বছরে ছয় হাজার গাড়ি বানাবে ইফাদ অটোস

বেসরকারি পর্যায়ে দেশে সবচেয়ে বড় গাড়ি সংযোজন কারখানা করেছে ইফাদ গ্রুপের সহযোগী কোম্পানি ইফাদ অটোস লিমিটেড। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত এই কোম্পানিতে ভারতের অশোক লেল্যান্ড ব্র্যান্ডের গাড়ি তৈরি হবে। বছরে ১০ হাজার গাড়ি তৈরির উৎপাদনক্ষমতাসম্পন্ন এই কারখানায় আপাতত তৈরি হবে ৬ হাজার গাড়ি। এরই মধ্যে ধামরাইয়ে ১১০ বিঘা জমির ওপর উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
ইফাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ প্রথম আলোকে এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, বেসরকারি পর্যায়ে দেশের সবচেয়ে বড় কারখানা এটি। আজ বৃহস্পতিবার অশোক লেল্যান্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ভিনোদ কে দেসারী ধামরাইয়ে কোম্পানিটির উৎপাদন কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।
ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রীংলা এবং ইফাদ গ্রুপের এমডি তানভীর আহমেদ, ইফাদ অটোসের এমডি তাসকিন আহমেদ, পরিচালক তাসফিন আহমেদ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।
ইফাদ অটোস সূত্রে জানা গেছে, গাড়ি সংযোজনের জন্য ভারতের পাশাপাশি জাপান, জার্মানি ও বেলজিয়াম থেকে ইতিমধ্যে যন্ত্রাংশ আমদানি করা হয়েছে। শুরুর দিকে এই কারখানায় তৈরি হবে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত (এসি) ও নন-এসি বাস, ট্রাক এবং কাভার্ড ভ্যানের চেসিস।
কারখানাটিতে গাড়িগুলোর বডি তৈরির কাজও এগিয়ে চলছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে অপ্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় গাড়ির বডি তৈরির ছোট ছোট কারখানা রয়েছে।
ইফতেখার আহমেদ বলেন, ‘বর্তমানে বিদেশ থেকে গাড়ি আমদানিতে অনেক সময় লাগে। কারখানাটি চালু হলে ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী দ্রুততম সময়ে গাড়ি সরবরাহ করা সম্ভব হবে।’
বর্তমানে আমদানি করা গাড়ির মতো করে গুণ ও মান বজায় রেখে গাড়ি তৈরি করা হলেও এগুলোর দাম আমদানি করা গাড়ির চেয়ে অনেক কম রাখা হবে বলে জানান তিনি।
উদাহরণ দিয়ে ইফাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমানে একটি কাভার্ড ভ্যান আমদানি করতে ছয় সপ্তাহ সময় লাগে। ইফাদ অটোসের কারখানা থেকে তা বেরোবে মাত্র ছয় দিনে। আর বর্তমানে ভলভো প্রকৃতির যেসব গাড়ি ১ কোটি ৩০ লাখ টাকায় আমদানি করা হয়, ইফাদ সেগুলো সরবরাহ করতে পারবে ৮০ লাখ টাকায়। এখানেই ক্রেতাদের লাভ হবে ৫০ লাখ টাকা।
চাহিদা বৃদ্ধির কারণে গাড়ি আমদানিতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হয় জানিয়ে ইফাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, ‘কারখানাটি করার ক্ষেত্রে আমরা এ বিষয়টিও বিবেচনায় রেখেছি।’
ইফাদ অটোসের এমডি তাসকিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের গাড়ি সংযোজন কারখানায় কাজ করবেন বাংলাদেশি শ্রমিকেরা এবং গাড়িগুলোতে বাংলাদেশি রেক্সিন, ফোম, রং, ইলেকট্রোড (ঝালাই) ব্যবহার করা হবে। তবে গাড়ির গুণ-মান বজায় রাখার দিকটি দেখবেন বিদেশি বিশেষজ্ঞরা।’
দেশে বছরে ৩০ হাজার বাণিজ্যিক গাড়ি কেনাবেচা হয় বলে ইফাদ অটোস সূত্রে জানা গেছে। ভারতের চেন্নাইভিত্তিক গাড়ি উৎপাদনকারী কোম্পানি অশোক লেল্যান্ডের বাংলাদেশে একমাত্র পরিবেশক ইফাদ অটোস।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল বুধবার ইফাদ অটোসের ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে সর্বশেষ ১২৬ টাকা ৩০ পয়সা দরে। কোম্পানিটি ২০১৬ সালে শেয়ারহোল্ডারদের ১৩ শতাংশ নগদ ও ৪ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয়। তার আগে ২০১৫ সালে দিয়েছিল ৩০ শতাংশ নগদ ও ৭ শতাংশ বোনাস শেয়ার।