মায়া সান্তোস দেগুইতোর বিচার শুরু হচ্ছে

মায়া সান্তোস দেগুইতো
মায়া সান্তোস দেগুইতো

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনায় অভিযুক্ত ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস দেগুইতোর বিচার শুরু হতে যাচ্ছে। ফিলিপাইনের আদালতে এ বিচার কার্যক্রম শুরু হবে।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। এর মধ্যে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চলে যায় ফিলিপাইনে। পরে ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংকের মাকাতি শাখার মাধ্যমে তা ক্যাসিনো ও বিভিন্ন ব্যক্তির হাতে চলে যায়। আর অর্থ পাচারের এই কাজে আরসিবিসির মাকাতি শাখার ব্যবস্থাপক হিসেবে সরাসরি জড়িত ছিলেন মায়া সান্তোস দেগুইতো।

ফিলিপাইনের সংবাদমাধ্যম ইনকোয়ারারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মায়া দেগুইতোর বিচার শুরু হলেও এ ঘটনার সঙ্গে অভিযুক্ত অন্য সব পক্ষ ও ব্যক্তিদের দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে। ইনকোয়ারারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মায়া দেগুইতো দাবি করেন, তাঁকে এ ঘটনায় বলির পাঁঠা বানিয়ে রাঘব বোয়ালদের আড়াল করা হচ্ছে। মায়া আরও জানান, অর্থ পাচারের মামলায় মাকাতি শহরের আদালত থেকে জামিন পাওয়ার জন্য তিনি চেষ্টা করছেন এবং বিচারের জন্য ফিলিপাইনের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস (ডিওজে) থেকে সমন পাওয়ার পর আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছেন। মায়া ইনকোয়ারারকে বলেন, ‘আমার পক্ষে কোনো প্রভাবশালী নেই। তাই এখন যা ঘটছে, এটি খুবই প্রত্যাশিত। তবে এটি আমার জন্য খুবই পীড়াদায়ক।’

২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া অর্থের বড় অংশটি ফিলিপাইন গেলেও বাকি ২ কোটি ডলার যায় শ্রীলঙ্কায়। পরে শ্রীলঙ্কা থেকে ২ কোটি ডলার উদ্ধার করতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ফিলিপাইনে চলে যাওয়া অর্থের বেশির ভাগই এখনো উদ্ধার হয়নি।

ফিলিপাইনের মাকাতি শহরের আরসিবিসি শাখার মাধ্যমে ওই অর্থ ফিলিপাইনে আসার পর তা মুদ্রা লেনদেনকারী ফিলরেম নামের এক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে চলে যায় তিনটি ক্যাসিনোর কাছে। এভাবে হাতবদল হয়ে সবশেষে ফিলরেমের মাধ্যমে ওই ৮ কোটি ডলার ফিলিপাইন থেকে আবার অন্য দেশে পাচার হয়ে যায়। এতে ওই ব্যাংকটির তৎকালীন শাখা ব্যবস্থাপক মায়া দেগুইতো সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ পায় ডিওজে। এ জন্য আরসিবিসি থেকে বরখাস্ত হন তিনি। গত বছরের আগস্টে ফিলিপাইন সরকার তাঁকে এ কারণে গ্রেপ্তারও করে। মায়া সান্তোস দেগুইতো সব সময় অর্থ পাচারের ঘটনার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার বিষয়টি অস্বীকার করে এসেছেন। তাঁর দাবি, আরসিবিসির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাঁকে কিছু কাজ করতে হয়েছে। আরসিবিসির চাকরি হারানোর পর গত বছর থেকে বেকার জীবন যাপন করছেন মায়া।

এদিকে ফিলিপাইন থেকে অর্থ পুনরুদ্ধারের বিষয়ে আলোচনা করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল গত মঙ্গলবার ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় গেছে।