রাকিব–নদী রেস্টুরেন্টে বেশ অনেকক্ষণ সময় কাটাল। রেস্টুরেন্টে কাস্টমার নেই বললেই চলে। ওরা থাকতে থাকতে একজন এসে টেকওয়ের অর্ডার দিয়ে খানিকক্ষণ বসে খাবারটা নিয়ে গেল। অন্য একজন কাস্টমার এসে তড়িঘড়ি করে খেয়ে চলে গেলেন।
খাবারের দিকে মনোযোগ দেওয়ার চেয়ে রাকিব-নদী গল্পে বেশি মেতে উঠল। ওদের গল্প আর কিছু নয়, ফেসবুকের ফেক আইডি নিয়ে। নদীই প্রসঙ্গটা নিয়ে বলছে বেশি। বুয়েট থেকে পাস করা এক ছেলে ক্লাসমেট নাকি বাংলাদেশে পনেরোটা মেয়ের নাম দিয়ে পনেরোটা ফেক আইডি খুলে নিজের পোস্টে লাইক কমেন্ট বাড়াচ্ছে। অথচ সে একজন সরকারি প্রতিষ্ঠানের তরুণ ইঞ্জিনিয়ার। সরকারি অফিস বলে কাজের কাজ কিছু নেই। অফিসে যায়। কয়েকটা পত্রিকা নিয়ে বসে। আর নয়তো ফেসবুকে বড় বড় জ্ঞান বিলিয়ে নিজের পনেরোটা ফেক আইডি দিয়ে লাইক ও কমেন্ট বাড়ায়। এমন কাজটা নাকি আজকাল বাংলাদেশে অনেকেই করছে।
নদী হামিল্টনের প্রসঙ্গও টানল। হ্যামিল্টনে নাকি এর পুরো উল্টো চিত্র। এখানে কারও ফেক আইডি নেই। তবে উল্টো চিত্রটা হলো এই, এখানে কেউ কারও ছবি বা পোস্টে লাইক দেয় না বা কমেন্ট করে না। ওরা এ জন্য করে না, যদি কারও ছবি বা পোস্টে একটা লাইক বা কমেন্ট বেশি পড়ে যায়? আর ভুলক্রমে বেশি পড়ে গেলে অপরজন নাকি হিংসায় জ্বলে ওঠে!
রাকিব হ্যামিল্টনের বাঙালি কমিউনিটির কারও সঙ্গে তেমন একটা মেশেনি। এক নাজমুল আহসান বাদে তেমন কাউকে চেনেও না। তবে নদী মেশে। সে যেহেতু একটা বাঙালির বাসায় বোর্ডার হিসেবে আছে, তাই নাজমুল আহসান ও শিমুল ভাবির সঙ্গে তাকেও মিশতে হয়। নদীর অবশ্য মিশতে ভালোও লাগে। এরই মধ্যে সে বাংলাদেশ কমিউনিটির দেওয়া কারাপিরো লেকে পিকনিকে গিয়েছে।
রাকিব মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে নদীর কথাগুলো শুনছে। সে জানে, নদীর এসব কথাগুলো একেবারেই মূল্যহীন। প্রতিটা মানুষের এসব ফেসবুক বা সোশ্যাল মিডিয়ার বাইরেও অনেক কাজ পড়ে আছে। তারপরও সে নদীর কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনে। তার মানুষের কথা শুনতে ভালো লাগে। যদিও সেই ছাত্রজীবন থেকেই গল্প করার আসরে সে খুব কম কথা বলে। বরাবরই সে একজন ভালো শ্রোতা।
ওরা কারি পট রেস্টুরেন্ট থেকে যখন বের হলো তখন সবে আড়াইটা বাজে। গাড়িতে উঠে গাড়ি স্টার্ট দিতে দিতে রাকিব বলল, নদী, আমি সন্ধ্যায় মাউন্ট পিরংগিয়া থেকে নারোটো লেকে যেতে চাই।
নদী জিজ্ঞেস করল, নারোটো লেক, ওটা আবার কোথায়?
