মাসাইমারা ন্যাশনাল রিজার্ভে সাফারি

বিমানে ওঠার অপেক্ষায়
বিমানে ওঠার অপেক্ষায়

কেনিয়ার মাসাইমারা ন্যাশনাল রিজার্ভে সাফারিতে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল দীর্ঘদিনের। ইতিপূর্বে ২০১০ সালে সুদানের দারফুরে জাতিসংঘ মিশনে আমার বছরখানেক কাজ করার সুযোগ হয়েছিল। নানা কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও মাসাইমারা সাফারিতে যাওয়া হয়নি তখন। মনের সেই অতৃপ্ত সুপ্ত ইচ্ছাটা পূরণ করার সুযোগ আসল পাঁচ বছর পর যখন ২০১৫ সালের নভেম্বরে দক্ষিণ সুদান জাতিসংঘ মিশনে যোগ দিলাম। কেনিয়া দক্ষিণ সুদানের প্রতিবেশী দেশ। দক্ষিণ সুদানের রাজধানী জুবা থেকে কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির উদ্দেশে সপ্তাহে দুটি ইউএন ফ্লাইট চলাচল করে। জাতিসংঘ মিশনে কর্মরতরা জুবা থেকে নাইরোবি বিনা ভাড়ায় যাতায়াত করতে পারেন। তবে কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত ছুটি লাগবে এবং বিমানে আরোহণের জন্যও অনুমোদন নিতে হবে, ব্যাস এইটুকুই। প্লেনে চড়ার জন্য টিকিটের পরিবর্তে কর্তৃপক্ষীয় অনুমোদন, এ আর এমনকি?

সাফারিতে সাতজনের দল
সাফারিতে সাতজনের দল


মাসাইমারা ন্যাশনাল রিজার্ভ কেনিয়ার রিফট ভ্যালি প্রভিন্সের নারক কাউন্টিতে অবস্থিত। পৃথিবীর প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্যের একটি মাসাইমারা। এর আয়তন এক হাজার ৫১০ বর্গকিলোমিটার। এই সংরক্ষিত বনাঞ্চলটি তাঞ্জানিয়ার মারা রিজিয়ন পর্যন্ত বিস্তৃত। তাঞ্জানিয়ার অংশে এই বনাঞ্চলের নাম সেরেঞ্জেটি ন্যাশনাল পার্ক। এই অঞ্চলের আদি জনগোষ্ঠী মাসাই উপজাতি আর তাদের ভাষার নাম মারা। তাদের সম্মানে এই বনাঞ্চলের নাম রাখা হয়েছে মাসাইমারা। এই বনাঞ্চল মাসাই সিংহ, আফ্রিকান লেপার্ড, তাঞ্জানিয়ান চিতা, জেব্রা, ওয়াইল্ডবিস্ট (এন্টিলোপ প্রজাতির প্রাণী), গেজেল (হরিণ জাতীয় প্রাণী যা ঘণ্টায় ৫০ মাইল গতিতে ছুটতে পারে ও পৃথিবীর দ্বিতীয় দ্রুততম প্রাণী। এ জন্য পৃথিবী খ্যাত)। প্রতি বছর জুলাই-অক্টোবর মাসে জেব্রা, গেজেল, ওয়াইল্ডবিস্টসহ অন্যান্য পশুরা দলবেঁধে বনাঞ্চলের কেনিয়া আর তাঞ্জানিয়া অংশে আসা যাওয়া করে। যাকে বলা হয় গ্রেট মাইগ্রেশন। এ জন্যও এটি বিখ্যাত। তাঞ্জানিয়া থেকে কেনিয়ার বনাঞ্চল পর্যন্ত এই মাইগ্রেশন পথের দূরত্ব ৮০০ কিলোমিটার। প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার জেব্রা, ১.৭ মিলিয়ন ওয়াইল্ডবিস্ট ও ৪ লাখ ৭০ হাজার গেজেল এই মাইগ্রেশনে আসা যাওয়া করে। প্রধানত ঘাসে পরিপূর্ণ নতুন চারণভূমির সন্ধানে এই মাইগ্রেশন হয়। এই বনাঞ্চল দেখতে সারা বছর পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে পর্যটকেরা ছুটে আসেন।

