আরে আমি একা করব কে বলেছে! তুইও আমার সাথে থাকবি।

: কিন্তু মা কী রাজি হবে? আমার পড়ালেখার ক্ষতি হবে যে।

: জীবনে এমন সুযোগ দুইবার আসে না। মাসি মেসোকে রাজি করানোর দায়িত্ব আমার।

প্রভাতের প্রস্তাবে দোদুল্যমানতায় দুলতে দুলতে মঙ্গল শোভাযাত্রা শেষ করে বিকাশ। শিবলিতো মহা উচ্ছ্বসিত এমন খবরে। ওর মাথায় কিছুতেই আসছে না বিকাশের মা-বাবা এতে আপত্তি করতে পারেন। সারা দিন ভেবে শেষে সন্ধ্যার দিকে মাকে ফোন করার সিদ্ধান্ত নেয় বিকাশ। তার দুই পাশে উৎসুক মুখে বসে আছে প্রভাত আর শিবলি। বিকাশ মোবাইলটি তুলে যখন ফোন করতে যাবে ঠিক তখনই ওটা বেজে উঠে। বাবা ফোন করেছেন। নিজেকে ফোন করতে হলো না দেখে হাফ ছেড়ে বাঁচে বিকাশ। ফোন রিসিভ করে বিকাশ স্পিকার অন করে দিল যাতে পাশের দুজন কথা শুনতে পারে।

: হ্যালো বাবা, শুভ নববর্ষ! তোমরা কেমন আছ? মালার পরীক্ষা কেমন চলছে?

ফোনের ওপাশে নীরবতা। বাবা কিছু বলছেন না বুঝে বিকাশ পড়ে যায় টেনশনে।

: হ্যালো বাবা, কিছু বলছ না কেন? কী হয়েছে?

: কী আর বলব...মালা খুব অসুস্থ..., হাসপাতালে।

: কী বলছ, কী হয়েছে ওর?

: এখানকার ডাক্তার বলেছে ঢাকায় নিয়ে যেতে। ডাক্তারই ফোন করে পিজি হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেছে। আমরা এখন ঢাকায় রওনা হচ্ছি। বাকিটা পরে বলব।

বাবা ফোন রেখে দেন। কী বলার জন্য বাবাকে ফোন করতে চেয়েছিল আর কী শুনল বিকাশ। প্রভাত ও শিবলি দুজনেই নির্বাক। প্রথম ধাক্কা সামলে নেওয়ার পর তিনজনে উঠে পড়ল পরবর্তী পদক্ষেপের ভাবনা নিয়ে। বাবাকে পরে আবার ফোন দিয়ে বিকাশ জানতে পারে মালার অসুখ স্নায়ুর। হঠাৎ পিঠে প্রচণ্ড ব্যথা, তারপর বমি। এরপর ধীরে ধীরে নিচের দিক থেকে অবশ হয়ে যাচ্ছে। ডাক্তার রেফার করেছেন নিউরো মেডিসিন বিভাগে। অবস্থা বুঝে নিউরো সার্জারিতে ভর্তি করা লাগতে পারে।

সেই রাতে বিকাশ, প্রভাত আর শিবলি অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করে সবচেয়ে ভালো ডাক্তারের অধীনে যাতে মালার চিকিৎসা হয় সেটা নিশ্চিত করে। এরপর শুরু হয় যমে মানুষে টানাটানি। প্রচুর টাকার জোগান দিতে হলো। শুরুতে বিকাশের দাদা ও বাবা অর্থের জোগান দিলেও তাদের সঞ্চয় শেষ হতে সময় লাগে না। এদিকে অবস্থার এমন নাটকীয় পরিবর্তনে বিকাশ যেন হঠাৎ করেই স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে। সে বাবা-মাকে জিজ্ঞাসা না করেই প্রভাতের কাজটি নিয়ে নিয়েছে। সারা দিন ক্লাস, হাসপাতাল দৌড়াদৌড়ি করে আর রাতে প্রতিমার কাজ। দুই মাস পর মালার অবস্থা কিছুটা উন্নতি হয়। বিকাশের প্রতিমার কাজও প্রায় শেষ। প্রভাত এগুলো নিয়ে কলকাতায় গেলে বেশ কিছু টাকা পাওয়া যাবে। বাবাকে টাকা পাওয়ার কথা জানালে প্রথমে তিনি কিছুটা অবাক হলেন। তবে এই দুর্দিনে কিছু টাকা পাওয়া যাচ্ছে ভেবে বেশি কথা বাড়ালেন না।

