ছয় মাসে প্রবাসী আয় সাড়ে ১২% বেড়েছে

চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে দেশে বৈধ পথে প্রবাসী আয় আসার পরিমাণ বেড়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বৈধ পথে প্রবাসী আয় এসেছে ৬৯৩ কোটি ডলার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের একই সময়ে এই আয়ের পরিমাণ ছিল ৬১৬ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। অর্থাৎ এ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবাসী আয় ১২ দশমিক ৪৬ শতাংশ বেড়েছে।

প্রবাসী আয় নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ব্যাংক ও আর্থিক খাত বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অবৈধভাবে প্রবাসী আয় আসা ঠেকাতে বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রবাসী আয়ে তারই ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশে মোট প্রবাসী আয় এসেছে ১ হাজার ২৭৬ কোটি মার্কিন ডলার। এ আয় গত তিন অর্থবছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ১ হাজার ৫৩১ কোটি ডলার, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে যা ছিল ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার।

সদ্য বিদায়ী ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ১১৬ কোটি ৭১ লাখ ডলার, গত নভেম্বরে যা ছিল ১২১ কোটি ৪৭ লাখ ডলার। সরকারি-বেসরকারি সব ব্যাংকের মধ্যে ডিসেম্বরে এককভাবে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় এনেছে ইসলামী ব্যাংক। ব্যাংকটির মাধ্যমে গত মাসে এসেছে ২৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার। এরপরের দুটি স্থানে আছে রাষ্ট্রমালিকানাধীন অগ্রণী ও সোনালী ব্যাংক। অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে ডিসেম্বরে প্রবাসী আয় এসেছে ১০ কোটি ৮১ লাখ ডলার। একই সময়ে সোনালী ব্যাংক এনেছে ৮ কোটি ৪৯ লাখ ডলার।

জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, চলতি অর্থবছরে প্রবাসী আয় পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করা যায়। কারণ, গত বছর প্রচুর লোক বিদেশে গেছেন। তাঁদের আয় এখন দেশে আসতে শুরু করেছে। ডলারের বিপরীতে টাকা অতিমূল্যায়িত ছিল, সেটা অনেকটা ঠিক হয়েছে। বৈধ ও অবৈধ উপায়ে টাকা পাঠানোর বিনিময় হারের পার্থক্য আগের চেয়ে কমেছে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ে হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ আসা বন্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু কঠোর পদক্ষেপও প্রবাসী আয় বাড়াতে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে।

মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে প্রবাসী আয় বিতরণের অভিযোগে গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর মোবাইলভিত্তিক আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশের ২ হাজার ৮৮৭টি এজেন্টের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে ১ হাজার ৮৬৩টি এজেন্ট হিসাব বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। বিকাশের মাধ্যমে অবৈধভাবে দেশে প্রবাসী আয় আসার কারণে তা বৈধ পথে আসা আয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করে।