সাইবার অপরাধীরা এবার হানা দিল নেপালি ব্যাংকে

এবার হ্যাকার বা সাইবার অপরাধীদের আক্রমণের মুখে পড়েছে নেপালের বৃহত্তম বেসরকারি ব্যাংক এনআইসি এশিয়া ব্যাংক। ব্যাংকটির যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, সিঙ্গাপুরসহ ছয়টি দেশের অ্যাকাউন্ট বা হিসাব থেকে হ্যাকাররা সুইফট ব্যবস্থা ব্যবহার করে ৪৪ লাখ মার্কিন ডলার সরিয়ে নেয়।
তবে নেপালের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে ৩৯ লাখ ডলার উদ্ধার হয়। কাঠমান্ডুভিত্তিক এনআইসি এশিয়া ব্যাংক বিভিন্ন দেশে তার হিসাবে সন্দেহজনক লেনদেন হচ্ছে এমনটা টের দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক নেপাল রাষ্ট্র ব্যাংককে (এনআরবি) তা জানায়। সে অনুযায়ী এনআরবি দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে চুরি যাওয়া অর্থের বড় অংশটা উদ্ধারে সক্ষম হয়। হ্যাকাররা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাংকিং বার্তা বিনিময়ের ব্যবস্থা সুইফট (সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টার ব্যাংক ফিন্যান্সিয়াল টেলিকমিউনিকেশন) ব্যবহার করে ওই অর্থ সরিয়ে নেয়।
নেপালের হিমালয়া নিউজ সার্ভিস গত রোববার খবরটি পরিবেশন করে। এনআইসি এশিয়া ব্যাংক এনআরবি কিংবা সুইফট অর্থ চুরি ও তদন্তের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
হিন্দুধর্মীয় উৎসব দীপাবলি বা দিওয়ালি উপলক্ষে গত ১৭ থেকে ২১ অক্টোবর ছুটির সময়ে এনআইসি এশিয়া ব্যাংকের হিসাব থেকে অর্থ চুরির ঘটনাটি সংঘটিত হয়।
নেপাল পুলিশের উপমহাপরিদর্শক পুষ্কর কারকি বলেন, কীভাবে অর্থ চুরি হয়েছে তা উদঘাটনে তদন্ত শুরু হয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের ২০০টি দেশ ও অঞ্চলের ১১ হাজার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এক দেশ থেকে আরেক দেশের মধ্যকার আন্তব্যাংক লেনদেনে বেলজিয়ামের ব্রাসেলসভিত্তিক সুইফট ব্যবস্থা করে।
সাইবার অপরাধীরা গত বছর সুইফট ব্যবস্থা হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট বা হিসাব থেকে ১০ কোটি ডলার হাতিয়ে নেয়। এর মধ্যে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) একটি শাখায় পাঠানো হয়। পরে তা ক্যাসিনো (জুয়ার আসর) হয়ে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক এখন পর্যন্ত মাত্র দেড় কোটি ডলার উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। বাকি ২ কোটি ডলার স্থানান্তর করা হয়েছিল শ্রীলঙ্কায়; যার পুরোটাই অবশ্য উদ্ধার হয়েছে।
গত মাসে নেপালি ব্যাংকটির আগে তাইওয়ানের ফার ইস্টার্ন ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংকের ৬ কোটি ডলার সরিয়ে নেয় হ্যাকাররা।