জিএসটি কর কমাল ভারত, সমালোচনায় সরকার

কর কমানোর ঘোষণা আসার পর শুক্রবার রাতে পাটনার রাস্তায় বাজি পুড়িয়ে উল্লাস করে জনতা।
কর কমানোর ঘোষণা আসার পর শুক্রবার রাতে পাটনার রাস্তায় বাজি পুড়িয়ে উল্লাস করে জনতা।

বেশির ভাগ পণ্যে পণ্য ও সেবা কর (জিএসটি) কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের জিএসসি কাউন্সিল। গতকাল শুক্রবার অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি কর কমানোর ঘোষণা দেন।

১৭৮টি পণ্যে জিএসটি ২৮ শতাংশ থেকে কমে ১৮ শতাংশ করা হয়েছে। ৫০টি পণ্যে এখনো ২৮ শতাংশ কর আরোপ থাকবে। যার মধ্যে রয়েছে সিমেন্ট, রং, বিলাসসামগ্রী, দামি ভোগ্যপণ্য বা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক পণ্য। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো রেস্তোরাঁয় খাওয়ার খরচ কমাতেও জিএসটির হার করা হয়েছে মাত্র ৫ শতাংশ। বর্তমানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রেস্তোরাঁয় জিএসটি করের হার ১৮ শতাংশ ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নয় এমন রেস্তোরাঁর ক্ষেত্রে ১২ শতাংশ।

ঘর সাজানোর জিনিস, আসবাব, শ্যাম্পু, শেভিং ক্রিমের মতো পণ্যের ওপর কর কমছে। সস্তা হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় বহু পণ্য। ১৫ নভেম্বর থেকে নতুন এই করের হার কার্যকর হবে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘জিএসটি কাউন্সিলের সিদ্ধান্তে মানুষের আরও সুবিধা হবে।’

গত বছরের নভেম্বরে ভারতে এক ঘোষণায় বাতিল করা হয় ৫০০ ও ১ হাজার রুপির নোট। গত জুলাইতে কার্যকর করা জিএসটি কর। সবকিছু মিলিয়ে মোদি সরকারের প্রতি একটা অসন্তোষ তৈরি হয়। এত দিন বিরোধীদের দাবি সত্ত্বেও অনড় ছিলেন মোদির সরকার। এখন গুজরাটের আমজনতার ক্ষোভ বুঝে জিএসটির এই হার কমানোর সিদ্ধান্ত আসল বলে মনে করছে বিরোধী দল কংগ্রেস। কিছুদিনের মধ্যে গুজরাটের বিধানসভার নির্বাচন হবে।

টুইটারে কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম কটাক্ষ করে বলেন, ‘ধন্যবাদ গুজরাট। সংসদ বা সাধারণ মানুষ যা করতে পারেনি, তোমার ভোট তা-ই করে দিল।’

বিরোধীদের অভিযোগ এক রকম মেনেই নিয়েছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তিনি বলেছেন, ‘গুজরাট নির্বাচনের জেরে যদি গোটা ভারতের মানুষের কল্যাণ হয়, তবে তো ভালো কথা।’

একসঙ্গে এত পণ্যে কর কমানোর কারণে প্রায় ২০ হাজার কোটি রুপি রাজস্ব আয় কম হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল কুমার মোদি বলেছেন, করের কমানোর কারণে বছরে ২০ হাজার কোটি রুপির রাজস্ব হারাবে দেশ।

ব্যবসায়িক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইওয়াই ইন্ডিয়ার কর অংশীদার বিপিন সাপ্রা বলেছেন, যখন হার কমানোর কারণে পণ্যের দাম যথেষ্ট কমে যাবে, তখন সরকারের রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে ভারসাম্য আনার বিষয়টিও ভাবতে হবে।

অরুণ জেটলির বলেছেন, ‘করের হার কমলে কর পরিষদের পরিমাণ বাড়বে।’

তবে সমালোচকেরা যাই বলুক না কেন। এই করের হার কমানোয় খুশি আমজনতা। গতকাল অরুণ জেটলির ঘোষণার পর রাস্তায় নেমে বাজি পুড়িয়ে আনন্দ উল্লাস করা হয় অনেক শহরে।

সূত্র: এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া ও আনন্দবাজার অনলাইন।