ভাষা আন্দোলন আমাদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস

অতিথিদের একাংশ
অতিথিদের একাংশ

ভাষা আন্দোলন আমাদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। মা, মাতৃভূমি ও মাতৃভাষা আমাদের আত্মার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এই বন্ধন আমাদের প্রাণপ্রিয় বাংলা সংস্কৃতিচর্চায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আমরা আমাদের প্রাণপ্রিয় মাতৃভাষা বাংলা এই সুদূর প্রবাসে জার্মানির সাক্সনি প্রদেশের রাজধানী ড্রেসডেন শহরে বুকের মধ্যে ধারণ ও লালন করি। প্রবাসের প্রাত্যহিক জীবনে জার্মান ভাষার ব্যবহার মাতৃভাষার চর্চা তুলনামূলকভাবে কমিয়ে দেয়। এখানে বেড়ে ওঠা কোমলমতি সোনামণিরা আস্তে আস্তে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে এখানকার ভাষা আর সংস্কৃতিতে। ভুলতে বসে শিকড়ের মাতৃভাষা বাংলাকে।

শিশুদের অঙ্কন প্রতিযোগিতার বিজয়ীরা
শিশুদের অঙ্কন প্রতিযোগিতার বিজয়ীরা

গত বছরের ধারাবাহিতায় আমরা ড্রেসডেন বাংলাদেশিরা স্থানীয় ইন্টিগ্রেশন অ্যান্ড ফরেনার কমিশনের সহযোগিতায় গত রোববার (২৪ ফেব্রুয়ারি) শহরের টাউন হলে বড় পরিসরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করেছি। এ অনুষ্ঠানে স্থানীয় প্রতিনিধি, প্রবাসী বাংলাদেশি, অন্য ভাষাভাষী, গণমাধ্যমকর্মীসহ প্রায় দেড় শ অতিথি অংশ নেন।

ভাষাশহীদদের সম্মানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা
ভাষাশহীদদের সম্মানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা

আয়োজনের শুরুতে মাতৃভাষার গুরুত্ব ও ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করেন প্রবাসী বাংলাদেশি ড. শাহিনুর রাহমান ও ড. মাহমুদ হোসেন। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ড্রেসডেনের ইন্টিগ্রেশন অ্যান্ড ফরেনার কমিশনারের প্রধান ড. হোসাইন হাশাম। আলোচনা সভায় আলোচকদের বক্তব্যে প্রতীয়মান হয়, ভাষা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য সর্বজনীন মানকে প্রতিনিধিত্ব ও সমাজকে একসঙ্গে ধরে রাখতে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সেই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও ভাষার গুরুত্বকে স্মরণ করে।

অনুষ্ঠানে বাংলাসহ সর্বমোট ১৮টি ভাষার (জার্মান, ইংরেজি, ফরাসি, গ্রিক, আরবি, হিন্দি, উর্দু, সিংহলি, মালয়, ওলোফ ইত্যাদি) অতিথিরা বাংলাদেশিদের গড়া অস্থায়ী শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের সম্মানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

সাংস্কৃতিক পরিবেশনা
সাংস্কৃতিক পরিবেশনা

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী সানিরুজ্জামান শুভর গাওয়া ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি...’, সৌরভ সরকারের বাঁশির সুরের মূর্ছনা আর শিশুশিল্পী জাফরিন রাহমানের নৃত্য দর্শকদের বিশেষভাবে আকর্ষিত করেছে। এ ছাড়া ছিল অন্য দেশের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।

অনুষ্ঠানের অন্যতম অংশ ছিল শিশুশিল্পীদের আন্তর্জাতিক অঙ্কন প্রতিযোগিতা। বাংলাদেশের পটভূমিতে শহীদ মিনারের ছবি এঁকে বাংলাদেশি শিশুশিল্পী জুবায়ের রাহমান আরাফ এ প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে।

সাংস্কৃতিক পরিবেশনা
সাংস্কৃতিক পরিবেশনা

যাঁদের প্রচেষ্টায় এ অনুষ্ঠান আয়োজন সম্ভব হয়েছে, তাঁরা হলেন ড. শাহিনুর রাহমান, ড. মাহমুদ হোসেন, সাজ্জাদ হোসেন, সুলতানা রাহমান, ওয়াহিদা আফরোজ কলি, ড. সুজিত কুমার সরকার, আনিস মোস্তফা, আনিস, শান্ত, নিবিড়, মোশারফ, আবান, ইসলামসহ অনেকে।

উপস্থিত অতিথি ও বিভিন্ন ভাষাভাষীর প্রতিনিধিরা বিদেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতে এ প্রচেষ্টার সঙ্গে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।