অনিয়ম ধরতে চায় দুদক

সোনালী ব্যাংকের লন্ডন কার্যক্রমের অনিয়ম ধরতে চায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ জন্য ২০১২-১৫ মেয়াদে ব্যাংকটির প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা আতাউর রহমান প্রধান সম্পর্কে জানতে চেয়েছে সংস্থাটি। দুদক গতকাল বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকে এ ব্যাপারে চিঠি পাঠিয়েছে। আতাউর রহমান প্রধান বর্তমানে রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে কর্মরত।

চিঠিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের ফিন্যান্সিয়াল কন্ডাক্টিং অথরিটি (এফসিএ) আইন পরিপালন না করায় আতাউর রহমানকে ৭০ হাজার পাউন্ড (প্রায় ৭০ লাখ টাকা) ব্যক্তিগত জরিমানা করে, যা তিনি পরিশোধ করেননি। তবে ব্যাংকটিকে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা জরিমানা দিতে হয়েছে। তাঁর রূপালী ব্যাংকের এমডি পদে দায়িত্ব পালন করা নৈতিকতা পরিপন্থী মর্মে দুদক মনে করে।

অর্থ মন্ত্রণালয় ও জনতা ব্যাংকের সূত্রগুলো জানায়, জনতা ব্যাংকে এখন এমডি নেই। এমডি পদে মন্ত্রণালয়ের কাছে আতাউর রহমান প্রধানের নাম সুপারিশ করেছে জনতা ব্যাংক। এ কারণে একটি পক্ষ সক্রিয় হয়ে উঠেছে।

যোগাযোগ করা হলে আতাউর রহমান প্রধান গত রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাকে জরিমানা করা হয়নি। আমার কাছে জানতে চেয়েছিল, আমি জবাব দিয়েছি। জরিমানা করা হয়েছিল ওই সময়ে মানি লন্ডারিং বিভাগের প্রধান স্টিভেন স্মিথকে। আমার সময়ে ব্যাংকটি মুনাফায় ছিল।’

এফসিএর ওয়েবসাইট ও সোনালী ব্যাংক থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, গত বছরের অক্টোবরে ব্যাংকটিকে সাড়ে ৩২ লাখ পাউন্ড (৩৩ কোটি টাকা) চূড়ান্ত জরিমানা করা হয়, যা পরিশোধও করে এ ব্যাংক। এফসিএ পরে এ ব্যাংকের নতুন হিসাব খোলা বন্ধ করে দেয় এবং আমানত গ্রহণেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এ ছাড়া ব্যাংকটির মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ বিভাগের প্রধান স্টিভেন স্মিথকে এ ধরনের চাকরিতে নিষিদ্ধের পাশাপাশি ১৮ হাজার পাউন্ড বা ১৮ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ২০১০ সালের ২০ আগস্ট থেকে ২০১৪ সালের ২১ জুলাই সময়ে অর্থ পাচার প্রতিরোধব্যবস্থা দুর্বল থাকার কারণে এ শাস্তির মুখে পড়তে হয় ব্যাংকটিকে।

২০০৯ সালের ২৩ জুলাই থেকে ২০১২ সালের ১০ মার্চ পর্যন্ত ব্যাংকটির দায়িত্বে ছিলেন খোন্দকার মো. ইকবাল। ২০১২ সালের ৩০ মার্চ থেকে ২০১৫ সালের ৮ মে পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন আতাউর রহমান। জরিমানার পর লন্ডন কার্যক্রম চালাতে গত মার্চে ১৭১ কোটি টাকা মূলধন পাঠায় সোনালী ব্যাংক। লন্ডন কার্যক্রমে ২০১৫ সালে লোকসান হয় প্রায় ১৭ কোটি টাকা।