নাইজেরিয়ায় বর্ষবরণ ও মুজিবনগর দিবস পালন

বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা
বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা

নাইজেরিয়ার রাজধানী আবুজায় বাংলাদেশ হাইকমিশন সাড়ম্বরে বাংলা নববর্ষ উদ্‌যাপন ও যথাযোগ্য মর্যাদায় ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালন করেছে। পৃথক কর্মসূচির মাধ্যমে বর্ষবরণ ও মুজিবনগর দিবস পালন করা হয়।

সাড়ম্বরে বর্ষবরণ 

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে গত রোববার (১৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ হাইকমিশন এক আলোচনা সভা ও বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সুমধুর গান, দৃষ্টিনন্দন নাচ, আবৃত্তি ও ঐতিহ্যবাহী দেশীয় খাবারের মাধ্যমে নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়া হয়।

বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন মো. শামীম আহসান
বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন মো. শামীম আহসান

অনুষ্ঠানে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। পরে শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি বাঙালি সংস্কৃতির অসাম্প্রদায়িক চেতনার কথা তুলে ধরতে গিয়ে সম্প্রতি ইউনেসকো কর্তৃক মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ‘মানবজাতির বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য’ (Intangible Cultural Heritage of Mankind) হিসেবে স্বীকৃতিদানের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এটি নববর্ষ উদ্‌যাপনে একটি নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। দেশে ও প্রবাসে বসবাসরত সব বাঙালির জন্য নববর্ষ আরও সুখ ও শান্তি বয়ে আনবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। অন্য বক্তারাও নববর্ষকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য দেন। এরপর মঙ্গল শোভাযাত্রার ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিতি
বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিতি

আলোচনা সভার পরে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আবুজায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের প্রবাসী শিল্পীরাসহ হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন।

বৈশাখের ঐতিহ্য ও দেশের আবহমান সংস্কৃতির পরিচায়ক হস্তশিল্প সামগ্রীসহ অন্য উপাদান দিয়ে সুসজ্জিত মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বর্ণাঢ্য আয়োজনে স্থানীয় সাংবাদিকসহ সুশীল সমাজের সদস্য, প্রবাসী ও পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরা ব্যাপকভাবে অংশ নেন।

আমন্ত্রিত অতিথিদের ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবারে আপ্যায়িত করা হয়।

মুজিবনগর দিবসের আলোচনা সভায় উপস্থিতি
মুজিবনগর দিবসের আলোচনা সভায় উপস্থিতি


ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালন 

বাংলাদেশ হাইকমিশন যথাযোগ্য মর্যাদায় ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথ গ্রহণের ঐতিহাসিক দিন মুজিবনগর দিবস পালন করেছে। এ উপলক্ষে ১৭ এপ্রিল হাইকমিশন এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানের প্রথমে সব শহীদের স্মরণে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়। পরে মুজিবনগর দিবসের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্রও প্রদর্শন করা হয়। এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে প্রেরিত রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণীসমূহ পাঠ করা হয়।

মুজিবনগর দিবসের আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন মো. শামীম আহসান
মুজিবনগর দিবসের আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন মো. শামীম আহসান

চ্যান্সারিতে আয়োজিত আলোচনা সভায় হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনন্য অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ১৯৭১ সালে গঠিত মুজিবনগর সরকার গঠনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন এবং বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে জাতীয় চার নেতার অবদানের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জনের জন্য অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কর্মকাণ্ডের সমন্বয়ের কঠিন দায়িত্ব পালন, বিশেষ করে বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের ব্যাপারে মুজিবনগর সরকারের ভূমিকার কথা তিনি উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে হাইকমিশনার জাতির পিতার স্বপ্ন সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলমান উন্নয়ন অভিযাত্রা সম্পর্কেও আলোকপাত করেন।

আলোচনা সভায় প্রবাসী বাংলাদেশি ও হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি