বৈরুতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন আবদুল মোতালেব সরকার
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন আবদুল মোতালেব সরকার

ভূমধ্যসাগরের পাড়ের অতি সুন্দর একটি দেশ লেবানন। দেশটির রাজধানী বৈরুতে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছিল এক অনুষ্ঠানের। দেশটি ছোট হলেও এখানে প্রায় ৫৪টি দেশের দূতাবাস রয়েছে। এর মধ্যে ৪৬টি দেশের রাষ্ট্রদূত বা দূতাবাস প্রধান বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের আনন্দঘন এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

২৮ মার্চ সোমবার বৈরুতের পাঁচতারা হোটেল ফিনিশিয়াতে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত বা দূতাবাস প্রধানেরা ছাড়াও লেবানন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, বিভিন্ন সরকারি, রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। প্রধান অতিথি ছিলেন লেবাননের প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকারের প্রতিনিধি কাছেম হাশেম এমপি।
অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের স্বাগত জানান লেবাননে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবদুল মোতালেব সরকার ও তার সহধর্মিণী সাদিয়া ফেরদৌস সরকার। পরে আবদুল মোতালেব সরকার স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সবার সামনে তুলে ধরেন। তার বক্তব্য আরবিতে অনুবাদ করে প্রজেক্টরে মাধ্যমে দেখানো হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ওপর নির্মিত বিভিন্ন ডকুমেন্টারিও দেখানো হয়। রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য ও ডকুমেন্টারির মাধ্যমে বাংলাদেশের বিভিন্ন অগ্রগতি ও অর্জন সম্পর্কে জেনে অতিথিরা খুবই অভিভূত হন। বাংলাদেশ সম্পর্কে তাদের অনেকের ধারণা পাল্টে যায়।

আবদুল মোতালেব সরকার ও তার স্ত্রীর সঙ্গে একজন বিদেশি অতিথি
আবদুল মোতালেব সরকার ও তার স্ত্রীর সঙ্গে একজন বিদেশি অতিথি

আবদুল মোতালেব সরকার তার বক্তব্যে বলেন, স্বাধীনতার লক্ষ্য ছিল একটি সুখী ও সমৃদ্ধ দেশ গড়ার। সে লক্ষ্যে আমরা অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা অনেক ক্ষেত্রে বিশ্বের স্বীকৃতি লাভ করেছি। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বিগত এক দশকের বেশি সময় ধরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি অর্জন, দারিদ্র্যের হার ৪৬ শতাংশ থেকে ২২.৪ শতাংশে নামিয়ে আনা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রাপ্তি বৃদ্ধি, নারীর ক্ষমতায়ন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, বিশ্বের ৮০টি দেশে ওষুধ রপ্তানি, পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় স্থান অর্জন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশর অর্জন বিশ্বে আজ প্রশংসিত। তা ছাড়া এমডিজিতে (MDG) বাংলাদেশের অর্জন জাতিসংঘের প্রশংসা লাভ করেছে।
তিনি আরও বলেন, লেবাননের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক হলো বন্ধুত্বের। এই সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও জোরদার হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। দূতাবাসের বিভিন্ন কার্যক্রমে সহযোগিতা করার জন্য তিনি লেবানন সরকারকে ধন্যবাদ জানান।

অতিথিদের একাংশ
অতিথিদের একাংশ

প্রধান অতিথি কাছেম হাশেম এমপি তার বক্তব্যে বলেন, রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের মাধ্যমে বাংলাদেশ সম্পর্কে জেনে তিনি অত্যন্ত অভিভূত।
উল্লেখ্য, ২৬ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে দিনটি দূতাবাস উদ্‌যাপন করে। এ দিন সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। পতাকা উত্তোলন করেন রাষ্ট্রদূত আবদুল মোতালেব সরকার। এরপর দিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে সভা শুরু হয়। কোরআন তিলাওয়াত করেন দূতাবাসের কর্মকর্তা আবুল হোসেন।
এ অনুষ্ঠানে প্রথমে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। বাণী পাঠ করেন ইমাম হোসেন ও জুবায়ের কবির। আলোচনা অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন দিদারুল আলম। এর আগে দূতাবাসের হলরুমে প্রজেক্টরে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ছাড়াও লেবাননে বসবাসরত অনেক বাংলাদেশি অংশ নেন।