এমডিজির চেয়ে এসডিজি বেশি চ্যালেঞ্জিং

পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) প্রকাশিত এমডিজি মূল্যায়নের চূড়ান্ত প্রতিবেদন হাতে অতিথিরা l প্রথম আলো
পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) প্রকাশিত এমডিজি মূল্যায়নের চূড়ান্ত প্রতিবেদন হাতে অতিথিরা l প্রথম আলো

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) বাস্তবায়নে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) অর্জনের সফলতাই এর কারণ। তবে এমডিজির চেয়ে এসডিজি বাস্তবায়নে বেশি চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। এ জন্য বিনিয়োগ, সঠিক তথ্য-উপাত্ত, সুশাসন প্রতিষ্ঠার মতো বিষয়গুলোতে জোর দিতে হবে।

গতকাল বুধবার এমডিজি মূল্যায়নের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি)। এ মূল্যায়ন প্রতিবেদনের ওপর বক্তব্য দিতে গিয়ে আলোচকেরা এসব কথা বলেন। শেরেবাংলা নগরের পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলনকক্ষে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, এমডিজি অর্জনে বাংলাদেশ বেশ সফল। আটটি লক্ষ্যের সব কটিতেই ভালো করেছে বাংলাদেশ। এমডিজির অন্যতম প্রধান লক্ষ্য দারিদ্র্যবিমোচন অর্জিত হয়েছে। ২০১৫ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের হার ২৯ শতাংশে নামানোর লক্ষ্য নির্ধারিত ছিল, বাংলাদেশ এই সময়ে দারিদ্র্যের হার ২৪ দশমিক ৮ শতাংশে নামিয়ে এনেছে।

আলোচনা: অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ সঠিক পথেই এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে এখন দরিদ্র দেশের মডেল বলা হয় না, বলা হয় উন্নয়নের মডেল। আন্তর্জাতিক রাজনীতি সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, ‘সব সময় আমার ধারণা ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জিতবেন। জেতার জন্য তিনি কিছু রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়েছেন, এখন সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছেন।’

অনুষ্ঠানের সভাপতি পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, এমডিজির পর এসডিজি অর্জনে প্রয়োজন অতিমাত্রায় বিনিয়োগ। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অনুপাতে বিনিয়োগ ৩৪ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে গ্যাস, বিদ্যুৎসহ বড় অবকাঠামো তৈরি করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমানের মতে, অনানুষ্ঠানিক খাতের সঠিক তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেলে জিডিপি প্রবৃদ্ধি আরও এক থেকে দেড় শতাংশ বেড়ে যাবে। এখন জিডিপিতে অনানুষ্ঠানিক খাতের তথ্য-উপাত্ত সঠিকভাবে উপস্থাপিত হয় না।

এসডিজি বাস্তবায়ন বাংলাদেশের জন্য অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং হবে বলে মনে করেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন।

জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ্ত মুখার্জি বলেন, এখন মূল চ্যালেঞ্জ হলো সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া।

মূল্যায়ন: এমডিজির আটটি লক্ষ্য হলো অতিদারিদ্র্য নিরসন ও ক্ষুধা নির্মূল; সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা; লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণ ও নারীর ক্ষমতায়ন; শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস; মাতৃস্বাস্থ্য উন্নতি; এইডস ও ম্যালেরিয়ার মতো রোগ নির্মূল, টেকসই পরিবেশ নিশ্চিতকরণ এবং বৈশ্বিক সম্পর্ক জোরদার।

এসব লক্ষ্য অর্জিত হলো কি না, তা দেখতে বেশ কিছু সূচক আছে। বাংলাদেশ অনেক সূচকে নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জন করেছে।