সাফারির প্রথম দিন
সাফারির প্রথম দিন

২ সেপ্টেম্বর আমি আর মামুন আমাদের কর্মস্থল বোর ইউএন বেজ থেকে দক্ষিণ সুদানের রাজধানী জুবার উদ্দেশে হেলিকপ্টারে রওনা দিলাম। যদিও আমার কর্মস্থল বোর থেকে জুবা ১৯৭ কিলোমিটার দূরত্বে। কিন্তু বেহাল সড়ক ব্যবস্থা আর নিরাপত্তাজনিত কারণে ইউএন মিশনে কর্মরতদের চলাচল প্রধানত আকাশপথে ও হেলিকপ্টারের মাধ্যমে হয়। হেলিকপ্টারে বোর থেকে জুবা যেতে ৪৫ মিনিট লাগে। জুবায় মিলিত হলাম জামিরুল স্যার আর থাইল্যান্ডের জেসেহোর সঙ্গে। তাদের দুজনের কর্মস্থল বেন্টিউ। জুবা থেকে ইউএন ফ্লাইটে নাইরোবি পৌঁছাতে লাগল ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট। জুবার তপ্ত আবহাওয়া থেকে নাইরোবির শীতল আবহাওয়া আমাদের স্বাগত জানাল।
অবাক করা বিষয় দক্ষিণ সুদান আর কেনিয়া প্রতিবেশী দেশ। তারপরও আবহাওয়ার কত পার্থক্য। দক্ষিণ সুদানে রুমে এসি ছাড়া থাকা সম্ভব নয় আর নাইরোবিতে নাকি সারা বছরই এমন হালকা আরামদায়ক মোলায়েম ঠান্ডা আবহাওয়া। এসি দূরে থাক কোথাও ফ্যানের ব্যবহারও দেখলাম না। যা হোক বিমানবন্দরে আমাদের ট্যুর অপারেটর ডেভিডের লোক আমার নাম লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়ানো ছিল। সে আমাদের হোটেলে পৌঁছে দিয়ে পরদিন সকাল ৮টায় আমাদের নিতে আসবে জানিয়ে বিদায় নিল। ৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় শুরু হলো মাসাইমারার উদ্দেশে যাত্রা। তিন দিন দুই রাতের এই সাফারি প্যাকেজের জন্য ডেভিডকে দিতে হলো একেকজন ২২০ ইউএস ডলার করে। এর মধ্যেই যাতায়াত, খাওয়া-থাকা, সাফারি, এন্ট্রি ফি সব অন্তর্ভুক্ত। তবে নাইরোবিতে হোটেলে থাকা আর খাওয়া খরচ এর অন্তর্ভুক্ত নয়। আমরা সাতজনের একটি গ্রুপ হলাম। বাংলাদেশের আমি, মামুন ও জামিরুল স্যার, থাইল্যান্ডের জেসোহ, স্পেনের আইটজোল্ড আর দুজন মেয়ে; একজন কোরিয়ার সানি আর একজন রাশিয়ার মারিয়া।