টিয়াওমুটু শহরে গিয়েছ না? ওই যে রোজ গার্ডেনে গিয়েছিলে? সেই টিয়াওমুটু শহরের খুব কাছাকাছি। তবে মাউন্ট পিরংগিয়া থেকে বেশ খানিকটা দূরে।
: বেশ খানিকটা দূর বলতে কত দূর?
: এই ধর, পঁচিশ কিলোমিটার।
: তাহলে তো খুব বেশি দূরে নয়।
: হ্যাঁ, কান্ট্রি সাইডের রোড দিয়ে গেলে বড়জোর বিশ মিনিট লাগবে।
: তাহলে আর অসুবিধা কী?
: অসুবিধার কিছু নেই। কিন্তু আমি সন্ধ্যার পর লেকের পাড়ে থাকতে চাচ্ছি।
: সন্ধ্যার পরে কেন?
: আমি ব্যাঙের ডাক শুনব।
: ব্যাঙের ডাক?
: হ্যাঁ। শুনেছি নারোটো লেকের পাড়ে সন্ধ্যায় ব্যাঙের ডাক শোনা যায়।
: নিউজিল্যান্ডের আর কোথাও শোনা যায় না?
: না। তবে একসময় নিউজিল্যান্ডে প্রচুর ব্যাঙ ছিল। কিন্তু প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। নিউজিল্যান্ডে আর কোথাও ব্যাঙ নেই। আদিবাসী মাউরিরা এক শ-দেড় শ বছর আগে ব্যাঙগুলো খেয়ে সাবাড় করে ফেলেছে। একমাত্র নারোটো লেকে গেলেই নাকি পাওয়া যায়। আর সন্ধ্যার পরে ওখানে ব্যাঙের সমস্বরে ডাক শোনা যায়।
: ব্যাপারটা তো ইন্টারেস্টিং?
: হ্যাঁ, বেশ ইন্টারেস্টিং।
: তা হঠাৎ ব্যাঙের ডাক শোনার এত আগ্রহ হলো কেন?
: জানি না নদী। অনেক দিন শুনি না তো, তাই।
: আমি তো আমার লাইফেও ব্যাঙের ডাক শুনিনি।
: হ্যাঁ, তুমি ফোনে বলেছিলে। এ জন্যই তোমার কথা ভেবেছি।
: আমার কথা কী ভেবেছেন?
: ওই তো, তোমাকে নিয়ে ব্যাঙের ডাক শোনাব। একটা গ্রামীণ আবহ সৃষ্টি হবে।
: গ্রামীণ আবহ! বেশ বলেছেন। গ্রামের তো আর কখনো যাওয়া হয়নি। আর ঢাকা শহরেই বা ব্যাঙ পাব কোথায় যে ব্যাঙের ডাক শুনব?
: কেন ধানমন্ডি লেকে গেলেই তো শোনা যায়। গুলশান লেকেও অনেক ব্যাঙ আছে।
: আমি জানতাম না তো? অবশ্য ঘটা করে ব্যাঙের ডাক শুনব, ওই চিন্তা কখনো মাথাতেই আসেনি।
: আজ তাহলে শোনো।
: হ্যাঁ, শুনব। একজন কবি মানুষের পাল্লায় পড়েছি না? কবিদের যে মাঝেমধ্যে কী কী খেয়াল হয়...হি–হি–হি!
রাকিবও নদীর কথায় হাসল। তবে শব্দ করে নয়। বলল, সন্ধ্যার পরে কিন্তু লেকের পাড়ে থাকতে হবে। অসুবিধা নেই তো?
নদী একটু ভেবে জিজ্ঞেস, আপনি থাকবেন তো? নাকি আমাকে একা বসিয়ে রেখে কোথাও চলে যাবেন?
: আমি আবার কোথায় যাব?
: তা আমি জানব কীভাবে? আপনি কবি মানুষ। কত খেয়াল আপনাদের মনে আসে?