টানা চার মাস হাসপাতালে চিকিৎসার পর মালাকে যখন ছাড়া হলো তখন সে হারিয়ে ফেলেছে এক চোখের দৃষ্টি। বাম পায়ের জোর পুরোপুরি ফিরে পায়নি। ডাক্তার এর চেয়ে বেশি করতে পারেননি। ওষুধ চলবে আরও বেশ কিছুদিন। প্রতি মাসে একবার করে হাসপাতালে আসতে হবে। মালার মতো প্রাণবন্ত মেয়ের এই পরিণতি দেখে মা-বাবা ও ভাইদের মন ভেঙে গেছে। সকলেই আড়ালে চোখের জল ফেলে যাচ্ছে অবিরত। মালাকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় বিকাশও গেছে তার সঙ্গে। তার একটুও ইচ্ছে করছে না ঢাকায় ফিরে যেতে। মা বলেছেন কয়েকবার ফিরে যেতে, কিন্তু বিকাশের মুখের দিকে চেয়ে বলা বন্ধ করেছেন।

দুর্গাপূজার প্রতিমা বানানো শুরু করতে হবে। সরকার বাড়ি থেকে বারবার সুশীলকে ফোন করছে। কিন্তু মেয়ের এই অবস্থায় ভেতর থেকে সাড়া পাচ্ছেন না তিনি। বিকাশ বাবাকে জানায় এবারে প্রতিমা সে বানাতে চায়। ওর লেখাপড়ার ক্ষতি হবে বলে বাড়ির সকলে প্রথমে আপত্তি জানায়। কিন্তু বিকাশ সবাইকে আশ্বস্ত করে যে, এটা তার পড়াশোনার অ্যাসাইনমেন্ট হিসেবে দেখাতে পারবে। প্রভাত স্যারের সঙ্গে কথা বলে সবকিছু পাকাপাকি করেছে। এর জন্য পড়াশোনা খুব একটা পেছাবে না। এরপর মত না দিয়ে কীই–বা করবেন মা বাবা। বাড়ির সবাই উপলব্ধি করতে পারছে, মালাকে ছেড়ে বিকাশ এখন ঢাকায় যাবে না। তা ছাড়া মালার চিকিৎসার জন্য ধার দেনা হয়েছে প্রচুর। এ অবস্থায় দুর্গা প্রতিমার কাজটা ছেড়ে দিলে একদিকে যেমন সরকার বাড়ির সঙ্গে সম্পর্কটা সংকটাপন্ন হয় অন্যদিকে আর্থিক ক্ষতিও কম যায় না। অগত্যা সরকার মশাইয়ের সঙ্গে কথা বলে বিকাশকেই পাঠানো হয় দুর্গা প্রতিমা বানাতে।

ছেলেবেলা থেকে বাবার সঙ্গে বহুবার সরকার বাড়িতে এসেছে বিকাশ। মাটির দলা থেকে মায়ের রূপ ধারণ নিজের চোখের সামনেই ঘটেছে প্রতিবছর। কিন্তু এ বছর বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিন্ন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবকিছুই নির্ভর করছে তার নিজের ওপর। মা দুর্গা দেখতে কেমন হবেন, কোন দিকে তাকিয়ে কতটুকু হাসি দেবেন সবকিছু। প্রতিমা তৈরির জিনিসপত্র জোগাড় করতে কেটে গেল বেশ কয়েক দিন। কাঠামো তৈরি শুরু করতে গিয়ে প্রথম সে অনুভব করে বাবা কেন প্রতিমা গড়তে চাননি এ বছর। মনটা ভারী হয়ে গেল সঙ্গে সঙ্গে। শত চেষ্টা করেও কাজ এগোনো গেল না পরবর্তী কয়েক দিন।

