ঢাবি অ্যালামনাই ইউকের বিজয় দিবস উদ্যাপন

অনুষ্ঠানে অতিথি ও অ্যালামনাইরা
অনুষ্ঠানে অতিথি ও অ্যালামনাইরা

নতুন প্রজন্মের কাছে বিজয় ফুলের তাৎপর্য তুলে ধরা, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে বিজয় দিবস পালন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ইউকে। গত মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) পূর্ব লন্ডনের ব্রাডি আর্ট সেন্টারে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে অনেক আলোচকই মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তাদের পরিবারের ওপর পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের নৃশংস অত্যাচার ও হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেন।

সংগীত পরিবেশনা
সংগীত পরিবেশনা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাইয়ের বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশনের সহকারী হাইকমিশনার মোহাম্মদ জুলকার নাইন। মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে অ্যালামনাইয়ের আহ্বায়ক মারুক চৌধুরী উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের পরিচয় করিয়ে দেন। মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই গৌস সুলতান, আবু মুসা হাসান ও মোহাম্মদ আবদুল হাদি এবং লোকমান হোসাইন, ফয়জুল ইসলাম খান ও প্রকৌশলী মেফতা ইসলাম।

অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ছিল নতুন প্রজন্মের কাছে বিজয় ফুলের তাৎপর্য তুলে ধরা। বহির্বিশ্বে বসবাসরত বাংলাদেশিদের কাছে বিজয় ফুল হয়ে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক। এই কর্মসূচির মাধ্যমে দেশ-বিদেশে বিজয় ফুল তৈরির ফাঁকে ফাঁকে মুক্তিযোদ্ধারা নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের কাছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলেন। 

মুক্তিযোদ্ধারা নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের কাছে মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলেন
মুক্তিযোদ্ধারা নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের কাছে মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলেন

এখানে বিজয় ফুল একটা উপলক্ষ। বাচ্চারা বিজয় ফুল তৈরি করার সময় একজন মুক্তিযোদ্ধার পাশে বসে মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধ জয়ের গল্প শোনে। এতে নতুন প্রজন্মের কাছে একাত্তরের বার্তা পৌঁছে যায়।

বক্তব্য দিচ্ছেন একজন আলোচক
বক্তব্য দিচ্ছেন একজন আলোচক

ছেলেমেয়েরা যখন নিজ হাতে পাঁচটি সবুজ পাপড়ি ও একটি লাল গোলকের সম্মিলনে ফুল তৈরি করে তখন তাদের বলা হয় মাঝখানের লাল বর্ণের বৃত্ত আমাদের রক্তে কেনা বিজয়ের লাল সূর্য। আর পাঁচটি পাপড়ির মাধ্যমে আমাদের ধর্মনিরপেক্ষতা, নানা ধর্মের মানুষের সহমর্মিতা, আমাদের মৌলিক অধিকার, দেশের নদী, সবুজ প্রকৃতি ইত্যাদি।

বক্তব্য দিচ্ছেন একজন আলোচক
বক্তব্য দিচ্ছেন একজন আলোচক

তাই বিজয় ফুল বানানোর সময় নতুন প্রজন্মের সামনে গোটা বাংলাদেশ ফুটে ওঠে। বিজয় ফুলের সমন্বয়কারী কবি মিল্টন রহমানের পরিচালনায় নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে যুক্তরাজ্যে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আইনজীবী আনিস রহমান ওবিই, মুক্তিযোদ্ধা আবু মুসা হাসান ও মুক্তিযোদ্ধা লোকমান হোসাইন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রেক্ষাপট ও মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরেন। নতুন প্রজন্মের মধ্যে উপস্থিত ছিল সৈয়দ রাহা দেওয়ান, অনুভা হক, সৈয়দ আদিত্য, ডানা দত্ত, শায়ান্ন, আলমীর, নীরবান ও আদরীত প্রমুখ।

বক্তব্য দিচ্ছেন একজন আলোচক
বক্তব্য দিচ্ছেন একজন আলোচক

বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন এম এ রকিব, ইসমাইল হোসাইন, জালাল উদ্দীন, ফয়জুর রহমান খান, নিলুফা ইয়াসমীন, সৈয়দ ইকবাল, অজয় রায়, বিধান গোস্বামী, এস এ মকু, প্রদীপ মজুমদার, আবু হুসাইন, প্রশান্ত দত্ত পুরকায়স্থ, চৌধুরী হাফিজ, সিরাজুল বাসিত চৌধুরী, সৈয়দ হামিদুল হক, তানভীর আহমেদ, কামরুল হাসান, মুস্তাফিজুর রহমান, এ কে এম রবিউল ইসলাম, সৈয়দ আনিসুজ্জামান, এ কে এম সালিম, মুজাহিদুল ইসলাম, কাজী শাহীন শাহ, আবদুল মুকিত চৌধুরী, মুনীর চৌধুরী, কাজী আসিক রহমান, রিপা রকীব, নারগিস সাহেদা, আরিনা সিদ্দিকী, ঝুমুর দত্ত, ইউসুফ ইকবাল ও শাহ আকবর আলী। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হাইকমিশনের হেড অব চ্যান্সারি সুদীপ্ত আলম ও ফাস্ট সেক্রেটারি শফিকুল আলম।

বক্তব্য দিচ্ছেন একজন আলোচক
বক্তব্য দিচ্ছেন একজন আলোচক

আলোচনা ও স্মৃতিচারণ শেষে তানভীর আহমেদ ও সুপ্রভার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে কথাসাহিত্যিক সৈয়দ শামসুল হকের পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায় কাব্যনাটক থেকে আবৃত্তি করেন উদয় শংকর দাস। সংগীত পরিবেশন করেন রিপা সুলতানা, কনক বারমা, তামান্না ইকবাল, মিলন বিশ্বাস ও অনন্ত।