প্রতি বছর হবে ব্লিসের আয়োজন

দেশের রপ্তানিমুখী চামড়া শিল্পের উদ্যোক্তারা ভবিষ্যতে পাদুকা ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে বিশ্বের সেরা ১০টি রপ্তানিকারকের একটি হতে চায় বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। কৌশলগত লক্ষ্যে অর্জনের জন্য স্থানীয় চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনকারী ও রপ্তানিকারকেরা ‘বাংলাদেশ লেদার ফুটওয়্যার এবং লেদার গুডস ইন্টারন্যাশনাল সোর্সিং শো (ব্লিস)’ নিয়মিত আয়োজন করবে বলে জানিয়েছেন।

প্রথমবারের মতো আয়োজিত তিন দিন ব্যাপী ব্লিস-২০১৭ সকল স্টেক হোল্ডারদের ইতিবাচক সাড়া অর্জন করেছে। এলএফএমইএবির মতে এই আয়োজন বৈশ্বিক রপ্তানিকারক, ব্র্যান্ড, নির্মাতা ও ক্রেতাসাধারণের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছিল।

‘থিংক অ্যাহেড থিংক বাংলাদেশ’ (Think Ahead, Think Bangladesh) প্রতিপাদ্য নিয়ে ১৬-১৮ নভেম্বর রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টার বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি খাতের এ প্রদর্শনীর আয়োজক যৌথভাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং এলএফএইএইচ।
১৬ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ব্লিসের উদ্বোধন করেন।

ব্লিসের বিভিন্ন স্টলে বৃহৎ পরিসরে অংশগ্রহণকারীদের উদ্ভাবনী পণ্যের ৩০ টিরও বেশি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে স্থানীয় ক্রেতা, ডিজাইনার, ব্র্যান্ড, ফ্যাশন বিশেষজ্ঞ, শিল্প নেতা, সোর্সিং এজেন্ট, খুচরা সরবরাহকারী ও বিনিয়োগকারীগণ ব্যাপক পরিসরে চামড়া শিল্পের স্থানীয় নির্মাতা ও রপ্তানিকারকদের সম্পর্কে ধারণা অর্জন করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে এন্ট্রির স্ট্র্যাটেজি হিসাবে ব্রেক আউট সেশন, লিন ম্যানেজমেন্ট এবং চামড়া শিল্প সরবরাহ চ্যানেলের স্থিতিশীলতা সম্পর্কিত ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে বিশ্বব্যাপী বিশেষজ্ঞদের দ্বারা স্থানীয় শিল্পের প্রচুর প্রয়োজনীয় আন্তর্জাতিক শিল্পের তথ্য এবং অন্তর্দৃষ্টি আনা হয়েছে। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের মাধ্যমে চামড়াশিল্পের নীতি নির্ধারক ও সরকারি কর্তাগণ চামড়াশিল্পের অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা সম্পর্কে ধারণা অর্জন করেন।

চামড়াশিল্পের নীতি নির্ধারকেরা বলেন, ব্লিস, এলএফএমইএবি ও সরকারের নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে একত্রে চামড়া শিল্পের সরবরাহ প্রক্রিয়া আরও উন্নত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

গ্লোবাল ম্যাগাজিন এবং অনলাইন পোর্টাল যেমন-আন্তর্জাতিক লেদার মেকার, লেদারেজ, ওয়ার্ল্ড ফুটওয়্যার ম্যাগাজিন এবং মোডাপেলের মতো অনলাইন পোর্টালগুলো চামড়া খাতকে চিত্রিত করে ব্লিসকে ইতিবাচকভাবে তুলে ধরেছে, যা বিদেশে বাংলাদেশের ব্র্যান্ড ইমেজকে শক্তিশালী করেছে।

সরকারের সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা অনুযায়ী, সরকার ২০২১ সালের মধ্যে চামড়া খাতের জন্য লক্ষ্যমাত্রা ৫.০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নির্ধারণ করেছে, কারণ বাংলাদেশের পণ্যগুলো সাধারণত বৈশ্বিক ক্রেতাদের এবং ব্র্যান্ডের আকর্ষণের জন্য যথেষ্ট। বিষয়ে, ব্লিস বাংলাদেশি পণ্যর মান সম্পর্কে বহির্বিশ্বের মানসিকতা পরিবর্তন সহায়ক হয়েছে।

পরবর্তীতে, এলএফএমইএবি বাংলাদেশের বার্ষিক ইভেন্ট হিসাবে ব্লিসকে ঘোষণা করেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও এলএফএমইএবি যৌথভাবে কমপক্ষে পরবর্তী তিন বছরের জন্য এ অনুষ্ঠান নিয়মিত চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। পরের বছর ব্লিস একই স্থানে ১-৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।

এশিয়া বিষয়ক ১৬টি পাদুকা সমিতির ব্যবসায়ী নেতারা ৭০টি আন্তর্জাতিক বিশিষ্ট ব্যক্তি ব্লিস পরিদর্শন করেন এবং বাংলাদেশ থেকে সরবরাহের সুযোগের পাশাপাশি বিনিয়োগের সুযোগও খুঁজে পান।