আইএলওর মনোভাব বোঝা যাবে

চাপে পড়ে শ্রম ও ইপিজেড আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। গত আগস্টে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কাছে আইন দুটির প্রাথমিক খসড়া পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আইএলওর গভর্নিং বডি বা পরিচালনা পর্ষদের অধিবেশনে আলোচনার পাশাপাশি আলাদা বৈঠকও হবে। এতে সংশোধিত দুটি আইনের খসড়ার ওপর সংস্থাটি তার মনোভাব জানাতে পারে।

সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আইএলওর পরিচালনা পর্ষদের ৩৩১তম অধিবেশন গত বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে। ৯ নভেম্বর পর্যন্ত অধিবেশন চলবে। অধিবেশনের পাশাপাশি আগামী শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলাদা বৈঠক হবে।

গত বছরের জুনে আন্তর্জাতিক লেবার কনফারেন্স বা শ্রম সম্মেলনে (আইএলসি) বাংলাদেশ-সম্পর্কিত বিশেষ অনুচ্ছেদ যুক্ত হয়। এতে বলা হয়, শ্রমিক অধিকার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে পদক্ষেপের ঘাটতি ও ব্যর্থতা অত্যন্ত উদ্বেগের। সে জন্য শ্রম আইন, ২০১৩ সংশোধন, ইপিজেড আইনে সংগঠিত হওয়ার অধিকার পুরোপুরি নিশ্চিতকরণ, ট্রেড ইউনিয়নবিরোধী কর্মকাণ্ডের তদন্ত এবং ইউনিয়নের নিবন্ধন স্বচ্ছতা ও দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করার মতো চারটি প্রসঙ্গ ওই অনুচ্ছেদে যুক্ত করা হয়। এসব কারণেই বাংলাদেশের জিএসপি-সুবিধা অব্যাহত রাখার বিষয়টি যাচাই করতে চাইছে ইউরোপীয় কমিশন (ইসি)।

সর্বশেষ গত জুনে অনুষ্ঠিত আইএলসিতে শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার অধিকার নিশ্চিত করার পাশাপাশি ট্রেড ইউনিয়নবিরোধী বৈষম্যমূলক আচরণ ও সহিংসতা বন্ধের জন্য আগামী নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশকে সময় বেঁধে দেওয়া হয়।

এদিকে আইএলওর পরিচালনা পর্ষদের অধিবেশনে যোগ দিতে আজ বুধবার জেনেভার উদ্দেশে রওনা দেবেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সভাপতিত্বে গত রোববার বাংলাদেশের অবস্থান ঠিক করতে সচিবালয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে বৈঠক হয়। এতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক উপস্থিত ছিলেন।

জানতে চাইলে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আইএলওর গভর্নিং বডির অধিবেশনে পাশাপাশি ৩ নভেম্বর বিকেলে সাইড লাইন মিটিংয়ে শ্রম ও ইপিজেডের খসড়া নিয়ে আলোচনা হবে। এতে আইন দুটির প্রাথমিক খসড়ার বিষয়ে আইএলওর মনোভাব বোঝা যাবে। সে অনুযায়ী খসড়া সংশোধন করে আবার আইএলওর কাছে পাঠানো হবে।’ তিনি বলেন, ‘আইএলসির বৈঠকের আগে আইএলওর মনোভাব বোঝার ব্যাপারে এটি আমাদের জন্য বিরাট সুযোগ।’

দুই আইনের খসড়ায় আইএলও সন্তুষ্ট হবে কি না জানতে চাইলে বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, ‘প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে সন্তুষ্ট হবে। তবে আইএলওর কনভেনশন অনুযায়ী বিচার করলে সন্তুষ্ট না-ও হতে পারে।’

এদিকে জেনেভা থেকে একটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, আইএলসির বৈঠকে শ্রম আইন ও ইপিজেড আইনে যেসব সংশোধনের কথা বলা হয়েছিল, তার কোনোটাই পুরোপুরি করেনি সরকার। ফলে সুসংবাদ পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।