নাইট ক্যাম্পে লেখক
নাইট ক্যাম্পে লেখক


সাফারির জন্য বিশেষভাবে তৈরি বড় একটি মাইক্রোবাসে। এর ছাদ পুরো খুলে ফেলা যায়। আমরা সাতজন ওই মাইক্রোবাসে রওনা দিলাম। আমাদের ড্রাইভার এনিমালই আমাদের গাইড। চমৎকার ইংরেজি বলে। অবশ্য নাইরোবিতে কমবেশি মোটামুটি সবাই ইংরেজি বলতে পারেন, এমনকি ফুটপাতের দোকানি থেকে থেকে হোটেলের ওয়েটার পর্যন্ত। নাইরোবি থেকে মাসাইমারা পৌঁছাতে ৬ ঘণ্টা সময় লাগে।
দেড় ঘণ্টা চলার পর আমরা পৌঁছালাম দ্য গ্রেট রিফট ভ্যালিতে। পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ উপত্যকা। ৯৬০০ বর্গ কিলোমিটার যার আয়তন। এশিয়ার ইসরায়েল থেকে দক্ষিণ পূর্ব আফ্রিকার মোজাম্বিক পর্যন্ত যা বিস্তৃত। একটি বড় ভূচ্যুতি বা বড় ভূমিকম্পের ফলে এর সৃষ্টি হয়েছে। এখানে কিছু ছবি তুলে, কিছু স্যুভেনির কিনে আবার মাসাইমারার উদ্দেশে রওনা দিলাম। রাস্তার দুপাশে চমৎকার নৈসর্গিক দৃশ্য। দিগন্ত বিস্তৃত ভুট্টা খেত, চারণভূমি, উঁচুনিচু পাহাড়ি রাস্তা, সত্যিই মনোমুগ্ধকর! পাকা রাস্তা শেষ করে ঘণ্টা দুই কাচা লাল মাটি আর পাথুরে রাস্তায় চলার পর ছোটখাটো কয়েকটি শুকনো মরা নদী পার হয়ে অবশেষে মাসাইমারা পৌঁছালাম।

মাসাই উপজাতি
মাসাই উপজাতি

চমৎকার গাছপালায় ছাওয়া। ছোট বড় অনেক তাঁবু টানানো। খড়ের ছাউনি দেওয়া ডাইনিং রুম। চারপাশে রংবেরঙের অনেক ফুল গাছ। খোলা জায়গায় গাছের নিচে কাঠের বেঞ্চি-টেবিল পাতা। এক কথায় চমৎকার। মুগ্ধ হওয়ার মতো ক্যাম্প। ক্যাম্পের নারী ম্যানেজার আমাদের যার যার তাঁবুতে পৌঁছে দিলেন। আমি আর মামুন একটা দুই বেডের তাঁবুতে উঠলাম। সঙ্গে অ্যাটাচড বাথরুম তাও তাঁবুর, শুধু ফ্লোর পাকা। ম্যানেজার জানাল এখানে ইলেকট্রিসিটি নাই। জেনারেটর চালানো হবে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। সাড়ে সাতটায় ডিনার দেওয়া হবে। রাত ১০টায় জেনারেটর বন্ধ করা হবে। এর মধ্যে খাওয়া, মোবাইল-ক্যামেরা চার্জসহ সব কাজ শেষ করতে হবে। আমাদের লাগেজ রুমে রেখে এক মগ চমৎকার সুগন্ধের গরম কেনিয়ান কফি পান করে আমরা সাতজন ছুটলাম প্রথম দিনের সাফারিতে।
সাফারিতে প্রবেশের আগে গেটে নিরাপত্তা চেকের জন্য মিনিট পাঁচেক দাঁড়ানো ছিল আমাদের গাড়ি। চারপাশ থেকে কিছু মাসাই নারী ছুটে এল তাদের ঐতিহ্যবাহী লাল চেক চাদর, ট্রাইবাল মালা, কানের দুল, কাঠের তৈরি হাতে বানানো মুখোশ এসব নিয়ে। আমি কিছু কিনলাম।

