১৮৭টি ভোগ্যপণ্যে আমদানি শুল্ক কমাল চীন

ভোক্তা চাহিদা বাড়াতে ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করতে ১৮৭টি পণ্যে আমদানি শুল্ক কমানোর ঘোষণা দিয়েছে চীন। ছবি: এএফপি
ভোক্তা চাহিদা বাড়াতে ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করতে ১৮৭টি পণ্যে আমদানি শুল্ক কমানোর ঘোষণা দিয়েছে চীন। ছবি: এএফপি

ভোক্তা চাহিদা বাড়াতে ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করতে বিপুল পরিমাণ পণ্যে আমদানি শুল্ক কমানোর ঘোষণা দিয়েছে চীন। গতকাল শুক্রবার চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, মোট ১৮৭ ধরনের পণ্যে আমদানি শুল্ক কমবে। এসব পণ্যে বিদ্যমান গড় শুল্ক ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৭ দশমিক ৭ শতাংশ করা হবে। এর ফলে প্রক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বলের তৈরি শিশুদের ডায়াপার থেকে শুরু করে দামি পানীয় হুইস্কির মতো পণ্যগুলো চীনের বাজারে আরও সাশ্রয়ী হয়ে উঠবে। অর্থাৎ চীনের ক্রেতারা গুণগত মানসম্পন্ন এবং স্থানীয় বাজারে তৈরি হয় না—এমন পণ্যগুলো আরও সাশ্রয়ী মূল্যে কিনতে পারবেন।

আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে এ নিয়ম কার্যকর হবে। প্রতিবছর বিদেশভ্রমণের মাধ্যমে নামীদামি পণ্য ক্রয় করে থাকেন চীনা নাগরিকেরা। তাই দেশে বসেই সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য ক্রয়ে উৎসাহ দিতে এ সিদ্ধান্ত নিল চীন।

আমদানি বৃদ্ধি করতে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ না নেওয়ায় বহুদিন ধরেই সমালোচনার মধ্যে রয়েছে চীন। নতুন মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়া দেশটির প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিশ্বের সেরা মানের পণ্য নিয়ে আসার তাগিদ দিয়েছেন। মূলত, এসব কারণেই দেশটি আমদানি শুল্ক হ্রাসের উদ্যোগ নিয়েছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এর মাধ্যমে ভোগ চালিত অর্থনীতির দিকে প্রথম ধাপ এগুলো চীন। বিশ্বকে বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রকে বার্তা দেওয়া হলো যে উন্মুক্ত বাজারে প্রবেশ করতে যাচ্ছে চীন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও দীর্ঘদিন ধরে চীনের বিদ্যমান বাণিজ্য নীতির সমালোচনা করে আসছিলেন এবং দেশটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাটতি কমানোয় জোর দিচ্ছিলেন।

চীনে দেশি-বিদেশি ব্র্যান্ডগুলোর বাড়তি চাহিদা রয়েছে, বিশেষ করে খাদ্যপণ্যের ক্ষেত্রে। অর্থনীতিবিদেরা মনে করছেন, আমদানি পণ্যের ওপর শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত খুবই ইতিবাচক এবং সরকারের এই প্রক্রিয়া চলমান থাকবে ।

বহুজাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান দ্য হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশনের (এইচএসবিসি) চিফ ট্রেড ইকোনমিস্ট ডো লিপল্ডট বলেন, কাপড়, দুগ্ধজাত পণ্য, খাবার এবং অন্যান্য ভোগ্যপণ্যে আমদানি শুল্ক কমানোয় দেশীয় উৎপাদনকারীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা বাড়বে। যার ফলে দীর্ঘ মেয়াদে চীনের অর্থনীতি ও ভোক্তারা সুবিধা পাবে।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশ চীন তাদের প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির মডেল পরিবর্তন করতে চাইছে। বর্তমানে চীনের অর্থনীতি বিনিয়োগ ও রপ্তানিনির্ভর, যার থেকে বের করে আনতে চাইছে। এর ধারাবাহিকতায় দেশটি এখন ভোক্তা ব্যয় বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। সূত্র: বিবিসি অনলাইন।