মারা গেলে ঋণ মাফ

চাকরিরত অবস্থায় বাড়ি নির্মাণ বা মোটরসাইকেল কেনার জন্য ঋণ নিয়ে যেসব সরকারি কর্মচারী মারা গেছেন, ওই ঋণ পরিশোধের দায় তাঁদের উত্তরাধিকারীদের।
ঋণ গ্রহণকারী কিন্তু সম্পূর্ণ মানসিক প্রতিবন্ধী বা পঙ্গু হয়ে অবসরে যাওয়া চাকরিজীবীদের উত্তরাধিকারীদেরও একই ধরনের দায় রয়েছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই পরিবারগুলোর পক্ষে অর্থ পরিশোধের বাস্তবতা থাকে না। আর সে কারণেই পরিবারগুলোকে রেহাই দিতে ঋণের বকেয়া, আসল ও সুদ বা দণ্ডসুদ মওকুফের ব্যাপারে একটি পরিপত্র জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, চাকরিরত অবস্থায় কোনো সরকারি কর্মচারী নিঃস্ব পরিবার-পরিজন রেখে মৃত্যুবরণ করলে বা অক্ষমতাজনিত কারণে অবসর নিলে তাঁদের অনাদায়ি ঋণের আসল ও সুদ মওকুফযোগ্য হবে। অবসর-উত্তর ছুটিতে (পিআরএল) থাকা কর্মচারীদের জন্যও প্রযোজ্য হবে নিয়মটি।
মওকুফের আবেদন করতে হবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত ফরমে এবং মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব, অধিদপ্তর ও পরিদপ্তরের প্রধানদের সুস্পষ্ট সুপারিশসহ। নাম, পরিচয়, সর্বশেষ চাকরিস্থল, মৃত্যু বা অক্ষম হওয়ার তারিখ, গ্র্যাচুইটি বা পেনশনের পরিমাণ, পেনশন নিষ্পত্তি হয়ে থাকলে সরকারের কর্তন রাখা হয়েছে কি না—এসব তথ্য উল্লেখ করতে হবে।
গৃহ নির্মাণ, গৃহ মেরামত, কম্পিউটার ও মোটরসাইকেল কেনার জন্য কর্মচারীদের নেওয়া ঋণ এই মওকুফের আওতাভুক্ত। যুগ্ম সচিব থেকে ওপরের পর্যায়ের সরকারি কর্মচারীরা অবশ্য এর বাইরে থাকবেন।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, ‘প্রাধিকারপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের সুদমুক্ত বিশেষ অগ্রিম ও গাড়ি সেবা নগদায়ন নীতিমালা’র আওতায় নেওয়া ঋণ মওকুফ করা হবে না।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আসল ও সুদ মওকুফের জন্য ৩৫টির মতো আবেদন অনিষ্পন্ন রয়েছে।
এদিকে, আসল ও সুদ মওকুফের বিষয়ে সুপারিশ করতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিবকে সভাপতি করে ৮ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি প্রতি মাসে একবার বৈঠক করবে।
পরিপত্রে বলা হয়, এখন থেকে সুদ ও আসল মওকুফের হিসাব একটি রেজিস্ট্রারে সংরক্ষণ করতে হবে। কোনো অর্থবছরে আসল, সুদসহ মওকুফের পরিমাণ বাজেটে দেওয়া বরাদ্দের চেয়ে বেশি হতে পারবে না।
জানা গেছে, নিয়মটি আগেও ছিল। কিন্তু ওই নিয়মের সুযোগ নিয়ে যুগ্ম সচিব থেকে তার ওপরের পর্যায়ের কিছু কর্মচারী নিজেদের স্বার্থে অনিয়ম করে আসছিলেন।