আরসিবিসির বিরুদ্ধে 'মামলা'র পরিকল্পনায় বাংলাদেশ ব্যাংক

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরির ঘটনায় ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) বিরুদ্ধে মামলা করার পরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আজ শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক ও আর্থিক লেনদেনের বার্তা আদান-প্রদানকারী আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক সুইফটের সঙ্গে আলোচনা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মামলার বিষয়ে ফেডারেল রিজার্ভ কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়নি। ওই মামলায় তারা বাদী হবে কি না, এমন কোনো ইঙ্গিতও পাওয়া যায়নি।

রয়টার্স বলছে, গত মাসে আরসিবিসির বিরুদ্ধে মামলা করার পরিকল্পনা নিয়ে নিউইয়র্ক ফেডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা। ওই কনফারেন্স কলে সুইফটের দুজন প্রতিনিধিও ছিলেন আলোচনায়। বাংলাদেশ ব্যাংককে আইনি পরামর্শ দিচ্ছেন এ রকম একজন ওই কনফারেন্স কলে আরসিবিসির বিরুদ্ধে মামলা করার বিষয়টি তোলেন। বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো লিখিত প্রস্তাব পাঠালে তা বিবেচনা করে দেখা হবে বলে ওই বৈঠকে আশ্বাস দেন ফেডের কর্মকর্তারা।

প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, অর্থ উদ্ধারের জন্য আগামী মার্চ-এপ্রিল নাগাদ ওই দেওয়ানি মামলাটি করা হবে নিউইয়র্কে। ফেডারেল রিজার্ভ ও সুইফট কর্তৃপক্ষ এই মামলায় বাদী হবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা রয়টার্সকে বলেছেন, এই মামলার বিষয়ে তাঁর কোনো ধারণা নেই। তবে রিজার্ভ চুরির পুরো অর্থ উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

এ বিষয়ে ফেডারেল রিজার্ভ ও সুইফটের পক্ষ থেকেও আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে (নিউইয়র্ক ফেড) রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের হিসাব থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরির ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ২ কোটি ডলার চলে যায় শ্রীলঙ্কায় আর বাকি ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের আরসিবিসিতে। ব্যাংকটির মাধ্যমে স্থানীয় মুদ্রায় বদলে ফিলিপাইনের ক্যাসিনোতে (জুয়া খেলার জায়গা) চলে যায় বেশির ভাগ অর্থ।

শ্রীলঙ্কায় যাওয়া ২ কোটি ডলার ফেরত পাওয়া গেছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়। পরে ফিলিপাইনের সিনেট শুনানির মাধ্যমে উদ্ধার হওয়া ১ কোটি ৫২ লাখ ডলার ফেরত পায় বাংলাদেশ।

বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সাইবার হামলার এই ঘটনা এক মাস পর ফিলিপাইনের গণমাধ্যমের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রকাশ পায়। বিষয়টি চেপে রাখায় সমালোচনার মুখে গভর্নরের পদ ছাড়তে বাধ্য হন আতিউর রহমান। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে আনা হয় বড় ধরনের রদবদল।