: আমি থাকব। সন্ধ্যার পরে নারোটো লেকের পাড়ে বসে থাকব তো শুধুমাত্র ব্যাঙের ডাক শোনার জন্যই।
: তাহলে আমার থাকতে অসুবিধা নেই। আপনি পাশে থাকলে সন্ধ্যা কী, অনেক রাত পর্যন্ত লেকের পাড়ে বসে থাকতে আমার ভয় লাগবে না।
তার প্রতি নদীর এতটা বিশ্বাস জেনে রাকিবের বেশ ভালো লাগল। রাকিব দিঘল গ্রে স্ট্রিট ধরে কবহাম ড্রাইভের অভিমুখে গাড়ি চালাতে চালাতে একটু মুগ্ধতার দৃষ্টি নিয়েই নদীর দিকে তাকাল। তার কানের মধ্যে নদীর শেষ কথাটার একটা অংশই শুধু বাজছে—আপনি পাশে থাকলে! আপনি পাশে থাকলে...! রাকিব ভাবল, সত্যি মানুষের বিশ্বাসটা আসল। এই বিশ্বাস থেকেই সত্যিকারের ভালোবাসার জন্ম হয়।
গাড়িটা কবহাম ড্রাইভ এক্সপ্রেস হাইওয়েতে উঠতেই নদী জিজ্ঞেস করল, আমরা কি এখন সরাসরি মাউন্ট পিরংগিয়াতে চলে যাব?
রাকিব ঘড়ি দেখল। বলল, এখনো পৌনে তিনটা বাজে না। আসলেই এত তাড়াতাড়ি মাউন্ট পিরংগিয়াতে গিয়ে কী করব? সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত এখনো সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা হাতে। মাউন্ট পিরংগিয়াতে না হয় ঘণ্টা খানিক কাটালাম। তারপর বাকি সময়টা?
নদী বলল, কবি সাহেব, আমি কী করে বলব? আমি তো এখন আপনার ছায়া মাত্র।
: আমার ছায়া?
: জি, আপনার ছায়া।
: কথাটা বুঝলাম না।
: এত সহজ কথাটা না বুঝলে কেমনে হবে? আমি তো ভেবেছিলাম আপনি একজন চৌকস কবি।
: নদী, আমি কখনোই চৌকস কবি না। দুই কলম কবিতা লিখলেই কেউ চৌকস কবি হয়ে যায় না। আর চৌকস শব্দটার অনেকগুলো মিনিং আছে।
নদী হেসে বলল, আপনি দেখি আমার কথাটা সিরিয়াসলি নিচ্ছেন। আমি তো এমনিই ফান করে বলেছি।
রাকিব কিছু বলল না।
নদী নিজ থেকেই বলল, আমি যেহেতু আপনার সঙ্গে যাচ্ছি, তাই আমি আপনার ছায়া। একজন মানুষ যেদিকে যায়, তার ছায়াটাও সেদিকে যাবে, তাই না?
রাকিব সায় দিয়ে মৃদু হাসল। এবারও কিছু বলল না।
নদী জিজ্ঞেস করল, আপনার কি অন্য কোথাও যাওয়ার ইচ্ছে আছে?
রাকিব বলল, যাওয়া যায়। যাওয়ার পথে টেম্পল ভিউ পড়বে। ওখানে খানিকক্ষণ সময় কাটিয়ে যেতে পারি। তোমার ভালো লাগবে।
: টেম্পল ভিউ? আমি নাম শুনেছি। ওখানে ক্রিসমাস ও নিউ ইয়ার্সে অনেক লাইটিং ও ডেকোরেশন হয়।
: তুমি ওখানে গিয়েছ?
