ক্যামেলস ব্যাক পার্ক থেকে সূর্যাস্ত দেখা
আইডাহো অঙ্গরাজ্যের বয়েসিতে এসেছি তখন সবেমাত্র নয় দিন হয়েছে। জেট ল্যাগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ক্যাম্পাস ও এর আশপাশে হেঁটে হেঁটে ভ্রমণ চলছিল। হঠাৎ করেই ঠিক হলো ‘টেবল রকে’ সূর্যাস্ত দেখতে যাব। যেহেতু আমরা নতুন, এখনো আমাদের কেনাকাটার পর্ব শেষ হয়নি, তাই ঠিক হলো প্রথমে কিছু গ্রোসারি শপিং হবে, তারপর টেবল রক যাব। কেনাকাটা করতে গিয়ে দেরি হওয়ায় টেবল রক আর যাওয়া হলো না। কারণ রাত ৯টায় গেট বন্ধ করে দেয়।
পরে ঠিক হলো আশপাশের পার্কের মধ্যে ক্যামেলস ব্যাক পার্কে (Camel's Back Park) গিয়ে সূর্যাস্ত দেখব। এটি স্থাপিত হয় ১৯৬৫ সালে ১১ একর জমি নিয়ে। পার্কে পৌঁছে পাহাড় বেয়ে ওঠার জন্য বালুর মধ্য দিয়ে দিলাম ইনিশিয়াল এক দৌড়। কিছুক্ষণ পরে বুঝলাম ভাতে-মাছে বড় হওয়া আমার এত এনার্জি নেই। ওদিকে ৬–৭ বছরের এক ছোট্ট মেয়ে নিজেই পাহাড়ে উঠে আবার নিচে নামছে। কোনো সাহায্য লাগবে কি না, জানতে চাওয়ায় সে ‘না’ বলল। ঘাস–লতাপাতা খেয়েও এরা কেমনে এত এনার্জি পায় আল্লাহ মালুম!
হাঁপিয়ে হাঁপিয়ে হেঁটে হেঁটে ওপরে উঠতে লাগলাম। ওঠা শেষ করে দেখলাম অসাধারণ দৃশ্য। কিছুক্ষণ ফটোসেশন হলো। তারপর সবাই মিলে সূর্যকে সেদিনের মতো বিদায় নিতে দেখলাম। মনে হলো আল্লাহর দেওয়া প্রাকৃতিক নিদর্শনগুলো দেখতে পাওয়াটা আসলেই সৌভাগ্যের ব্যাপার।
এখানে পিকনিক স্পট, বাস্কেটবল কোর্ট ও আউটডোর জিম সবই আছে। তারপর পাহাড়ের রাস্তা ধরে কিছুক্ষণ ড্রাইভ চলল। রাস্তার আশপাশ অনেক সুন্দর। তারপর গেলাম বয়েসি ডিপোতে। এটি স্থাপিত হয় ১৯২৫ সালে। এখানে ১৯৩৯ সালের একটি ট্রেন রাখা আছে। এই ট্রেনলাইন আমাকে বাংলাদেশের ট্রেনলাইনের কথা মনে করাল।
ঝরনার পাশে বসে রাতের পুরো বয়েসির ডাউনটাউনের সৌন্দর্য উপভোগ করলাম এক ঘণ্টা ধরে। তারপর একরাশ ভালো লাগা আর মুগ্ধতা নিয়ে বাসার উদ্দেশে রওনা দিলাম।