গাড়ির সামনে সিংহ
গাড়ির সামনে সিংহ


প্রথম দিনই সিংহীর দেখা মিলল। একসঙ্গে কয়েকটি সিংহী বসে ছিল। আমাদের সাফারির গাড়ি দেখেও তারা নির্বিকার, কোনো ভাবান্তর নেই। প্রচুর জেব্রা, জিরাফ, ওয়াইল্ডবিস্ট, এন্টিলোপ, গেজেল, হরিণের দেখা মিলল। চারপাশে যত দুর চোখ যায় ধূসর প্রান্তর। বড় গাছ তেমন নেই। ধূসর ঘাসে ছাওয়া চারণভূমি, দিগন্তে ছোট বড় পাহাড়, মাঝে মাঝে ছোট জলাশয়, সরু নদী, পাথুরে রাস্তা। মনে হচ্ছিল অন্য কোনো এক জগতে চলে এসেছি, আমার পরিচিত পৃথিবীর চাইতে অন্যরকম।
আঁধার ঘনিয়ে আসতেই ক্যাম্পে ফিরে আসলাম। প্রথম দিন যাওয়া আসা মিলিয়ে ১০০ কিলোমিটারের মতো সাফারি করা হলো। ডাইনিংয়ে গিয়ে দেখলাম বুফে ডিনার। ছোটখাটো কিউ খাবার নেওয়ার জন্য। অন্যান্য গ্রুপের টুরিস্টরাও ডিনারে এসেছেন। জার্মানি, চীন, জাপান, ভারত, নিউজিল্যান্ড, ইকুয়েডর কোথাকার টুরিস্ট নেই সেটাই বরং প্রশ্ন। ডিনার শেষে বাইরে ক্যাম্প ফায়ারে কিছুক্ষণ বসলাম কয়েকজন গোল হয়ে। কনকনে ঠান্ডা, সেপ্টেম্বরের ৩ তারিখের রাত। জার্মানি, চীন আর ভারতীয় কয়েকজন টুরিস্টদের সঙ্গে কিছুক্ষণ গল্প করে যার যার তাঁবুতে গিয়ে কম্বলের ভেতর গিয়ে ঢুকলাম। রাত ১০টায় ব্ল্যাকআউট। শিয়ালের ডাক ভেসে আসছিল। আরও কত রকমের ডাক শুনলাম। আলাদা করে বলা যাবে না কার ডাক। অন্ধকারে ঠান্ডা কনকনে রাত, তাঁবুতে রাত যাপন, এ যেন অন্য কোনো এক জগৎ, অন্য এক দুনিয়া।
দ্বিতীয় দিন ৪ সেপ্টেম্বর সাফারি শুরু হবে সকাল ৭টায়। তাই ভোর ৫টায় কনকনে ঠান্ডার মধ্যে উঠে গরম পানি দিয়ে শাওয়ার সেরে নিলাম। কারণ সারা দিন সাফারিতেই কাটাতে হবে। ব্রেকফাস্টে বিনস, প্লেন কেক, টোস্ট, বিফ বেকন, পিনাট বাটার আর চমৎকার সুগন্ধের পর পর দুই মগ গরম কেনিয়ান কফি পান করে ছুটলাম সাফারিতে। মাইক্রোবাসের ছাদ খুলে দেওয়া হলো। কেউ চাইলে দাঁড়িয়ে চারপাশে দেখতে দেখতে যেতে পারবেন, ছবিও তুলত পারবেন। এরপর সাফারিতে আমরা যত ছবিই তুলেছি তা সব সাফারি গাড়ি থেকেই তোলা। কারণ গাড়ি থেকে নামার অনুমতি ছিল না।