একটু পর পর ফোন করে মালার সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে করে। কাজ হবে কী করে। প্রায় এক সপ্তাহ সময় লাগল কাজে মন বসাতে। আর একবার যখন মন বসে গেল, কাজ এগুলো দ্রুত গতিতে। তৈরি হয়ে গেল লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক গণেশ, প্যাঁচা, রাজহাঁস, ময়ূর আর ইঁদুর। মা দুর্গার রঙের কাজও প্রায় শেষ। কিন্তু মায়ের মুখের কাজ শেষে বিকাশ নিজেই চমকে গেল, এটা সে কী করেছে, মালার মুখের অবয়ব বসিয়ে দিয়েছে দুর্গার মুখে! বর্তমানের মলিন ভাবলেশহীন মালা নয়, আগের সেই প্রাণবন্ত মালা। বুঝতে পারে নিজের অজান্তেই সে বসিয়ে দিয়েছে মালার সেই মুখ। যে মুখটি ঠাঁই নিয়েছে অবচেতন মনের গভীরে। অবচেতনের প্রভাব পড়েছে চেতনের কাজে।

প্রথম বিহ্বলতা কেটে যাওয়ার পর নতুন আশঙ্কা ভর করে বিকাশের মনে। সরকার মশায় কীভাবে নেবেন বিষয়টিকে। গতানুগতিক মায়ের মুখের বদলে তিনি কী মেনে নিতে পারবেন মালার এই মুখকে। সে রাতে বিকাশের কিছুতেই ঘুম এল না। রং তুলি নিয়ে শুরু হলো এর ওপরে মায়ের পরাবাস্তব মুখকে ফুটিয়ে তোলার প্রয়াস। সারা রাত কাজের পর ফিরে পেল সেই পরাবাস্তব মুখ। এখন আর কেউ বুঝতে পারবে না এই মুখের আড়ালে লুকিয়ে আছে প্রিয় মালার মুখটি। শুধু বিকাশই জানবে নিজের মনে, এ তার স্বপ্ন প্রতিমা।

দিনের আলো ফোটার এখন আর অল্প কিছুক্ষণ বাকি। বিকাশ মন্দিরে পাশে তার শোবার খাটে গিয়ে শুয়ে পড়ল একটু ঘুমিয়ে নেওয়ার জন্য। একবারে না ঘুমালে যে দিনে কাজ করা যাবে না। ঠাকুর বানানের সময় এ ঘরটি বরাদ্দ থাকে পাল মশায়ের জন্য। বিকাশের চোখের পাতা যখন সবে বুজে এসেছে, তখন হঠাৎ কানে ভেসে আসে ভাঙাচোড়ার শব্দ। অনেকে একসঙ্গে কিছু ভাঙছে। নির্ঘুম রাত শেষের গভীর ঘুমও বেশিক্ষণ টিকল না। বিকাশ লাফ দিয়ে উঠে বসে বিছানায়। একটু ধাতস্থ হলে বুঝতে পারে শব্দ আসছে মন্দিরের দিকে থেকে। দৌড়ে মন্দিরের কাছে যেতে যেতে দেখে আলো আঁধারিতে কয়েকজন লোক দৌড়ে বের হয়ে যাচ্ছে মন্দির থেকে। সামনে মাটিতে পড়ে আছে দুর্গা মায়ের মুখমণ্ডল। মুখটি বুকে জড়িয়ে ধরে ডুকরে কেঁদে ওঠে বিকাশ। শব্দ হইচই শুনে বাড়ির ভেতর থেকে বেরিয়ে সরকার বাড়ির মানুষ। শোকে বিহ্বল বিকাশ তখন মায়ের ভাঙা মুখমণ্ডল বুকে জড়িয়ে নির্বাক পাথর। দুই চোখ বেয়ে শুধু অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে অঝোর ধারায়।