ন্যাশভিলে দুই বাংলার বাঙালিদের আড্ডা

আড্ডায় অংশগ্রহণকারীদের একাংশ। ছবি: লেখক
আড্ডায় অংশগ্রহণকারীদের একাংশ। ছবি: লেখক

যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি অঙ্গরাজ্যের রাজধানী ন্যাশভিলে হয়ে গেল বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের বৈকালিক আড্ডা। মেহারী মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক শ্যামলী মুখার্জির আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে জনা পঞ্চাশেক বাংলা ভাষাভাষী আমেরিকাপ্রবাসী একত্র হয়েছিলেন ন্যাশভিল পাবলিক লাইব্রেরির বেলভিউ শাখার মিলনায়তনে। আয়োজনে আড্ডা আর গল্পগুজবের পাশাপাশি দেশি খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সম্প্রতি এই আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়।

শুরুতেই আয়োজক শ্যামলী মুখার্জি অংশগ্রহণকারী সবাইকে অভ্যর্থনা জানিয়ে আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কে আলোকপাত করে বক্তব্য দেন। ন্যাশভিল শহরে বাঙালির বসবাস অনেক আগে থেকেই। এই শহরে স্বল্প মেয়াদে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে আসা যুবক-যুবতীদের পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী অভিবাসীদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। সবাই নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে একই সংস্কৃতির মানুষ হওয়া সত্ত্বেও বিভিন্ন বয়সী মানুষদের মধ্যে যোগাযোগ না থাকার প্রবণতা হামেশাই লক্ষ করা যায়। বৈকালিক আড্ডার মতো আয়োজনগুলো জোয়ান-বুড়োদের মধ্যকার এই ব্যবধান অনেকটাই কমিয়ে আনবে বলে আয়োজক মত প্রকাশ করেন। এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন ষাটের দশকের দেশত্যাগী প্রবীণের পাশাপাশি বছর দুয়েক আগে আমেরিকায় আসা শিক্ষার্থী নবীনেরাও।

অনুষ্ঠানে আগত নবীন-প্রবীণ পরিচয় পর্বে বক্তারা আয়োজনের যথার্থতা তুলে ধরে বলেন, নিজের ভাষায় কথা বলতে পারাটা যে কী সৌভাগ্যের, সেটা প্রবাসীরাই ভালো বুঝতে পারেন। মায়ের ভাষায় কথা বলার জন্য অতীতে মানুষ তার জীবনবাজি রেখে আন্দোলন করেছে, জীবন দিয়ে এই অধিকার আদায় করেছে। বৈকালিক আড্ডার মতো এ ধরনের উদ্যোগ বাংলা ভাষাভাষী প্রবাসীদের জন্য সে অধিকার চর্চার কেন্দ্র হয়ে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে দুপুরের খাবারেরও আয়োজন করা হয়েছিল অংশগ্রহণকারীদের জন্য। বাঙালি সমাজেরই একেক সদস্য একেকটা খাবার রান্না করে নিয়ে এসেছিলেন এই আড্ডায়। খাওয়াদাওয়া শেষে প্রবাসী বাঙালি লেখিকা রমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস সুজন মাঝি রে–এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়। আড্ডায় অংশগ্রহণকারীরা বিশেষ ছাড়ে এই বই সংগ্রহ করেন।