রোমে গ্রাহক সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন

বক্তব্য দিচ্ছেন রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার
বক্তব্য দিচ্ছেন রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার

ইতালিতে প্রায় ৩ লাখ বাংলাদেশির অবস্থান। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বৈধ পথে দেশটি থেকে বাংলাদেশে ৫১০ দশমিক ৪৪ মিলিয়ন ইউএস ডলার, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৬৬২ দশমিক ২২ মিলিয়ন ইউএস ডলার ও চলতি অর্থবছরের (জুলাই ’১৮ থেকে ফেব্রুয়ারি ’১৯ পর্যন্ত) ৫১০ দশমিক ৪৪ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠানো হয় বাংলাদেশে। রেমিট্যান্স প্রেরণের তালিকায় থাকা দেশগুলোর মধ্যে ইতালি নবম অবস্থানে রয়েছে।

ইতালি থেকে বাংলাদেশে অর্থ প্রেরণের মাধ্যম জনতা এক্সচেঞ্জ কোম্পানি। বাংলাদেশের সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি ২০০২ সালে ইতালির রাজধানী রোমে ও ২০০৪ সালে মিলানে যাত্রা শুরু করে।

গত ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ কোম্পানির উদ্যোগে রোমের বাংলাদেশি–অধ্যুষিত পিয়াচ্ছা ভিত্তরিও এলাকার হোটেল ফুডস অব রমা অ্যান্ড ইন্ডিয়ায় এক গ্রাহক সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার। বিশেষ অতিথি ছিলেন জনতা এক্সচেঞ্জ কোম্পানি এসআরএল, ইতালির চেয়ারম্যান ও জনতা ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশের সিইও অ্যান্ড এমডি মো. আবদুছ ছালাম আজাদ এবং বাংলাদেশ দূতাবাসের ইকোনমিক কাউন্সেলর ও কোম্পানির ডিরেক্টর মানস মিত্র। সভাপতিত্ব করেন কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আলী হোসেন।

বক্তব্য দিচ্ছেন মো. আবদুছ ছালাম আজাদ
বক্তব্য দিচ্ছেন মো. আবদুছ ছালাম আজাদ

অনুষ্ঠানে শতাধিক গ্রাহক, শুভানুধ্যায়ী, সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

মো. আলী হোসেনের স্বাগতিক বক্তব্যের পর মানস মিত্র কোম্পানির সার্বিক চিত্র ও ২০১৮ সালে কোম্পানির অর্জনসমূহের ওপর বিস্তারিত আলোকপাত করেন। বিশেষত তিনি ২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে কোম্পানির রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি, রাজস্ব আয় বৃদ্ধি, ইতালির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ব্যাংক অব ইতালি) সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন, তাদের উত্থাপিত প্রায় সব আপত্তির নিষ্পত্তিকরণ এবং ২০১২ সালের পর প্রথমবারের মতো কোম্পানির ঘুরে দাঁড়ানোর বিষয়সমূহ ও এর প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করেন। তিনি জনতা এক্সচেঞ্জ কোম্পানির প্রতিযোগিতামূলক বিনিময় হারের উল্লেখ করে আগত গ্রাহক ও শুভানুধ্যায়ীদের কোম্পানির মাধ্যমে অর্থ প্রেরণের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি ভবিষ্যতেও এ কোম্পানির মাধ্যমে অর্থ প্রেরণ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।

এরপর মুক্ত আলোচনা পর্বে উপস্থিত গ্রাহক ও শুভানুধ্যায়ীরা তাঁদের মতামত ও পরামর্শ দেন।

সমাবেশে গ্রাহক ও শুভানুধ্যায়ীরা
সমাবেশে গ্রাহক ও শুভানুধ্যায়ীরা

রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার গ্রাহক ও শুভানুধ্যায়ীদের মতামত ও পরামর্শসমূহের বিষয়ে তাঁর বক্তব্য দেন। তিনি কোম্পানির রেমিট্যান্স বৃদ্ধির জন্য প্রচার–প্রচারণায় অধিক মনোনিবেশ করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে আলোকপাত করেন। এ ছাড়া তিনি কোম্পানির মাত্র দুটি শাখার (রোম ও মিলান) ওপর নির্ভরশীল না থেকে এজেন্ট নিয়োগের মাধ্যমে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধির জন্য পরামর্শ দেন। সর্বোপরি তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের তাদের কষ্টার্জিত মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা বৈধ চ্যানেলে দেশে পাঠানের জন্য অনুরোধ করেন।

মো. আবদুছ ছালাম আজাদ জনতা এক্সচেঞ্জ কোম্পানি ও জনতা ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবসা পরিধি, আর্থিক কাঠামো, ঋণপ্রবাহ ইত্যাদিসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত বক্তব্য দেন। বাংলাদেশের বর্তমান মজবুত অর্থনৈতিক কাঠামো, জিডিপির প্রবৃদ্ধি, বাজেটের পরিধি ইত্যাদির তথ্যভিত্তিক চিত্র উপস্থাপন করে তিনি মানি লন্ডারিং ও জঙ্গি অর্থায়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের কঠোর অবস্থানের উল্লেখ করেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, জনতা এক্সচেঞ্জ কোম্পানির সেবা অব্যাহত রাখা সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার এবং এটি বন্ধ করার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য তিনি গ্রাহকদের আহ্বান জানান। জনতা এক্সচেঞ্জ কোম্পানি বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, এই কোম্পানির মাধ্যমে প্রেরিত অর্থ রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টিযুক্ত উল্লেখ করে তিনি জনতা এক্সচেঞ্জ কোম্পানির মাধ্যমে অর্থ প্রেরণের জন্য সবাইকে আহ্বান জানান।