বিনিয়োগকারীরা ঘরে বসেই সেবা পাবেন

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম গতকাল রাজধানীর দিলকুশায় সংস্থার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন l প্রথম আলো
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম গতকাল রাজধানীর দিলকুশায় সংস্থার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন l প্রথম আলো

আগামী ছয় মাসের মধ্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) পরিপূর্ণভাবে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাপনার আওতায় আসবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, তখন ঘরে বসেই বিনিয়োগবিষয়ক সব সেবা পাওয়া যাবে।

রাজধানীর দিলকুশায় বিডা কার্যালয়ে গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে কাজী আমিনুল এ কথা বলেন। সংস্থাটির দুই নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আলতাফ হোসেন ও নাভাস চন্দ্র মণ্ডল, তিন পরিচালক তৌহিদুর রহমান খান, আইয়ুব আলী ও মনির হোসেন এবং জাপান ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের (জেডিআই) কোবায়াশি এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

কাজী আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এমনভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি যে বিনিয়োগবিষয়ক সব সেবা নেওয়ার জন্য কাউকে সশরীরে বিডায় আসতে হবে না। ঘরে বসেই সেবা পেয়ে যাবেন সবাই। শুধু একটি আবেদন করলেই হবে। সেবাগুলো দিতে বিডার ছয় মাস সময় লাগবে।’

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), পরিবেশ অধিদপ্তর, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), জমি নিবন্ধন কার্যালয়—এসব প্রতিষ্ঠান থেকে বিনিয়োগকারীদের যেসব সেবা নিতে হয়, ভবিষ্যতে সেগুলো সহজেই পাওয়া যাবে বলে জানান কাজী আমিনুল।

বিডার চেয়ারম্যান আরও বলেন, বিনিয়োগকারীদের ওয়ান স্টপ সার্ভিস পাওয়ার বিষয়ে আইনের একটি খসড়া তৈরি হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে পাস হওয়ার জন্য আইনটি জাতীয় সংসদে যাবে।

উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ এবং পর্যায়ক্রমে উন্নত দেশে পরিণত হতে হলে এখনকার অবস্থা দিয়ে চলবে না বলে মনে করেন কাজী আমিনুল। তিনি বলেন, উন্নত দেশে পরিণত হতে গেলে মাথাপিছু আয় দরকার ১২ হাজার ডলার। এখন মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৪৬৫ ডলার। বাকি কাজটা অবশ্যই চ্যালেঞ্জের।

কাজী আমিনুল বলেন, সেই চ্যালেঞ্জটা নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ প্রস্তুত। শুধু পোশাক খাতের ওপর নির্ভর করলে হবে না, উচ্চ মানের বিনিয়োগ দরকার এবং সেই মানের বিনিয়োগ আনার জন্যই কাজ করছে বিডা।

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিডার চেয়ারম্যান নতুন প্রজন্মের উদ্যোক্তা এবং দেশি, বিদেশি ও যৌথ মালিকানার বিনিয়োগ চান।

বিডার চেয়ারম্যানের অনুরোধে জেডিআই চেয়ারম্যান কোবায়াশি ১৯৭০ সালে নিজ দেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) ধারণা দেওয়া এবং পরে তা বাস্তবায়ন করার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। জেডিআই ১৯৭৮ সালে থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা এবং বর্তমানে ২০টি দেশে ৪০টি এসইজেড প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে যুক্ত বলেও জানান কোবায়াশি।

কোবায়াশি বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা হিসেবে জ্বালানি ঘাটতিকে চিহ্নিত করেন। তিনি আরও বলেন, বিশ্ব ডুয়িং বিজনেস মানে (র‍্যাঙ্কিং) বাংলাদেশের অবস্থান এখনো ১৯০ দেশের মধ্যে ১৭৬তম। এই মানের উন্নয়ন দরকার।

প্রশ্নোত্তর পর্বে কাজী আমিনুল ইসলাম আগামী কয়েক বছরের মধ্যে গ্যাস-বিদ্যুতের সমস্যা কেটে যাবে বলে জানান। বিডা চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা আগে বিনিয়োগকারীদের সেবাটা নিশ্চিত করতে চাই এবং দেশি-বিদেশি সব বিনিয়োগকারীর জন্যই সেবা পাওয়ার সমান সুযোগ তৈরি করতে চাই।’

বিডার সেবার মান উন্নত হলে বিনিয়োগকারীরা অবশ্যই বাংলাদেশকে বিনিয়োগের জন্য বেছে নেবেন বলে নিজের বিশ্বাসের কথা জানান কাজী আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘যে ১০০টি এসইজেডের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে, এগুলো করতে পারলেই বাংলাদেশের চেহারা অনেকটা বদলে যাবে।’