জেব্রা
জেব্রা

দ্বিতীয় দিনেই দুর্লভ কিছু দৃশ্য দেখার সুযোগ হয়ে গেল। সিংহী ঝোপের আড়ালে ঘাপটি মেরে বসে আছে। কিছুটা দূরে গেজেল আর এন্টিলোপের পাল ঘাস খেতে ব্যস্ত। সিংহী অপেক্ষা করছে কাছে আসার। একটু পরপর মাথা উঁচিয়ে দেখছে শিকার কত দূর। কেমনে যেন টের পেয়ে গেল ওরা, তারপর দে ছুট। সিংহী কিছুক্ষণ দৌড়ে ক্ষান্ত দিল। এ যাত্রায় তার শিকার জুটল না। একটি বাচ্চা মহিষ দুটি বড় মহিষের সঙ্গে ঘাস খাচ্ছিল। দুটি সিংহী দুই দিক থেকে আক্রমণ করল। কিন্তু মহিষ দুটি যেভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলল শেষে সিংহীরা রণে ভঙ্গ দিল। মাইগ্রেশনের একটা পর্যায়ে দলবেঁধে জেব্রারা মারা নদী পার হচ্ছিল। কুমিরের পাল ঘাপটি মেরে ছিল। একটা জেব্রাকে কয়েকটা কুমির মিলে টেনে নিয়ে গেল। আফসোস এসব ক্যামেরায় ধারণ করা যায়নি। আমরা এমন দূরত্বে ছিলাম যে আমার ১৪ মেগা পিক্সেল আর ৪ গুন জুমের সনি ক্যামেরায় তা ধারণ করা যায়নি। আসলে প্রফেশনাল ক্যামেরা ছাড়া এসব ধারণ সম্ভবও না।
সারা দিনে প্রচুর জেব্রা, ওয়াইল্ডবিস্ট, গেজেল, এন্টিলোপ, হরিণ, বাচ্চাসহ চিতা বাঘ, জিরাফ, বুনো মহিষ, সিংহ, নদীতে হিপোপটমাস, কুমির ও নাম না জানা বিভিন্ন প্রজাতির পাখির দেখা মিলল। দুপুরে লাঞ্চের জন্য সারা দিনে বনের মধ্যে আধা ঘণ্টার জন্য গাড়ি থেকে নামার সুযোগ হলো। স্যান্ডউইচ, জুস, চিকেন ফ্রাই, কমলা আর কলা দিয়ে বনের মধ্যে সারা হলো লাঞ্চ। চড়ুইভাতির আমেজে। আঁধার ঘনিয়ে আসতেই ক্যাম্পে ফিরে এলাম। দ্বিতীয় দিনে ৩০০ কিলোমিটারের মতো সাফারি করা হলো।

ওয়াইল্ডবিস্ট
ওয়াইল্ডবিস্ট


ডিনারে চাপাতি, রাইস, বিফ কারি, বিনস, ভেজিটেবল, বাঁধাকপির মেয়োনেজ দেওয়া সালাদ, তরমুজ আর আনারস দেওয়া হলো। এরপর ক্যাম্প ফায়ারে কিছুক্ষণ আড্ডা তারপর তাঁবুতে কম্বলের ভেতর।
তৃতীয় ও শেষ দিন ৫ সেপ্টেম্বর ভোর সোয়া ৬টায় বেরিয়ে গেলাম সাফারির জন্য। তখনো সূর্য ওঠেনি, পুব আকাশে আলোর রেখা। মাসাইমারা বনাঞ্চলে সূর্যোদয় দেখার জন্যই এত ভোরে রওনা। ভোরের কনকনে ঠান্ডা আবহাওয়ায় আমরা গুটিশুটি মেরে বসে আছি গাড়িতে। কিছুক্ষণ চলার পর সানরাইজ ভিউ পয়েন্টে আসলাম। দিগন্তে ধীরে ধীরে সূর্য মামার রাজকীয় আবির্ভাব, চারদিকে আঁধার বিদায় নিচ্ছে। আমাদের প্রাণান্ত চেষ্টা এ দৃশ্য ক্যামেরায় বন্দী করার। শেষ দিনে প্রায় এক শ কিলোমিটারের মতো সাফারি করা হলো। ছাদ খোলা গাড়িতে দাঁড়িয়ে বুক ভরে শ্বাস নিলাম। বন, পাহাড়, শুকনো মরা নদী, পশু-পাখি সবাইকে মনে মনে বললাম বিদায় হে মাসাইমারা।

(Anwar Sattar, Police Advisor at UN Mission in South Sudan (UNMISS), Officer of Bangladesh Police)