মুম্বাইয়ে বঙ্গবন্ধুর শাহাদতবার্ষিকী পালন

আলোচনা সভার দৃশ্য
আলোচনা সভার দৃশ্য

জাতীয় শোক দিবস ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদতবার্ষিকী ভারতের মুম্বাইয়ে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে পালন করা হয়েছে। দিবসটি স্মরণে আজ (১৫ আগস্ট) বাংলাদেশ উপহাইকমিশনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মহারাষ্ট্র সরকারের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব ও রাষ্ট্রাচার প্রধান সুমিত মল্লিক গেস্ট অব অনার ও ভারতীয় নৌবাহিনীর সাবেক প্রধান অ্যাডমিরাল (অব.) ভিষ্ণু ভগওয়াৎ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। মুম্বাইয়ে নিযুক্ত বাংলাদেশের উপহাইকমিশনার সামিনা নাজ কর্তৃক জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন ও অর্ধনমিতকরণ, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ, দোয়া ও প্রার্থনা, আলোচনা সভা ও প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে দিবসটিকে স্মরণ করা হয়।

সামিনা নাজ জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন ও অর্ধনমিতকরণের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচির সূচনা করেন। এ সময় মহারাষ্ট্র সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও শ্রীলঙ্কার কনসাল জেনারেল, সৌদি আরবের কনসালসহ মুম্বাইয়ে অবস্থিত কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধিরা, মুম্বাইয়ে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি, ভারতীয় গণ্যমান্য বাঙালি, স্থানীয় অন্যান্য গণ্যমান্য অতিথি, উপহাইকমিশনে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
পতাকা অর্ধনমিতকরণের পর শোক দিবস উপলক্ষে এক মিনিট নীরবতা পালন করে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করা হয়। পরে এ দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়।

আলোচনা সভার দৃশ্য
আলোচনা সভার দৃশ্য

বাণী পাঠ শেষে সামিনা নাজ তাঁর বক্তব্যে জাতির জনকের জীবনাদর্শ ও আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের সকল সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর অবিসংবাদিত নেতৃত্ব ও অপরিসীম আত্মত্যাগের কথা সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন। জাতীয় শোক দিবসে তিনি শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করার মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সুখী ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশে ও প্রবাসে বসবাসরত সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। এ স্মরণ সভায় প্রবাসী বাংলাদেশিরাও আলোচনায় অংশ নেন।
সুমিত মল্লিক তাঁর বক্তব্যে মহারাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রতি আজকের এ শোক দিবসে সংহতি প্রকাশ করেন এবং তাঁর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ড শুধুমাত্র তাঁর পরিবার নয় বরং তা পুরো বাঙালি জাতি ও বন্ধুপ্রতিম ভারতের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে অভিহিত করেন।
ভিষ্ণু ভগওয়াৎ তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবিসংবাদিত নেতৃত্বের কথা সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করেন।
আলোচনা পর্ব শেষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনভিত্তিক একটি প্রামাণ্যচিত্র ‘বঙ্গবন্ধু সরকারের সাড়ে তিন বছর: সোনালি দিনগুলো (A Documentary on the three and a half year’s administration of the Father of the Nation Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman)’ প্রদর্শন করা হয়। আগত অতিথিদের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে শোক সভার সমাপ্তি হয়।

*তারিক হাসান: দ্বিতীয় সচিব ও হেড অব চ্যান্সারি। বাংলাদেশ উপহাইকমিশন, মুম্বাই, ভারত।