: না, শিমুল ভাবির মুখে শুনেছি। তারা নাকি প্রায় প্রতিটা ক্রিসমাস ও নিউ ইয়ার্সের সময় ওখানে লাইটিং দেখতে যান। হ্যামিল্টনের কাছেই তো মনে হয়।
: হ্যাঁ, নর্থ হ্যামিল্টনের কাছেই। গ্লেন ভিউ দিয়ে গেলে কলিন্স রোডে উঠতেই টেম্পলটা দেখা যায়। মাউন্ট পিরংগিয়া যাওয়ার পথেই পড়ে। সামান্য একটু যা ঘুরতে হয়।
নদী মাথা ঝাঁকিয়ে বলল, তাহলে ওখানেই আগে চলেন। আমিও একটা নতুন জায়গা দেখলাম। এখন তো মনে হয় লাইটিং বা ডেকোরেশনের কিছু নেই?
রাকিব বলল, না। তবে সাদামাটা টেম্পলটা দেখতেও অনেক সুন্দর।
নদী মাথা ঝাঁকিয়ে বলল, জো হুকুম জনাব। হি হি হি!
ওরা ওয়াইকাটো হাসপাতালের পাশ দিয়ে গ্লেনভিউ ও ডিনওয়েল সাবার্ব পেরিয়ে হ্যামিল্টন নর্থ ছাড়তে তিনটার ওপরে বেজে গেল। গাড়িটা যাচ্ছে দিঘল কলিন্স রোড ধরে পশ্চিমে। কলিন্স রোডটা শুরু হয়েছে গ্লেন ভিউ সাবার্ব থেকেই। সাবার্বের ভেতর কলিন্স রোডের গতি সীমা প্রায় ঘণ্টায় পঞ্চাশ কিলোমিটার হলেও শহরের সীমানা ছাড়তেই এর গতি সীমা বেড়ে গিয়ে ঘণ্টায় এক শ কিলোমিটার হয়ে গেছে। কলিন্স রোডটাও কেমন ঢেউখেলানো। গাড়িটা চলছে ঢেউখেলানো গতিতে। মনে হচ্ছে যেন ঢেউয়ের ওপর গাড়িটা দুলছে।
কলিন্স রোড ধরে খানিকক্ষণ যেতেই ডানের অনেকটা দূরের টেম্পল ভিউর টেম্পলটা রাকিবের চোখে পড়ল। এই টেম্পলকে কেন্দ্র করেই টেম্পল ভিউ নামে ছোট্ট একটা শহর গড়ে উঠেছে। হ্যামিল্টনের এত কাছাকাছি হয়েও টেম্পল ভিউ শহরটা একটা স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্য ও প্রকৃতির সমস্ত সৌন্দর্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
রাকিব নদীর দিকে তাকিয়ে বলল, নদী, টেম্পলটা দেখতে পাচ্ছ?
নদী এতক্ষণ মনোযোগ দিয়ে কলিন্স রোডের দুই পাশের বিস্তৃত খামারের সবুজ-সমতল ভূমিগুলো দেখছিল আর তার মার কথা ভাবছিল। এমন বিস্তৃত সবুজ প্রান্তর দেখে মা কী মুগ্ধই না হতেন!
রাকিবের ডাকে নদী একটু চমকে উঠে বলল, হ্যাঁ, রাকিব ভাই, কোথায়?
রাকিব বলল, ওই তো, দেখ, টেম্পলের চূড়াটা দেখা যাচ্ছে।
নদী বলল, তাই তো!
কলিন্স রোড ধরে গাড়িটা যতই এগোচ্ছে, টেম্পলের চূড়াটা ততই স্পষ্ট হয়ে উঠছে হচ্ছে। দুই পাশের বিস্তৃত খামার একে একে পেছনে পড়ে যাচ্ছে।
রাকিব বলল, এই টেম্পলটা খ্রিষ্টান টেম্পল হলেও সনাতন খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের চেয়ে ওরা একটু ব্যতিক্রম।
নদী জিজ্ঞেস করল, সেটা কেমন?
