ভারতে মুদ্রা বাতিলে অর্থনীতিতে 'বিরূপ প্রভাব'

ভারতের অর্থনীতিতে ‘বিরূপ প্রভাব’ ফেলেছে গত বছরের মুদ্রা বাতিলের সিদ্ধান্ত। গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত দেশটির সরকারি এক পরিসংখ্যানে এ কথা বলা হয়।

এতে জানানো হয়, ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট বাতিলের নাটকীয় সিদ্ধান্ত দুর্নীতি ও তথাকথিত কালো টাকা বা অবৈধ নগদ ধারণ প্রতিরোধে নেওয়া হয়েছিল। এ সিদ্ধান্ত নগদের ঘাটতি, ব্যক্তি খাতের ব্যবসাকে আঘাত করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালে ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে সাড়ে ৬ শতাংশ, যা আগে ৭ দশমিক ৬ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, পরিসংখ্যানটি নোট বাতিলের আগের অবস্থা ও পরের অবস্থা বিবেচনা করে করা হয়েছে।

দেশটির অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বরাবরই বলছেন, আগামী মার্চের পর অর্থনীতি আবার স্বাভাবিকতার দিকে ঘুরে যাবে। নগদ ঘাটতির বিষয়টি আর থাকবে না। অর্থনীতির ঘাটতি পুনরায় পূরণ হয়ে যাবে। আজ চলতি বছরের ইউনিয়ন বাজেট পেশ করবেন তিনি।

গত বছরের ৮ নভেম্বর হঠাৎ করে এক ঘোষণায় ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট বাতিল করে মোদি সরকার। সরকারের এই সিদ্ধান্তে দেশজুড়ে বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। নগদ ঘাটতিতে ছোট ও মাঝারি শিল্প ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দেশজ চাহিদা কমে যায়। এ সিদ্ধান্তের আগে দেশের মোট অর্থ জোগানের ৮৬ শতাংশ ছিল ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোটে।

এই মুদ্রা বাতিলের সিদ্ধান্ত দরিদ্রদের বেশি আঘাত করেছে বলে বলা হয় সরকারি প্রতিবেদনে। ভারতের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রামানিয়ান এই প্রতিবেদনে বলেন, মুদ্রা বাতিলের কারণে চাহিদা কমে যাওয়া ও অনিশ্চয়তার কারণে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি মন্থর হয়ে গেছে।

অর্থমন্ত্রীর মতো তিনিও মনে করেন, জিডিপির ওপর এই সিদ্ধান্তের প্রতিকূল প্রভাব অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য। দীর্ঘ মেয়াদে এই সংকট কেটে যাবে এবং এই সিদ্ধান্তের উপকারিতা আসবে বলে বলা হয়েছে প্রতিবেদনে। এ সিদ্ধান্তের কারণে দুর্নীতি কমবে এবং কর ফাঁকির প্রবণতা কমবে। মানুষ নগদ ব্যবহার করবে কম যার ফলে অর্থনীতি লাভবান হবে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।