ম্যানিলায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন

রাষ্ট্রদূত জন গোমেজ শুভেচ্ছা বক্তব্য দিচ্ছেন
রাষ্ট্রদূত জন গোমেজ শুভেচ্ছা বক্তব্য দিচ্ছেন

৩০ লাখ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের বয়স এখন ৪৫ বছর। বাংলা মায়ের সন্তানেরা এখন দেশের সীমানা পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে পৃথিবীর মানচিত্র জুড়ে। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র ফিলিপাইনেও এখন অনেক বাংলাদেশির বাস। ব্যবসা, পড়াশোনা আর চাকরি সূত্রেই এখানে মূলত বাংলাদেশিদের আনাগোনা।

২৬ মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস। কিন্তু ফিলিপাইনে ২৬ ও ২৭ মার্চ ছিল খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সরকারি ছুটি। তাই ২৮ মার্চ সাংগ্রিলা মাকাতি হোটেলের বলরুমে আয়োজন করা হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের। ফিলিপাইনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) জন গোমেজের বর্তমান দিনগুলো ব্যস্ততায় পরিপূর্ণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারের জন্য ফিলিপাইন সরকারের সকল মহলে চলছে তার পদচারণা। ফিলিপাইনের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক কমিটি সিনেটের ব্লু রিবন শুনানি থেকে এক্সিকিউটিভ শুনানিতেও তিনি উপস্থিত ছিলেন। এই তৎ​পরতার ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক ৪৬ লাখ ডলার

স্বাধীনতা দিবসের কেক কাটার দৃশ্য
স্বাধীনতা দিবসের কেক কাটার দৃশ্য

ফেরত পেয়েছে এবং ৩৪ মিলিয়ন বা তিন কোটি চল্লিশ লাখ ডলার ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কিন্তু কিছুদিন পূর্বেও বলা হচ্ছিল ক্যাসিনোর মাধ্যমে এই অর্থ অন্ধকার গহ্বরে হারিয়ে গেছে। রাষ্ট্রদূত জন গোমেজ সেটা মানতে নারাজ, সব সময় তিনি দাবি করে আসছেন আমাদের ঘামে ভেজা এই অর্থ ফেরত চাই।
শত ব্যস্ততার মাঝেও স্বাধীনতা দিবস উদ্‌যাপনে কোনো কমতি ছিল না। অনুষ্ঠানের শুরু হয় জন গোমেজের শুভেচ্ছা বক্তব্যের মাধ্যমে। তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পড়ে শোনান। বাংলাদেশের কৃষ্টি কালচার নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি তুলে ধরেন বাংলাদেশের অগ্রগতি। পোশাক শিল্প, ওষুধ ও কৃষি পণ্য নিয়েও তিনি আলোচনা করেন। আলোচনার একপর্যায়ে তিনি উপস্থিত ফিলিপাইন সরকারের বৈদেশিক সম্পর্ক বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারির মাধ্যমে ফিলিপাইন সরকারকে অর্থ উদ্ধারে সার্বিক সহযোগিতার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। এই রিজার্ভের অর্থের কথা বলতে গিয়ে কণ্ঠ ভারী হয়ে আসে তাঁর। তিনি দাবি করেন বাংলাদেশ যেন তার পুরো অর্থ ফেরত পায়।

কয়েকজন অতিথির সঙ্গে রাষ্ট্রদূত জন গোমেজ (বাঁ থেকে পঞ্চম)
কয়েকজন অতিথির সঙ্গে রাষ্ট্রদূত জন গোমেজ (বাঁ থেকে পঞ্চম)

এরপর বিশেষ অতিথি ফিলিপাইন সরকারের বৈদেশিক সম্পর্ক বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি ইভান গারছিয়ার বক্তব্যের শেষে স্বাধীনতা দিবসের কেক কাটা হয়।
অনুষ্ঠানে এসেছিলেন ম্যানিলার বিশপ জসেপ পিন্ত। বাংলাদেশ থেকে যোগ দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব.) এম আজিজুর রহমান বীর উত্তম ও মেজর জেনারেল (অব.) জামিল ডি আহসান বীর প্রতীক। যোগ দিয়েছিলেন বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূত ও মিশন প্রধান। এ ছাড়া আশা বাংলাদেশের প্রতিনিধি টি আই এম ফখরুজ্জামান, ব্র্যাক ও এডিবি প্রতিনিধিসহ ফিলিপাইনে বসবাসরত অনেক বাংলাদেশি উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন ফিলিপাইন বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তা ও সদস্যরা।
অতিথিদের সঙ্গে পরিচয় শেষে রাতের খাবারের পর অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন ডেপুটি চিফ অব মিশন শাহনাজ গাজি ও হেড অব চেন্সারি প্রবাস লামারং। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।