একটি সরল নদীর গল্প-তেরো

অলংকরণ: মাসুক হেলাল
অলংকরণ: মাসুক হেলাল

জাহিদ শুনেছে, আজমল হোসেনের এ অবস্থায় শুধুমাত্র স্থানীয় সাংসদ কিছু করতে পারবেন। স্থানীয় সাংসদ যদি ইমিগ্রেশনে একটা ফোন করেন বা একটা চিঠি লিখে দেন, হয়তো আজমল হোসেনের কোনো একটা গতি হতে পারে। কিন্তু এ জন্য স্থানীয় বাঙালি কমিউনিটির বড় ধরনের সমর্থন ও সহযোগিতা লাগবে।

কিন্তু জাহিদ প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বেশ কিছু বাঙালির ধারে ধারে ঘুরে কারও কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পাওয়া দূরের কথা আশ্বাসটুকুও পায়নি। অবশ্য সে তাওরাঙ্গা-টিপুকি বা মাউন্ট মাঙ্গানুই শহরের খুব কম বাঙালিকেই চেনে। হেদায়েত হোসেন তো প্রথম থেকেই দূরে দূরে আছেন। আজমল হোসেন ইমিগ্রেশন অফিসার ও পুলিশের কাছে ধরা পড়ার পর কী সব আজব ব্যবহার করছেন। হেস্টিংস থেকে সাইদ আহমেদ যা-ই বলুন, জাহিদের কেন জানি মনে হচ্ছে, আজমল হোসেনের এ ব্যাপারটার পেছনে হেদায়েত হোসেনের হাত আছে!

জাহিদের আজ আধাবেলা কাজ ছিল। বেথেলেহ্যাম কিউই ফলের অরচার্ডের উইন্টার প্রুনিং আজ শেষ হয়ে গেছে। আগামীকাল কোনো কাজ নেই। পরশু থেকে আবার টিপুকির মন্টোগোমেরি অরচার্ডে কাজ শুরু হবে। তাই জাহিদ আজ দুপুরে বাসায় ফিরে গোসল করে হ্যামিল্টনের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। এখন সরাসরি রাকিবের বাসায় যাবে। ওখানে গিয়ে রাকিবকে সঙ্গে নিয়ে আজমল হোসেনকে দেখতে হ্যামিল্টন পুলিশ স্টেশনে যাবে।

তাওরাঙ্গা শহর থেকে হ্যামিল্টন শহরের দূরত্ব এক শ আট কিলোমিটার। গাড়িতে বড়জোর এক ঘণ্টা দশ মিনিট লাগে। আজ শনিবার বলে রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা ছিল। জাহিদ এক ঘণ্টার মধ্যেই হ্যামিল্টন পৌঁছে গেল। কেমব্রিজ হয়ে হ্যামিল্টন ইস্টে রাকিবের বাসা খুঁজে পেতে তার মাত্র পাঁচ মিনিট লাগল। এর আগে জাহিদ কখনো রাকিবের বাসায় আসেনি। আজই প্রথম।

জাহিদ ড্রাইভওয়েতে গাড়ি পার্ক করে সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় উঠে দরজায় নক করতেই রাকিব দরজা খুলল। রাকিব দরজা খুলেই হাসি মুখে বলল, আস, ভেতরে আস। আমি তোমার অপেক্ষাতেই বসে আছি।

জাহিদ ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে বলল, তোমার বাসাটা খুব সুন্দর। সামনে-পেছনে এত গাছ! বাসাটা দেখলেই মনে হয়, এখানে একজন কবি বসবাস করে।

রাকিব হাসল। বলল, অনেকেই এই বাসাটার প্রশংসা করে। আমি কিন্তু এত কিছু ভেবে বাসাটা ভাড়া নিইনি। অকল্যান্ড থেকে এসে তাড়াহুড়ার মধ্যে একটা বাসা ভাড়া নেওয়ার দরকার ছিল। এজেন্টের মাধ্যমে এই বাসাটাই পেয়েছিলাম। আমি খুঁজছিলাম এক বেডরুমের বাসা। কিন্তু এই বাসাটা দুই বেডরুমের। তারপরও নিয়েছিলাম।

: এই বাসায় তাহলে দীর্ঘদিন ধরে থাকছ?

: হ্যাঁ, বলতে পার। প্রায় পাঁচ বছর তো হয়ে যাচ্ছে।

: দুই বেডরুমের বাসা। একটা রুম কাউকে ভাড়া দিলেই পারতে?

: ছিল তো। আতিক নামের একজন ছিল। আমার সমবয়সী।

: কোন আতিক?

: তুমি চিনবে কিনা জানি না। সে একসময় তাওরাঙ্গা ছিল।

: আমি চিনি মনে হয়। এ দেশি একজনকে বিয়ে করেছিল না? ভ্যাবিয়ান নাম?

: তুমি তো ভালোই চেন।

: সে তার বউকে নিয়ে হেস্টিংসে বেড়াতে গিয়েছিল। সাইদ ভাইয়ের বাসায় উঠেছিল। সেখানেই পরিচয়। সেটা অবশ্য কয়েক বছর আগে। কথাবার্তায় বেশ চালাক-চালাক ভাব।

রাকিব হেসে ফেলল। বলল, তুমি তো মানুষকে বেশ ভালোভাবেই যাচাই করতে পার।

জাহিদ বলল, আমি তোমার মতো কবি না হতে পারি। কিন্তু আমি কষ্ট করে বড় হয়েছি। বারো ঘাটের মানুষ আমি চিনি। আচ্ছা, এখনো কি সে তার বউ ভ্যাবিয়ানের সঙ্গে সংসার করছে?

: না, ভ্যাবিয়ানের সঙ্গে সংসার ভেঙে গেছে তিন-সাড়ে তিন বছর আগেই। এখন আবার নতুন বিয়ে করেছে?

: বাঙালি নিশ্চয়ই?

: হ্যাঁ, বাঙালি। কীভাবে বুঝলে?

: আরে, এটা তো সাধারণ সেন্সের ব্যাপার। সে আগে ভ্যাবিয়ানকে বিয়ে করেছিল নিউজিল্যান্ডের নাগরিকত্বের জন্য। এখন কোনো বাঙালিকে দেশ থেকে বিয়ে করে নিয়ে আসবে সংসার করার জন্য। সবাই যা করে। শুধু তুমিই এখনো করলে না।

রাকিব আবার হাসল। বলল, আচ্ছা, বাদ দাও ওসব কথা। তুমি হাতমুখ ধুয়ে নাও। আমি তোমার জন্য না খেয়ে বসে আছি।

জাহিদ বলল, ও, সরি। আমি তো দুপুরে কাজ থেকে এসে গোসল করে খেয়ে বের হয়েছি।

: কেন খেয়ে এলে? আমি তোমার জন্য রান্না করে রেখেছি।

: কী রান্না করেছ?

: তেমন বিশেষ কিছু না। ভুনা খিচুড়ি রান্না করেছি। গরুর মাংস। আর ডিম ভাজি।

: ওরে বাব্বা! আমার পছন্দের খাবার। হ্যামিল্টন পুলিশ স্টেশন থেকে এসে বিকেলের দিকে বা রাতে ডিনার করব।

রাকিব মাথা ঝাঁকিয়ে বলল, আচ্ছা।

জাহিদ বলল, তুমি খেয়ে নাও।

রাকিব বলল, আমি আরেকজনের জন্য অপেক্ষা করছি। সে এখনই এসে যাবে। সে আসলেই খাব।

জাহিদ জিজ্ঞেস করল, কে সে?

রাকিব আস্তে করে বলল, নদী।

: নদী! মেয়ে?

: নদী তো মেয়েদের নামই হয়।

: বাঙালি?

: হ্যাঁ, বাঙালি।

: এখানকার কোনো বাঙালির মেয়ে?

