একুশ বাঙালি জাতীয়তাবাদের মূল ভিত্তি

আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন মিজানুর রহমান
আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন মিজানুর রহমান

একুশ বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মূলভিত্তি। একুশের চেতনায় উদ্দীপ্ত হয়ে বাংলাদেশকে ২০২১ সাল নাগাদ মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশে পরিণত করার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে হবে। কানাডার রাজধানী অটোয়ায় মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনায় সভাপতির বক্তব্যে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মিজানুর রহমান এ কথা বলেছেন।

কানাডায় যথাযোগ্য মর্যাদায় বাংলাদেশ হাইকমিশন ২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করেছে। এ দিন সকাল ১০টায় বাংলাদেশ হাউসে হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে হাইকমিশনার মিজানুর রহমান জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন। এরপর দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা এবং ১৯৫২ সালের ভাষাশহীদসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে শাহাদতবরণকারী ও ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকার চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডে নিহত লোকজনের আত্মার মাগফিরাত ও ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়।

সাংস্কৃতিক পরিবেশনা
সাংস্কৃতিক পরিবেশনা

সন্ধ্যা ছয়টায় অটোয়ায় সেন্ট অ্যান্থনিজ ব্যাংকুয়েট হলে এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মিজানুর রহমান। হাইকমিশনের কাউন্সেলর ও দূতালয়প্রধান ফারহানা আহমেদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে ভাষাশহীদদের সম্মানে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে কাউন্সেলর (রাজনৈতিক) মিয়া মো. মাইনুল কবির, কাউন্সেলর (পাসপোর্ট ও ভিসা) মো. সাখাওয়াৎ হোসেন, প্রথম সচিব (বাণিজ্যিক) মো. শাকিল মাহমুদ ও প্রথম সচিব অপর্ণা রানী পাল এ দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন।

সভাপতির বক্তব্যে মিজানুর রহমান আরও বলেন, বর্তমানে কানাডার পার্লামেন্টে বিল ‘এস-২৪৭’ অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এ বিল পাস হলে সমগ্র কানাডায় সরকারিভাবে ২১ ফেব্রুয়ারিতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপিত হবে। বাংলাদেশিদের জন্য এটা হবে অত্যন্ত গর্বের। একুশ ফেব্রুয়ারিকে ১৯৯৯ সালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে জাতিসংঘের স্বীকৃতির ‌ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার ও কানাডাপ্রবাসী বাংলাদেশিদের বিশেষ করে ‘মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ লাভারস অব দ্য ওয়ার্ল্ড সোসাইটি’ সংগঠনের নেতাদের অগ্রণী ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন।

মিজানুর রহমান কানাডার পার্লামেন্টে বিল ‘এস-২৪৭’ উত্থাপনের জন্য কানাডায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের বিভিন্ন সংগঠন বিশেষত বাংলা ক্যারাভান সংগঠনের জোরালো ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি টরন্টোতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্যোগে একটি শহীদ মিনার নির্মাণের প্রচেষ্টা এবং এ ক্ষেত্রে হাইকমিশনের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন।

জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন মিজানুর রহমান
জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন মিজানুর রহমান

পরে স্থানীয় শিল্পীসহ হাইকমিশনের কর্মকর্তা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন। শিশু-কিশোরদের পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করে আমানী, আলিয়া জামান, ওয়াজিদ জামান ও মাশরুর মাহিন কবির। এরপর মো. সাখাওয়াৎ হোসেন, ফারহানা আহমেদ চৌধুরী, নাদিরা হক, ফারাহ নাজ, অং সুয়ে থোয়াই, শিউলি হক, নার্গিস আক্তার রুবি, ডালিয়া ইয়াসমিন, গিয়াস ইকবাল সোহেল ও নাসরিন শশী সংগীত পরিবেশন করেন। জুলফি সাদেক, শাহ বাহাউদ্দিন শিশির ও শিউলি হক কবিতা আবৃত্তি করেন। এ ছাড়া মো. সাখাওয়াৎ হোসেন ভাষা আন্দোলনের ওপর স্বরচিত পুঁথি পাঠ করেন।

আটোয়ায় বসবাসরত সর্বস্তরের বাংলাদেশিসহ আমন্ত্রিত স্থানীয় অতিথিরা অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন। বিজ্ঞপ্তি

অনুষ্ঠানে উপস্থিতি
অনুষ্ঠানে উপস্থিতি