পেঁয়াজের দাম আবার বাড়ল

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজধানীর পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের ঝাঁজ আবার বেড়েছে, যার আঁচ পড়তে শুরু করেছে খুচরা দোকানগুলোতে। কারওয়ান বাজারের পাইকারি দোকানে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি প্রায় ১০-১৫ টাকা বেড়েছে। একই চিত্র শ্যামবাজারের আড়তগুলোতেও।

পাইকারি দোকানে দাম বেড়ে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে কারওয়ান বাজারের খুচরা দোকানে। সেখানে প্রতি কেজি ভালো মানের দেশি পেঁয়াজের দাম ৮৫ টাকা হাঁকছেন বিক্রেতারা। এক সপ্তাহ আগে যা ৭০-৭৫ টাকা ছিল। খুচরা দোকানে প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজের দাম চাওয়া হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকা, যা ৫৫ টাকায় নেমেছিল। অবশ্য মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব ঢাকার সব বাজারে এখনো পড়েনি।

পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, নতুন করে মূল্যবৃদ্ধির কারণ ভারতের বাজার। সেখানে গত এক সপ্তাহে দাম বেড়ে গেছে। অবশ্য আগামী ১০ দিনের মধ্যে দাম কমতে শুরু করবে বলেও মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

দেশের মানুষের অতি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মধ্যে পেঁয়াজ একটি। বাংলাদেশে বছরে প্রায় ২৪ লাখ টন পেঁয়াজের চাহিদা আছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ আমদানি করা হয়, যার অধিকাংশই আসে ভারত থেকে। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে গত বছর এ সময় প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ৪০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ছিল ২৫ টাকা।

দেশে গত মাসের শেষে পেঁয়াজের দর অনেকটা বেড়ে যায়। এরপর তা কমেছিল। এক সপ্তাহ ধরে পাইকারি বাজারে দাম আবার বাড়ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। কারওয়ান বাজারের আড়তের পেঁয়াজ বিক্রেতা নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পেঁয়াজের বাজারে দামের কোনো ঠিক নেই। এই বাড়ে, এই কমে। তিনি জানান, ৫ কেজি কিনলে তিনি প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম রাখছেন ৭৮ টাকা। এর চেয়ে বেশি কিনলে দর আরও কিছুটা কম পড়ে। সপ্তাহখানেক আগে দেশি পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৬৫ টাকায় নেমেছিল বলে জানান তিনি।

কারওয়ান বাজারের আড়তে ভারতীয় বড় পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৫৫-৫৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা ৪৫ টাকায় নেমেছিল।

আড়ত থেকে কিছুটা দূরে খুচরা দুই বিক্রেতা মনির হোসেন ও মামুন হোসেন কেজিপ্রতি দেশি পেঁয়াজ ৮৫ টাকা এবং ভারতীয় বড় পেঁয়াজ ৬৫-৭০ টাকা দাম চান। মনির হোসেন বলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে এ দাম বেড়েছে।

ভারতের ইংরেজি দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়ার গত শনিবারের এক খবরে বলা হয়, মহারাষ্ট্রের নাসিক জেলার লাসালগাঁওয়ে ৫ দিনে পেঁয়াজের দাম ২৫ শতাংশ বেড়ে যায়। শুক্রবার সেখানে প্রতি কুইন্টাল বা ১০০ কেজির গড় দাম ওঠে ৩ হাজার ২০০ রুপি। ব্যবসায়ীদের বরাত দিয়ে পত্রিকাটি বলেছে, পেঁয়াজের সরবরাহ কম বলে দাম বেড়েছে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নতুন পেঁয়াজ পুরোদমে উঠতে শুরু করবে। এতে দাম কমে যাবে। উল্লেখ্য, লাসালগাঁও ভারতের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা এ বাজার থেকেই মূলত পেঁয়াজ আমদানি করেন।

শ্যামবাজারের পেঁয়াজের আড়ত নবীন ট্রেডার্সের মালিক নারায়ণ চন্দ্র সাহা পেঁয়াজের বাজার নিয়ে একই ধরনের পূর্বাভাস দেন। তিনি বলেন, ভারতের নাসিকে নতুন পেঁয়াজ উঠছে। তবে পরিপক্ব হয়নি। কিছুদিন পরেই পরিপক্ব পেঁয়াজ বাংলাদেশে আমদানি শুরু হবে। তখন দাম ৩০-৩৫ টাকায় নামবে।

দেশে সাধারণত নভেম্বরের শেষ দিকে মুড়িকাটা পেঁয়াজ ওঠা শুরু হয়। এ বছর বৃষ্টিতে আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত ও বাজারে সরবরাহের সময় পিছিয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।