বছরের শেষ লেনদেন সূচকে উল্লম্ফন

শেয়ারবাজার
শেয়ারবাজার

২০১৭ সালের শেয়ারবাজারে শেষ লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার। এদিন দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে সূচক ও লেনদেনে বড় উল্লম্ফন ঘটেছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল ৫৮ পয়েন্ট বা প্রায় ১ শতাংশ বেড়েছে। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচকটি ১৪৫ পয়েন্ট বা পৌনে ১ শতাংশ।

চলতি বছরের শেষ কার্যদিবস আগামী রোববার। কিন্তু শেষ কার্যদিবসে ব্যাংকে লেনদেন বন্ধ থাকে। তাই শেয়ারবাজারেও এদিন লেনদেন বন্ধ থাকবে। সে কারণে গতকালই ছিল শেয়ারবাজারে বছরের শেষ লেনদেন দিবস।

বাজার-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেছেন, ঐতিহাসিকভাবে বছরের শেষ কার্যদিবসে বাজারে সূচক ও লেনদেনে ঊর্ধ্বগতি থাকে। এর কারণ ব্যাখ্যায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ডিসেম্বর শেষে তাদের আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করবে। তাতে শেষ কার্যদিবসের শেয়ারের বাজারমূল্যকে হিসাবে ধরবে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। এ কারণে এদিনটিতে বাজারকে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় রাখা হয়।

ঢাকার বাজারে গতকাল দিন শেষে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৬২৮ কোটি টাকা। ৫ ডিসেম্বরের পর এটিই ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন। চট্টগ্রামের বাজারে গতকাল লেনদেনের পরিমাণ ছিল প্রায় ১৮১ কোটি টাকা, যা আগের কার্যদিবসের চেয়ে প্রায় পৌনে তিন গুণ।

শেয়ারবাজারের পাশাপাশি ব্যাংকেও গতকাল ছিল বছরের শেষ লেনদেন। আগামী রোববার ব্যাংক খোলা থাকলেও কোনো লেনদেন হবে না। কারণ এদিন ব্যাংকগুলো তাদের বার্ষিক হিসাব চূড়ান্ত করবে।
এদিকে নতুন নামে গতকাল থেকে মূল বাজারে লেনদেন শুরু করেছে ওটিসি (ওভার দ্য কাউন্টার) বাজারের কোম্পানি আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ। এর আগে ওটিসি বাজারে এটির নাম ছিল সজীব নিটওয়্যার। গতকাল মূল বাজারে ফিরেই কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ১৩০ টাকা বা ১০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪৩ টাকায়। ওটিসি বাজারের কোম্পানি সজীব নিটওয়্যারের মালিকানা কিনে নেয় আলিফ গ্রুপ। পরে ওটিসি বাজারেই কৃত্রিমভাবে এটির দাম বাড়ানো হয়। সে সুযোগে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকেরাও বেশি দামে বিপুল শেয়ার বিক্রি করে দেন।

ডিএসইর ওয়েবসাইটে সংরক্ষিত কোম্পানিটির শেয়ার ধারণ-সংক্রান্ত তথ্যে দেখা যাচ্ছে, ২০১৬ সালের জুনেও কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে ছিল প্রায় সাড়ে ৭৯ শতাংশ শেয়ার। গত নভেম্বর শেষে তা নেমে আসে প্রায় ৬৪ শতাংশে। অর্থাৎ উদ্যোক্তা পরিচালকদের ১৫ শতাংশের বেশি শেয়ার বিক্রি হয়েছে।

অন্যদিকে মূল বাজারে ফিরে প্রথম দিনই আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার ছিল প্রায় বিক্রেতাশূন্য। কোম্পানিটির প্রায় ৬৪ হাজার শেয়ারের হাতবদল হয় এদিন।

ঢাকার বাজারে গতকালও লেনদেনের শীর্ষে ছিল বহুজাতিক লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট। যদিও এদিন কোম্পানিটির শেয়ারের সামান্য দরপতন ঘটেছে। দিন শেষে প্রতিটি শেয়ারের দাম ২০ পয়সা কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭০ টাকায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া ৫০৫ কোটি টাকায় হোলসিম বাংলাদেশকে কিনে নেওয়ার চূড়ান্ত ঘোষণার পর থেকে কোম্পানিটির শেয়ারের লেনদেন ও মূল্যবৃদ্ধি শুরু হয়। ২৪ ডিসেম্বর লাফার্জের পক্ষ থেকে হোলসিমকে কিনে নেওয়ার সিদ্ধান্তটি শেয়ারধারীদের জানানো হয়েছিল। তাতে চার কার্যদিবসে (গতকাল বাদে) কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ১৯ টাকা বেড়েছে।