টাকা ধার করেও সংকট মিটছে না ফারমার্স ব্যাংকের

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রেপোর মাধ্যমে ৯৬ কোটি টাকা নিলেও তারল্যসংকট কাটেনি ফারমার্স ব্যাংকের। গতকাল বুধবারও নিয়ম মেনে বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত নগদ জমা (সিআরআর) রাখতে ব্যর্থ হয়েছে ব্যাংকটি। এ অবস্থায় তারল্যসংকট কাটাতে উচ্চ সুদে আমানত সংগ্রহের চেষ্টা করছে ব্যাংকটি। ফারমার্স ও বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। তবে এ বিষয়ে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম শামীমের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নিয়ম অনুযায়ী, তারল্য সংকট কাটাতে রেপোর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে পারে ব্যাংকগুলো। আবার রিভার্স রেপোর মাধ্যমে বাজার থেকে টাকা তুলে নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
সূত্র জানায়, নানা ঋণ অনিয়মের কারণে সংকটে পড়া ফারমার্স ব্যাংক গ্রাহকের কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত আমানত পাচ্ছে না। এ ছাড়া অন্য ব্যাংক থেকেও কলমানির মাধ্যমে আর টাকা সংগ্রহ করতে পারছে না। এ অবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৩০০ কোটি টাকা আমানত চেয়ে চিঠি দিয়ে কোনো সাড়া পায়নি ব্যাংকটি। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত মঙ্গলবার রেপোর মাধ্যমে ৯৬ কোটি টাকা জোগান দেয় ব্যাংকটিকে। পৌনে ৭ শতাংশ সুদে এ অর্থ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপরও গতকাল বুধবার নিয়মমতো বাংলাদেশ ব্যাংকে নগদ জমা বা সিআরআরের অর্থ রাখতে ব্যর্থ হয়েছে ব্যাংকটি।

এর আগে গত সপ্তাহে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) ৩৫ কোটি টাকার আমানত ফেরতের একটি চেক কয়েক দফায় ডিজঅনার হয়। পরে চতুর্থ দফায় সেই অর্থ ফেরত দেয় ব্যাংকটি।

নানা অনিয়মের কারণে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ব্যাংকটির নতুন ঋণ বিতরণ ও শাখা সম্প্রসারণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নতুন ঋণ দেওয়ায় সম্প্রতি ব্যাংকটির ব্যাখ্যা তলব করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে গত ২৯ অক্টোবর অর্থ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে ফারমার্স ব্যাংকের অনিয়ম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। ওই কমিটিতে উত্থাপিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাংকটিতে চরম তারল্য সংকট চলছে। এখন আমানতকারীর দায় পরিশোধের মতো পরিস্থিতি এই ব্যাংকের নেই। নিয়মমতো টাকা জমা রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় গত এক বছরে ব্যাংকটিকে ১৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।