দেশের গতিশীল অগ্রগতিকে বেগবান করার আহ্বান

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়ামে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধান অতিথি
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়ামে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধান অতিথি

রাশিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস যথাযথ মর্যাদা ও নানা কর্মসূচির মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্‌যাপন এবং গণহত্যা দিবস পালন করেছে। আলাদা দুটি কর্মসূচির মাধ্যমে গতকাল ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্‌যাপন এবং ২৫ মার্চ ভাবগাম্ভীর্যে গণহত্যা দিবস পালন করা হয়।

স্বাধীনতা দিবস উদ্‌যাপন
বাংলাদেশ দূতাবাস যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসবমুখর পরিবেশে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্‌যাপন করে। দিবসটি উপলক্ষে সকালে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. এস এম সাইফুল হক দূতাবাসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী ও উপস্থিত বাংলাদেশি নাগরিকদের নিয়ে রাজধানী মস্কোয় দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়ামে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন রাষ্ট্রদূত
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়ামে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন রাষ্ট্রদূত

স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্‌যাপন উপলক্ষে দুই ভাগে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রথম ভাগে রাশিয়ায় নিয়োজিত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতসহ বিভিন্ন স্তরের কূটনীতিক ও রাশিয়া সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সম্মানে দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা ও মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের প্রধান ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের আফগানিস্তানবিষয়ক বিশেষ দূত জামির নাবিইয়েভিচ কাবুলভ। অনুষ্ঠানে প্রায় ২০০ অতিথি উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ এবং মুক্তিযুদ্ধে মহান শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সহযোগিতার কথা কৃতজ্ঞতাভরে স্মরণ করেন। এ ছাড়া তিনি বিগত ১০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও বাংলাদেশ-রাশিয়া পারস্পরিক সুসম্পর্ক বিশেষত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলা ভোলায় গ্যাস অনুসন্ধানে রাশিয়ার সহযোগিতার বিষয়ে আলোকপাত করেন।

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের একাংশ
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের একাংশ

জামির নাবিইয়েভিচ কাবুলভ তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের কথা স্মরণ করে বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভ মোটেই সহজ ছিল না। বঙ্গবন্ধুর দৃঢ় নেতৃত্ব আর সর্বস্তরের মানুষের সর্বাত্মক অংশগ্রহণের ফলেই স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব হয়েছে। স্বাধীনতা–পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ–রাশিয়া সুসম্পর্কের জন্য তিনি বাংলাদেশের সরকার ও জনগণকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও রাশিয়ার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ভবিষ্যতে এই বাণিজ্য বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। রাশিয়া-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রদূতের প্রশংসা করেন।

দিনের দ্বিতীয় ভাগে রাশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের নিয়ে দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়ামে আলোচনা অনুষ্ঠান ও নৈশভোজের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা আরও গতিশীল করার জন্য সবাইকে আহ্বান জানান। মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে রাশিয়াপ্রবাসী বাংলাদেশি তিনজন বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে (সিআইপি) সংবর্ধনা দেওয়া হয়। প্রবাসী বাংলাদেশি, রাশিয়ায় অধ্যয়নরত বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রী, রাশিয়ান নাগরিকসহ প্রায় ৩০০ জন এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

রাশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের নিয়ে দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের একাংশ
রাশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের নিয়ে দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের একাংশ

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দূতাবাসের কাউন্সেলর ও দূতালয়প্রধান আন্দ্রিয় দ্রং।

গণহত্যা দিবস পালন
দূতাবাস যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যে গণহত্যা দিবস পালন করেছে। এ উপলক্ষে ২৫ মার্চ দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়ামে এক বিশেষ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে নিহত শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বালন ও দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।

অনুষ্ঠানে রাশিয়াপ্রবাসী বাংলাদেশি তিনজন বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে (সিআইপি) সংবর্ধনা দেওয়া হয়
অনুষ্ঠানে রাশিয়াপ্রবাসী বাংলাদেশি তিনজন বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে (সিআইপি) সংবর্ধনা দেওয়া হয়

আলোচনায় রাষ্ট্রদূত এস এম সাইফুল হক, দূতাবাসের কর্মকর্তা, বঙ্গবন্ধু পরিষদ রাশিয়া ও রাশিয়ান অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (র‌্যাব) নেতারা অংশগ্রহণ করেন।

রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে বলেন, ২৫ মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে কালরাত। এই এক রাতেই পাকিস্তান সেনাবাহিনী দুই লাখ বাঙালিকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল। তিনি ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতির প্রয়োজনীয়তার ওপর আলোকপাত করেন।

অনুষ্ঠানে গণহত্যার ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র ‘একাত্তরের গণহত্যা ও বধ্যভূমি’ প্রদর্শন করা হয়। বিজ্ঞপ্তি

গণহত্যা দিবসের অনুষ্ঠানে ২৫ মার্চের কালরাতে নিহত শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বালন করা হয়
গণহত্যা দিবসের অনুষ্ঠানে ২৫ মার্চের কালরাতে নিহত শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বালন করা হয়