বিনিয়োগকারীদের সাবধান করল কোম্পানি কর্তৃপক্ষ

মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানির শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধিতে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মূল্যসূচক বেড়েছে অর্ধশত পয়েন্টের বেশি। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স এদিন প্রায় ৫৫ পয়েন্ট বেড়ে হয়েছে ৬ হাজার ২৫২। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচকটি বেড়েছে প্রায় ১৭৪ পয়েন্ট। দুই বাজারে সূচক বাড়লেও লেনদেনে ছিল ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান।
বাজার-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গতকাল মঙ্গলবার দুই বাজারে সূচকের উত্থানের পেছনে বড় ভূমিকা ছিল ব্যাংকসহ বড় মূলধনি কোম্পানিগুলোর। ঢাকার বাজারে গতকাল মূল্যবৃদ্ধিতে শীর্ষে ছিল প্রাইম ব্যাংক। এ ছাড়া লেনদেন হওয়া ব্যাংকের মধ্যে সিংহভাগেরই দাম বেড়েছে গতকাল। লেনদেন হওয়া ৩০ ব্যাংকের মধ্যে এদিন ২৯টিরই দাম বেড়েছে। ডিএসইতে গতকাল মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে ৭টিই ছিল ব্যাংক।
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত চামড়া খাতের কোম্পানি লিগেসি ফুটওয়্যারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে চলেছে। গত ১৯ কার্যদিবসে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ১৬ টাকা বেড়েছে। অথচ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোম্পানিটির উৎপাদন কার্যক্রম আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে। উৎপাদন বন্ধ থাকা কোম্পানির শেয়ারের একটানা ঊর্ধ্বগতিতে কোম্পানি কর্তৃপক্ষও বিস্মিত। তাই গতকাল ডিএসইর ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের জন্য একধরনের সতর্কবার্তা দিয়েছে। সেখানে কোম্পানির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কোম্পানি কর্তৃপক্ষের হাতে এমন কোনো অপ্রকাশিত তথ্য নেই, যা কোম্পানির উৎপাদন ও মুনাফায় প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকি শেয়ারের লেনদেন ও মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার মতোও কোনো তথ্য তাদের হাতে নেই। তাই বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় কোম্পানিটির শেয়ারে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
ঢাকার বাজারে গতকালও লিগেসি ফুটওয়্যারের প্রতিটি শেয়ারের দাম দেড় টাকা বা প্রায় আড়াই শতাংশ বেড়েছে। দিন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ৬৩ টাকায়। গত ১৫ নভেম্বর কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ৪৭ টাকা।
ঢাকার বাজারে গতকাল লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস। এদিন ডিএসইতে এককভাবে কোম্পানিটির প্রায় ১৮ কোটি টাকার শেয়ারের হাতবদল হয়েছে। দিন শেষে প্রতিটি শেয়ারের দাম ৭০ পয়সা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০৪ টাকায়। স্কয়ার ফার্মার লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল লভ্যাংশ বিতরণের খবরটি। গতকাল কোম্পানিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত জুনে সমাপ্ত আর্থিক বছরের জন্য ঘোষিত লভ্যাংশ শেয়ারধারীদের বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাবে পাঠানো হয়েছে। গত জুনে সমাপ্ত আর্থিক বছরে কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের জন্য নগদ ও বোনাস মিলিয়ে সাড়ে ৪২ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল।
সূচক বাড়লেও ঢাকার বাজারে লেনদেন কমে নেমে এসেছে ৪৪৪ কোটি টাকা। গত ১৩ জুনের পর এটিই ছিল ডিএসইতে সর্বনিম্ন লেনদেন। তবে লেনদেন বেড়েছে চট্টগ্রামের বাজারে। গতকাল দিন শেষে সিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩০ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ৭ কোটি টাকা কম।
জানতে চাইলে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, ঐতিহাসিকভাবে ডিসেম্বরের শুরু থেকে মাঝামাঝি সময়টাতে বাজারে লেনদেনে কিছুটা মন্দাভাব থাকে। মাসের শেষের দিকে গিয়ে লেনদেনে কিছুটা গতি সঞ্চার হয়। কারণ বছরের শেষ সময়ে এসে অনেক প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর সক্রিয়তা বাড়ে বাজারে।