: ওরা বিশ্বাস করে, এক শ-দুই শ বছর পরপর যিশু খ্রিষ্টের প্রতিনিধি হিসেবে একেকজন পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেন ও যিশুর বার্তা বহন করেন। সর্বশেষ জন্মগ্রহণ করেন জোসেফ স্মিথ। সেটাও প্রায় দুই শ বছর আগে। তার আগে জন্মগ্রহণ করেছিলেন ম্যাথিয়ো। ম্যাথিয়োর আগে টমোথি। এর আগে সাইমন পিটার ও জন। এদের বলে চার্চেস অব ক্রাইস্ট লেটার ডে সেন্ট। এদের অনুসারীদের বলে মোমিন।
: আরে বাব্বা, আপনি তো পুরো হিস্ট্রি জেনে এসেছেন।
: কোথাও ঘুরতে গেলে সেই জায়গাটা সম্বন্ধে জেনে গেলে ভালো হয়। ভ্রমণে আনন্দ পাওয়া যায়। আমি এই টেম্পল ভিউতে আগেও একবার এসেছি। তাই এর ইতিহাস জানি।
: বেশ তো!
: হ্যাঁ, শোনো, এরা কিন্তু সনাতন খ্রিষ্টানদের চেয়ে আলাদা। ক্যাথলিক, অ্যাঙ্গোলিকান যাই বলো তাদের থেকে এই টেম্পলের অনুসারীদের আকাশ-পাতাল পার্থক্য। একে তো ক্যাথলিক ও অ্যাঙ্গোলিকানরা তাদের ধর্মীয় উপাসনালয়কে বলে চার্চ বা গির্জা। কিন্তু এরা বলে টেম্পল। এদের সঙ্গে হিন্দু ধর্মের অনেক মিল আছে।
: সেটা কেমন?
: হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা যেমন মনে করে এক শ-দুই শ বছর পরপর একেকজন ভগবানের প্রতিনিধি হয়ে পৃথিবীতে আসেন, তেমনই এই টেম্পলের ধর্মাবলম্বীরাও তাই মনে করে।
নদী হুট করে কথার মাঝখানে জিজ্ঞেস করে বসল, রাকিব ভাই, আপনি ধর্ম বিশ্বাস করেন?
রাকিব পাল্টা জিজ্ঞেস করল, হঠাৎ এই প্রশ্ন কেন?
: এমনিই জানতে ইচ্ছে হলো।
: হ্যাঁ, বিশ্বাস করি। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের ওপরে একজন নিয়তি নিয়ন্তা বসে আছেন।
: বাহ, দারুণ। আপনি দুটো দারুণ শব্দ ব্যবহার করেছেন।
: কোন দুটো শব্দ?
: নিয়তি নিয়ন্তা।
রাকিব হাসল। বলল, ওই তো, বিশ্ব নিয়ন্তা বা নিয়তি নিয়ন্তা, এগুলো একই মিনিংয়ের শব্দ।
নদী বলল, হুম। আমিও বিশ্বাস করি। তবে আমি আমার মার কাছ থেকে শিখেছি, মানুষের ধর্মের চেয়ে বড় ধর্ম আর কিছু নেই।
: মানুষের ধর্ম বলতে কী বোঝাতে চাচ্ছ?
: মানুষের ধর্ম মানে মানবতার ধর্ম। আমি জানি না, আপনাকে একটা কথা বলেছি কিনা।
: কোন কথা?
: আমার মা কিন্তু কনভার্টেড মুসলমান।
: কনভার্টেড মুসলমান মানে?
: তিনি আগে হিন্দু ছিলেন। আমার বাবাকে বিয়ে করার সময় মুসলমান হন। তিনি তো অর্ধেক জীবন হিন্দু ছিলেন। এই অর্ধেক জীবন তিনি মুসলমান। তিনি দুটো ধর্মের আলোকেই বলেন, হিউম্যান বিং ফার্স্ট। মানবতার ধর্মই বড় ধর্ম।
রাকিব মাথা ঝাঁকিয়ে মুগ্ধ দৃষ্টি মেলে বলল, তোমার মা সত্য কথাই বলেছেন। আমিও তাই বিশ্বাস করি।
নদী বলল, আমি জানি! (ক্রমশ)
মহিবুল আলম: গোল্ড কোস্ট, কুইন্সল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া। ইমেইল: <[email protected]>