ঋণ জালিয়াতি, ফেয়ার ইয়ার্নের এমডি গ্রেপ্তার

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের (বিকেবি) শীর্ষ ঋণখেলাপি প্রতিষ্ঠান ফেয়ার ইয়ার্ন প্রসেসিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. জসিম উদ্দিন এখন কারাগারে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি দল গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটায় তাঁকে গুলশানের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে এ তথ্য জানান।

দুদকের অভিযোগে বলা হয়, বিকেবির কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে ফেয়ার ইয়ার্নের নামে ব্যাংক থেকে ২৬০ কোটি ১৮ লাখ টাকা বের করে নিয়ে যাওয়া হয়, যার মূল নেতৃত্বে ছিলেন জসিম উদ্দিন।

শুক্রবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হলে ঢাকা মহানগর হাকিম মাজহারুল হক জসিম উদ্দিনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। দুদকের পক্ষ থেকে মামলার সুষ্ঠু তদন্ত এবং প্রকৃত রহস্য উদ্‌ঘাটনে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে আজ রোববার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করা হয়।

দুদক সূত্র জানায়, জালিয়াতির মাধ্যমে কৃষি ব্যাংকের কারওয়ান বাজার শাখা থেকে টাকা নিয়ে যাওয়ায় দুদক গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় জসিম উদ্দিনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করে। এরপর গভীর রাতে দুদকের উপপরিচালক মো. শামসুল আলমের নেতৃত্বাধীন দল অভিযান চালিয়ে গুলশানের বাসা থেকে জসিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে।

মামলার অন্য আসামিরা হচ্ছেন ফেয়ার ইয়ার্নের পরিচালক (জসিম উদ্দিনের স্ত্রী) ইয়াসমিন আহমেদ, রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হজরত আলী, বিকেবির কারওয়ান বাজার শাখার সাবেক সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মো. জুনায়েদ মনজুর, সাবেক সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার (এসপিও) মো. আবুল হোসেন এবং প্রিন্সিপাল অফিসার (পিও) গোলাম রসুল।

ওই সময় বিকেবির এমডি ছিলেন মোখতার হোসেন। তবে এ ঘটনার সঙ্গে যোগসাজশ থাকায় সাবেক এসপিও আবুল হোসেনসহ কয়েকজনকে বাধ্যতামূলক অবসর দিয়েছে ব্যাংক।

বিকেবি সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংকটির খেলাপিদের মধ্যে সবার শীর্ষে রয়েছে ফেয়ার ইয়ার্ন প্রসেসিং। ২০০৯-১০ সময়ে কারওয়ান বাজার শাখা থেকে এ প্রতিষ্ঠানটিকে ঋণ দেওয়া হয় এবং ঋণ নেওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি কোনো টাকা ব্যাংককে ফেরত দেয়নি।

বিকেবির এমডি মুহম্মদ আউয়াল খানকে গতকাল মুঠোফোনে অনেকবার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। খুদে বার্তা দিলেও কোনো জবাব দেননি তিনি।

তবে কারওয়ান বাজার শাখার ডিজিএম এর আর এম সালার-ই-জাহান গতকাল মুঠোফোনে প্রথম আলোকে জানান, ফেয়ার ইয়ার্নের কাছে ফান্ডেড, নন-ফান্ডেডসহ সুদাসলে ব্যাংকের পাওনা দাঁড়িয়েছে ৫০০ কোটি টাকার বেশি।