২৫ মার্চের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দাবি

অনুষ্ঠানে প্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে গণহত্যায় নিহত ব্যক্তিদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়
অনুষ্ঠানে প্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে গণহত্যায় নিহত ব্যক্তিদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়

অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে গণহত্যা দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে ভিয়েনার হউফসাইলে বাংলাদেশ দূতাবাসে গতকাল ২৫ মার্চ বিকেলে প্রদীপ প্রজ্বালন ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর। সঞ্চালনা করেন কাউন্সেলর ও চ্যান্সারিপ্রধান রাহাত বিন জামান।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ২৫ মার্চ কালরাতে গণহত্যার শিকার সব শহীদসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগকারী শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর প্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্বের স্বাধীনতাসংগ্রামে শহীদ ও গণহত্যায় নিহত ব্যক্তিদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে গণহত্যা দিবস উপলক্ষে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়।

সভায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সর্ব ইউরোপিয়ান শাখার সভাপতি অস্ট্রিয়াপ্রবাসী এম নজরুল ইসলাম, অস্ট্রিয়া শাখার সভাপতি খন্দকার হাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ অস্ট্রিয়া ইউনিট কমান্ডের কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা বায়েজিদ মীর, মুক্তিযোদ্ধা আ স ম আবদুর রহিম, মোশারফ হোসেন, বখতিয়ার রানা প্রমুখ।

আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন মো. আবু জাফর
আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন মো. আবু জাফর

রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের মধ্যরাত থেকে বাংলাদেশে আরম্ভ হয়েছিল পাকিস্তানি হানাদার সেনাবাহিনীর নৃশংসতম গণহত্যাযজ্ঞ। মানবজাতির স্মরণকালের ইতিহাসে যার নজির নেই। তিনি ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একযোগে দেশ গড়ার কাজে এগিয়ে আসার জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান।

এম নজরুল ইসলাম বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের ভয়াল নিষ্ঠুরতার স্মৃতি বাঙালিদের এখনো কাঁদায়। পাকিস্তানিদের ওই বর্বরতা সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে নতুন করে জানানো প্রয়োজন। আজকের বিশ্বমানবতার অগ্রযাত্রার স্বার্থে গণহত্যার মতো নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জন্য ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিতে হবে। এই দাবির প্রতি বিশ্ববাসীর সমর্থন জানাবে এবং জাতিসংঘ পদক্ষেপ নেবে—আজকের দিনে এটাই প্রত্যাশা।

খন্দকার হাফিজুর রহমান বলেন, ‘২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস ঘোষণা করে মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদের মহান স্বীকৃতি ও সম্মান দেখিয়েছে সরকার। এ জন্য আমরা সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।’

আলোচনায় বক্তব্য দেন এম নজরুল ইসলাম
আলোচনায় বক্তব্য দেন এম নজরুল ইসলাম

বায়েজিদ মীর বলেন, ‘আজ জাতিসংঘের প্রতি আমাদের আহ্বান, ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিন।’

আ স ম আবদুর রহিম বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানিদের সেই পৈশাচিক বর্বরতা গণহত্যার ইতিহাসে এক ভয়াবহতম ঘটনা।

সাইফুল ইসলাম বলেন, একাত্তরের নয় মাস পাকিস্তানিরা বাংলাদেশে যে গণহত্যা করেছে, তার বিচার একদিন হবেই।

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু ও মহান মুক্তিযুদ্ধের সব শহীদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত এবং দেশ ও জাতির অব্যাহত সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন দূতাবাসের সহকারী কনস্যুলার জুবায়দুল হক চৌধুরী।