কানাডার উইন্ডসরে সরকারি ঘোষণা

মঙ্গল শোভাযাত্রা
মঙ্গল শোভাযাত্রা

কানাডার মোটরযান সিটি উইন্ডসরে বাংলা মাস বৈশাখকে বাংলা ঐতিহ্যের মাস হিসেবে সরকারি ঘোষণা (প্রোক্লেমেশন) করা হয়েছে। বাংলাদেশ-কানাডা অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগ ও আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিটি মেয়র ড. ড্রিউ ডিলকেন্স গত মার্চে এই প্রোক্লেমেশনে স্বাক্ষর করেন। ১৫ এপ্রিল (২০১৯) প্রোক্লেমেশনটি সিটি কাউন্সিলে গৃহীত হয়।

ঐতিহাসিক এই ঘোষণাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য উইন্ডসরের বাংলাদেশি কমিউনিটি গত শনিবার (২৭ এপ্রিল) এক মঙ্গল শোভাযাত্রা করে। যদিও বাংলাদেশে এটি হয় বৈশাখের প্রথম দিনে, কিন্তু ভালো আবহাওয়ার বিবেচনায় উইন্ডসরে এটি উদযাপিত হয় বৈশাখের এই মাঝামাঝিতে। ২৭ এপ্রিলের এই দিনটি উইন্ডসরের জন্য একটি স্মরণীয় দিন। রৌদ্রোজ্জ্বল এই দিনে সকাল থেকেই সব মানুষ জড়ো হতে থাকেন উইন্ডসরের জিরো পয়েন্টে অবস্থিত বাংলাদেশ পিস ক্লকের সামনে। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ অনেক নারী-পুরুষ একত্র হন পিস ক্লকের সামনে। শাড়ি-পাঞ্জাবিসহ বর্ণিল দেশি পোশাকে শোভাযাত্রাটি ওলেট রোডের পাশ দিয়ে এগোতে থাকে ডেট্রয়েট নদীর দিকে।

সমবেত লোকজনের একাংশ
সমবেত লোকজনের একাংশ

এই শোভাযাত্রায় স্থানীয় দুই এমপি ব্রায়ান মেসি ও শেরল হার্ড ক্যাসল, উইন্ডসর স্কুল বোর্ডের চেয়ারপারসন ড. জেসিকা সার্টরি, সাউথ এশিয়ান সেন্টারের নির্বাহী সভাপতি জিওয়ান গিল, উইন্ডসর ওয়েস্টের ডেমোক্র্যাট লিডার মেলিন্ডা মনরোসহ অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি অংশগ্রহণ করেন। শেরল হার্ডক্যাসল, জেসিকা সার্টরিসহ কোনো কোনো অতিথির শাড়ি পরে পথযাত্রায় অংশগ্রহণ অনেকেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

মঙ্গল শোভাযাত্রাটি ডেট্রয়েট নদীর গ্রেট কানাডীয় ফ্ল্যাগের নিচে গিয়ে ক্ষণিক যাত্রাবিরতি করে। এ সময় বাংলাদেশ-কানাডা অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সাইফুল ভূঁইয়া বক্তব্য দেন। তাঁর আহ্বানে অংশগ্রহণকারী অতিথিরাও একে একে বক্তব্য দেন।

শেরল হার্ড ক্যাসল বলেন, এর আগে তিনি কানাডিয়ান সরকারের পক্ষ থেকে পার্লামেন্টারি কমিটির সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ ভ্রমণ করেছেন এবং তিনি দেখেছেন বাংলাদেশের সংস্কৃতি নিজ চোখে। তিনি বলেন, ‘শাড়ি পরে এই মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নিতে পেরে আমি আনন্দিত ও গর্বিত।’

সমবেত লোকজনের একাংশ
সমবেত লোকজনের একাংশ

জেসিকা সার্টরি বলেন, উইন্ডসরে বাংলা স্কুল চালু রেখেছে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শিশুরা। এটা গর্বের এবং স্কুল বোর্ড থেকে সব সময়ই তাঁরা পূর্ণ সহায়তা দেবেন এ ব্যাপারে। তিনি আরও বলেন, একুশকে উইন্ডসর পাবলিক স্কুল বোর্ডের তালিকায় আনুষ্ঠানিক উদযাপনের দিন হিসেবে ঘোষণার আবেদন তিনি সমর্থন করেন এবং বাংলাদেশ-কানাডা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইফুল ভূঁইয়ার সঙ্গে তিনি একসঙ্গে কাজ করবেন এই আবেদন বাস্তবায়নের জন্য।

আলোচনায় সমাপনী বক্তব্য দেন অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ইয়াহিয়া মোল্লা। তিনি উপস্থিত কমিউনিটির সব সদস্য, অতিথি এবং অনুষ্ঠান সফল করার ব্যাপারে অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য ধন্যবাদ দেন সমিতির সহসভাপতি শামীম মমতাজ, প্রকৌশলী সামছুল আলম ও অধ্যাপক ড. ফজলে বাকী, সহসাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ ও জালাজ উদ্দিন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক তুহিন-পলি-শান্তা, ক্রীড়া সম্পাদক রবিউল বিপ্লবসহ উপস্থিত সব কর্মকর্তাকে।

ক্ষণিক যাত্রাবিরতি ও বক্তৃতা শেষে হালকা আপ্যায়ন। এরপর শোভাযাত্রাটি বাংলাদেশ-কানাডা অ্যাসোসিয়েশনের প্রস্তাবিত শহীদ মিনারের স্থানে গিয়ে শেষ হয়। বিজ্ঞপ্তি