: না, সে ওয়াইকাটো ইউনিভার্সিটিতে মাস্টার্স করছে।

: কোন সাবজেক্টে?

: মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে।

: ওরে বাব্বা, এটা তো কঠিন সাবজেক্ট। মেয়েরা এত কঠিন সাবজেক্ট পড়ে নাকি।

: অনেক মেয়েই পড়ে। বুয়েটে আগে মেয়েদের চেয়ে ছেলেদের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। এখন ছেলেমেয়ে প্রায় সমান-সমান।

: নদীও কি বুয়েটে পড়েছে?

রাকিব মাথা ঝাঁকিয়ে বলল, হ্যাঁ।

জাহিদ হেসে বলল, তুমি আর্টসের ছাত্র হয়ে সায়েন্সের ছাত্রীর সঙ্গে প্রেম। তাও আবার এই বিদেশে। ভালো ভালো। তোমরা কবিরা পার বটে।

রাকিব জিজ্ঞেস করল, আর্টসের ছাত্র সায়েন্সের ছাত্রীর সঙ্গে প্রেম করতে পারবে না, এমন কোনো কথা আছে নাকি?

: তা নেই। আচ্ছা, তোমাদের সম্পর্ক কবে থেকে?

: আমাদের ঘটা করে কোনো সম্পর্ক হয়নি যে সময়টা বলতে পারব।

: সম্পর্ক তো হয়েছে?

: তাও জানি না। আমাদের মধ্যে এ ধরনের কোনো কথা হয়নি।

: তাহলে?

: তাহলে বলে কোনো কথা নেই।

: যারা কবি-সাহিত্যিক, তারা আজব একটা চিজ! রাজ্য ছারখার করে ফেলে, কিন্তু ভেতরের কথা ভেতরে রাখে।

রাকিব হেসে ফেলল। কিছু বলল না।

বাইরে আজ চকচকে রোদ উঠেছে। শীত যাই যাই করছে। বসন্ত এখন ঘরের দুয়ারে। আজকাল বৃষ্টিও কম হচ্ছে। কোনো কোনো রাস্তার দুই পাশে সারি করে লাগানো চেরি গাছগুলোতে ফুল ফুটতে শুরু করেছে। মানুষ জাপানকে বলে চেরি ফুলের দেশ। রাকিব কখনো জাপান যায়নি। তবে তার বিশ্বাস, জাপানের আগে নিউজিল্যান্ড আবিষ্কার হলে মানুষ নিউজিল্যান্ডকেই বলত চেরি ফুলের দেশ। যেমনটা মানুষজন জাপানকে বলে প্রথম সূর্যোদয়ের দেশ। প্রকৃত অর্থে নিউজিল্যান্ড হলো প্রথম সূর্যোদয়ের দেশ। নিউজিল্যান্ডের গিজবোর্নে পৃথিবীর সবচেয়ে আগে সূর্যোদয় হয়।

জাহিদও খানিকক্ষণ চুপ থেকে জিজ্ঞেস করল, কী ভাবছ?

রাকিব বলল, কিছু না। এবার আজমল স্যারে কথা বলো।

: স্যারের কথা কী বলব। স্যারের কথা ভেবে মন খারাপ করতে চাই না।

: সেদিন ফোনে তোমার কাছ থেকে স্যারের কথা শুনে আমারও মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল। সবারই কোনো না কোনোভাবে নিউজিল্যান্ডে একটা ব্যবস্থা হয়ে গেছে। আজমল স্যারেরই কোনো ব্যবস্থা হলো না।

জাহিদ একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল, হ্যাঁ। তুমিই ঠিকই বলেছ। আসলে দোষটা স্যারের বয়সের ছিল। এ বয়সে কেউ এভাবে বিদেশে আসে?

রাকিব বলল, তিনি এসেছিলেন তো ভালোভাবেই। ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট হয়ে। মাস্টার্স করবেন বলে এসেছিলেন। কিন্তু লেখাপড়া না করে এভাবে থেকে যাওয়াটাই বোকামি হয়েছিল।

: স্যার কী করবেন বলো? দেশে স্যারের স্ত্রী ও একটা ছেলে আছে। ওদিকে কলেজের চাকরিটাও চলে গিয়েছিল। আর?

: আর কী?

: স্যার একটু বুদ্ধিমান হলেও হতো। এমন বোকা মানুষ কেউ বিদেশ করে?

: ওটাই প্রধান সমস্যা ছিল। বোকা মানুষের জন্য বিদেশ না। বিদেশ বড় কঠিন স্থান। এখানকার বাস্তবতা আরও কঠিন।

জাহিদ মাথা ঝাঁকিয়ে বলল, তুমি ঠিকই বলেছ।

রাকিব প্রসঙ্গ পাল্টিয়ে বলল, জাহিদ, তুমি প্রথম আমার বাসায় এসেছ। খালি মুখে বসে আছ। এক কাপ কফি বা চাতো খাবে?

জাহিদ বলল, আচ্ছা, চা বানাও। দুধ চা। চিনি বেশি দিয়ো। আমি চা খাই চিনির জন্যই। হা হা, হা হা!

রাকিবও হাসল। বলল, আমি ছোটবেলায় মনে করতাম, চা খায় চিনির জন্য। চা খাওয়ার পর কাপের নিচে যে চিনিটা জমে থাকত, ওটা আমার খুব পছন্দের খাবার ছিল। আঙুল দিয়ে তুলে তুলে খেতাম।

জাহিদ বলল, তুমি তো আমার মতো। আমিও ছোটবেলায় তাই করতাম। হা হা, হা হা।

রাকিব আবার হাসল। হাসি ধরে রেখেই সোফা ছেড়ে উঠে কিচেনে এল। হট ওয়াটার জগে পানি নিয়ে সুইচ অন করে দিল। চায়ের কাপ নিতে গিয়ে শেলফ থেকে নিজের জন্যও একটা কফির কাপ নিল। খালি পেটে ব্ল্যাক কফি খেতে তার বেশ ভালো লাগে।

জাহিদ লাউঞ্জ থেকে গলা বাড়িয়ে বলল, রাকিব, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি হ্যামিল্টন চলে আসব।

রাকিব জিজ্ঞেস করল, হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত কেন?

: হঠাৎ নয়। হেস্টিংস ছেড়ে আসার পর থেকেই ভাবছিলাম। কিন্তু স্যারের জন্য এত দিন সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। এখন স্যারের যেহেতু বাংলাদেশই চলে যেতে হবে, তাই ভাবছি, আর কয়েক সপ্তাহ তাওরাঙ্গায় কাজ করে কিউই ফ্রুটের উইন্টার প্রুনিং শেষ হলে হ্যামিল্টন চলে আসব।

: এখানে এসে কী করবে? এখানে তো অরচার্ড বা ফার্ম নেই।

: অরচার্ডের কাজ আর করব না। প্রায় ছয়টা বছর করলাম। এখন হ্যামিল্টন এসে লেখাপড়া করব। একটা কোর্সে ভর্তি হব। তোমার মতো চাকরি নেব।

: কী ধরনের কোর্স করার ইচ্ছে।

: কোনো ডিপ্লোমা কোর্স। কনস্ট্রাকশনের কোর্স করব। আর নয়তো অটোমোবাইলের কোর্স। এখনো সিদ্ধান্ত নিইনি কোন কোর্স করব।

: ভালো তো, খুবই ভালো। অটোমোবাইলেরটা কর। বেশ ডিমান্ড আছে। চাকরি পেতে সুবিধা হবে।

: আচ্ছা, আগে হ্যামিল্টন আসি। এসে কি তোমার বাসায় ওঠা যাবে?

: হ্যাঁ হ্যাঁ, উঠতে পার। তোমার অসুবিধা না হলেই হয়। একটা রুম তো খালিই পড়ে আছে।

: আমার কী অসুবিধা হবে? অসুবিধা হলে তোমার...। জাহিদ কথাটা শেষ করতে পারল না। তখনই দরজায় কেউ নক করল।

জাহিদ দরজার দিকে তাকাল।

রাকিব বুঝতে পারল, নদী এসেছে। সে কিচেন ছেড়ে লাউঞ্জ পেরিয়ে দরজা খুলল। দেখল, ঠিকই নদী এসেছে।

জাহিদ দুপুরে খাবে না বললেও শেষপর্যন্ত রাকিব ও নদীর সঙ্গে ডাইনিং টেবিলে খেতে বসল। ডাইনিং টেবিলে ওরা যতক্ষণ না সময় নিয়ে খেল, তার চেয়ে বেশি সময় ওরা গল্পে মেতে উঠল। গল্পের প্রসঙ্গ আর কিছু নয়, রাকিবের কবিতা। কলেজজীবনে রাকিব যে সবার হিংসার পাত্র ছিল, জাহিদ সেই প্রসঙ্গই বেশি টানল।

জাহিদের কথাগুলো নদীই বেশি আগ্রহ নিয়ে শুনছিল। রাকিব মৃদু মৃদু হাসছিল।

ওরা যখন হ্যামিল্টন পুলিশ স্টেশনের উদ্দেশে বের হলো, তখন প্রায় মধ্য বিকেল। রাকিবের হ্যামিল্টন ইস্টের বাসা থেকে পুলিশ স্টেশন খুব বেশি দূরে নয়। মাত্র পাঁচ-সাত মিনিটের গাড়ির ড্রাইভ। ম্যাকফার্লেন স্ট্রিট থেকে বের হয়ে ওয়েলিংটন স্ট্রিট ধরে গ্রে স্ট্রিটে বামে মোড় নিয়ে সোজা পথ ধরে গেলেই ব্রিজ স্ট্রিট। ব্রিজ স্ট্রিটের চার্চের উল্টোপাশেই হ্যামিল্টন সেন্ট্রাল পুলিশ স্টেশন। রিজিয়নাল পুলিশ স্টেশন হিসেবে হ্যামিল্টন পুলিশ স্টেশন অনেক বড়। বিশাল সাততলা দালানের একেবারে নিচতলায় স্বল্পস্থায়ী আসামিদের রাখার ব্যবস্থা।

জাহিদ ও রাকিবের সঙ্গে নদীও আজমল হোসেনকে দেখতে এসেছে। আজমল হোসেন যেহেতু দাগি কোনো আসামি নন, তাই তার সঙ্গে ওদের সাক্ষাতের কোনো সমস্যা হলো না। পনেরো-বিশ মিনিট বসতেই ওদের ভেতরে ডাকা হলো। আজমল হোসেনের সঙ্গে যে রুমটায় ওদের সাক্ষাতের ব্যবস্থা করা হলো, সেই রুমটার মাঝখানে লোহার গ্রিল দেওয়া। ওরা লোহার গ্রিলের এপাশ-ওপাশ দাঁড়াল।

মাঝখানে তাওরাঙ্গা শহরে আসার পর আজমল হোসেন কিউই ফলের বাগানে কাজ করতে পারছেন বলে তার শরীর-স্বাস্থ্য বেশ ভালো হয়ে উঠেছিল। কিন্তু গত সাত-আট দিনে জেলখানায় থেকে তার শরীর যেন অর্ধেক হয়ে গেছে। তার দিকে তাকানোই যাচ্ছে না।

জাহিদ তো আজমল হোসেনকে দেখার পর ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল। রাকিব ও নদীর মন ভারী হয়ে উঠল। কিন্তু আজমল হোসেন রুগ্‌ণ চেহারায় কেমন কাঠ দৃষ্টি। তার মধ্যে কোনো ব্যাপারেই যেন বিকার নেই...! (পর্ব আট সমাপ্ত)

মহিবুল আলম: গোল্ড কোস্ট, কুইন্সল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া। ইমেইল <[email protected]>

ধারাবাহিক এ উপন্যাসের আগের পর্ব পড়তে ক্লিক করুন: