কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশ কমেছে

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বাংলাদেশে শিল্প ও সেবা খাতের চাকরিতে নারীর অংশ গত তিন বছরে কমেছে। ২০১৩ সালে সার্বিকভাবে দেশের ১০০টি কর্মসংস্থানের মধ্যে ৩৩টি ছিল নারীর দখলে, ২০১৬ সালে তা কমে ২৮টিতে দাঁড়িয়েছে।

নারীর কর্মসংস্থান নিয়ে ‘শ্রমবাজার পরিস্থিতি ২০০৬ থেকে ২০১৬’ শীর্ষক এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। এ গবেষণাটি করেছেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক ইকবাল হোসেন। রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে গতকাল বুধবার শুরু হওয়া ‘বিআইডিএস রিসার্চ অ্যালমানাক’ শীর্ষক সম্মেলনে এ গবেষণাটি উপস্থাপন করা হয়। এতে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক খাতের কর্মসংস্থান এবং উপজাতি জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান পরিস্থিতি নিয়ে আরও দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। এ দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইডিএসের গবেষক মিনহাজ মাহমুদ ও কাজী আলী তৌফিক।

নারীর কর্মসংস্থানবিষয়ক গবেষণায় বলা হয়, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনে কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জরিপ অনুযায়ী, গত তিন বছরে বিভিন্ন খাতে নারীর কর্মসংস্থান কমেছে। যেমন ২০১৩ সালে শিল্প খাতে নারীর কর্মসংস্থান ছিল ২৩ দশমিক ৭ শতাংশ, ২০১৬ সালে তা কমে ১৬ শতাংশে নেমে এসেছে। সেবা খাতে ২০১৩ সালে নারীর অংশ ছিল ২৩ শতাংশ, তিন বছর পর তা কমে ২১ শতাংশ হয়েছে।

কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশ কমে যাওয়ার ব্যাখ্যায় বলা হয়, ২০১৩ সালে রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর ঠিকা কাজ করা অনেক পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এতে নারীর কাজের সুযোগ কমে গেছে। আবার মানুষের আয় বাড়ায় অনেক নারী এখন ঘরের বাইরে কাজ করতে চান না। তবে আশার খবর হচ্ছে, আগামী কয়েক বছরে তৈরি পোশাক, চামড়া, তথ্যপ্রযুক্তি, ওষুধ, খেলনার মতো কয়েকটি খাতে নারী কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সুযোগ আছে। তবে এ জন্য বিশেষ দক্ষতা অর্জনে গুরুত্ব দিতে হবে।

আদিবাসী জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানবিষয়ক গবেষণায় বলা হয়, এ জনগোষ্ঠীর সিংহভাগই যেকোনো একটি কাজে নিয়োজিত থাকার পরও অর্ধেকের বেশি দরিদ্র। এর কারণ হলো আদিবাসীরা অপেক্ষাকৃত কম দক্ষতার ও কম উৎপাদনশীল কাজ বেশি করে। তাদের দক্ষতা বাড়লে দারিদ্র্য কমিয়ে আনা সম্ভব।

সম্মেলনের প্রথম দিনের শেষ কর্ম অধিবেশনের বিষয়বস্তু ছিল আর্থিক বাজার ও অন্তর্ভুক্তি। এই অধিবেশনে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ঝুঁকি ও মুনাফা নিয়ে একটি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। এ ছাড়া প্রত্যন্ত অঞ্চলের দারিদ্র্য কমাতে ব্যাংক ও মোবাইল ফোনের ভূমিকা নিয়ে দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়।