বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ২০১৩-১৪ সালের দেশের সর্বোচ্চ রপ্তানি আয়কারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে জাতীয় রপ্তানি ট্রফি ও সনদ দেন।

বাসসের খবরে জানা যায়, আজ রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মেলার উদ্বোধন করেন। সেখানে তিনি রপ্তানি ট্রফি দেন।

২০১৩-১৪ অর্থবছরে পণ্য খাতে সর্বোচ্চ রপ্তানি আয়ের জন্য জাবের অ্যান্ড জুবায়ের ফ্রেব্রিকসকে জাতীয় স্বর্ণ ট্রফি প্রদান করা হয়। প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এস এম রফিকুল ইসলাম নোমান প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ট্রফি নেন।

৬৬টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে ২০১৩-১৪ অর্থবছরের জন্য জাতীয় রপ্তানি ট্রফি ও সনদ প্রদান করা হয়। ২০১৩-১৪ অর্থবছরের পণ্য ও সেবা খাতে ২৯টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে স্বর্ণ, ২২টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে রৌপ্য এবং পণ্য খাতে ১৫টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে ব্রোঞ্জ ট্রফি দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম চৌধুরী এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন। ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান মাফরুহা সুলতানা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বাণিজ্য মেলার স্থায়ী আয়োজনে সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে বলেন, পূর্বাচলে ৬০ বিঘা জমির ওপর স্থায়ী বাণিজ্য মেলা কেন্দ্র তৈরির কাজ শিগগিরই শুরু হবে। চীনের অর্থায়নে ২০১৯ সালে এটির নির্মাণকাজ শেষ হবে।

তোফায়েল আহমেদ জানান, এ বছর ২১টি দেশ (বাংলাদেশসহ) মেলায় অংশ নিচ্ছে। মেলায় বাংলাদেশ ছাড়া যেসব দেশের প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে, সেগুলো হলো ভারত, পাকিস্তান, চীন, মালয়েশিয়া, ইরান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, দক্ষিণ কোরিয়া, মরিশাস, নেপাল, হংকং, জাপান, ভুটান, বাহরাইন, ভিয়েতনাম ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।

বাণিজ্যমন্ত্রী আরও জানান, ১৩ লাখ ৭৩ হাজার বর্গফুট আয়তনের এবারের মেলাস্থল। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। এবারের মেলায় প্রবেশমূল্য ধরা হয়েছে (পূর্ববর্তী তিন বছরের মতো) প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য জনপ্রতি ৩০ টাকা এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য জনপ্রতি ২০ টাকা।

এবার বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্টল-প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৮০টি। মেলা মাঠে একটি ই-শপ, দুটি শিশুপার্ক, তিনটি রক্ত সংগ্রহ কেন্দ্র, তিনটি মা ও শিশু কেন্দ্র এবং একটি প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মাঠের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন স্পটে বাগান তৈরি করা হয়েছে। মেলা প্রাঙ্গণে মুসল্লিদের নামাজ পড়ার জন্য একটি মসজিদ এবং আনসার ও বেসরকারি সিকিউরিটি ফোর্স সদস্যদের জন্য দুটি ডরমিটরি স্থাপন করা হয়েছে।

তোফায়েল আহমেদ আরও জানান, বাণিজ্য মেলা থেকে ২০১০ সালে ২২ কোটি ৮৬ লাখ টাকার, ২০১১ সালে ২৫ কোটি টাকার, ২০১২ সালে ৪৩ কোটি ১৮ লাখ টাকার, ২০১৩ সালে ১৫৭ কোটি টাকার, ২০১৪ সালে ৮০ কোটি টাকার, ২০১৫ সালে ৮৫ কোটি টাকার এবং ২০১৬ সালে ২৩৫ কোটি ১৭ লাখ টাকার রপ্তানি আদেশ পাওয়া গেছে। ২০১৭ সালের বাণিজ্য মেলায় রপ্তানি আদেশ আরও বেশি পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

মেলার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পুলিশ বাহিনীর পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), র‍্যাব, আনসার ও বেসরকারি সিকিউরিটি ফোর্স মোতায়েন থাকবে। গত মেলার মতো এবারও মেলায় ১৪০টি সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে।