জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ

ক্যাবের পর্যবেক্ষণে ২০১৭ সাল: ২০১৭ সালে ঢাকায় জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ। ছবি: প্রথম আলো।
ক্যাবের পর্যবেক্ষণে ২০১৭ সাল: ২০১৭ সালে ঢাকায় জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ। ছবি: প্রথম আলো।

সদ্য বিদায়ী ২০১৭ সালে আগের বছরের তুলনায় সব ধরনের চালের গড় মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ২০ দশমিক ৪০ শতাংশ। তুলনামূলকভাবে মোটা চালের দাম সরু চালের চেয়ে বেশি বেড়েছে। সব মিলিয়ে ২০১৭ সালে ঢাকায় জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং পণ্য ও সেবার মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ৭ দশমিক ১৭ শতাংশ। বৃদ্ধির এই হার আগের বছরের চেয়ে বেশি।

আজ মঙ্গলবার কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) দ্রব্যমূল্য ও জীবনযাত্রার ব্যয়বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে জীবনযাত্রার ব্যয়ের এই হিসাব প্রকাশ করা হয়। রাজধানীর ১৫টি খুচরা বাজার ও বিভিন্ন সেবার মধ্য থেকে ১১৪টি খাদ্যপণ্য, ২২টি নিত্যব্যবহার্য সামগ্রী ও ১৪টি সেবার তথ্য পর্যালোচনা করে ক্যাব এই হিসাব করেছে। এই হিসাব শিক্ষা, চিকিৎসা ও প্রকৃত যাতায়াত ব্যয়বহির্ভূত।

২০১৬ সালে জীবযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ ও পণ্য ও সেবার মূল্য বৃদ্ধি পায় ৫ দশমিক ৮১ শতাংশ।

অনুষ্ঠানে ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, নিম্ন ও নিম্নমধ্যম আয়ের মানুষের ওপরে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির প্রভাব আরও বেশি হারে পড়েছে। অন্তত ২০১৭ সালে এই মানুষেরা অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুফল পায়নি।

গত এক বছরে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে পেঁয়াজের। দেশি পেঁয়াজে দাম বেড়েছে ৪০ দশমিক ৯৯ শতাংশ ও আমদানি করা পেঁয়াজে বেড়েছে ৫৭ দশমিক ৫৪ শতাংশ। শাকসবজির গড়ে দাম বেড়েছে ২৪ দশমিক ২৮ শতাংশ। তরল দুধে বেড়েছে ২০ দশমিক ৩৬ শতাংশ, গরুর মাংস ১৯ দশমিক ৭২ শতাংশ। চিনি ও গুড়ে গড়ে দাম বেড়েছে ১২ দশমিক ৮ শতাংশ ও লবণে বেড়েছে ১১ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। ভোজ্যতেলে ১০ দশমিক ৭৮ শতাংশ, চা-পাতায় বেড়েছে ১০ দশমিক ৩২ শতাংশ। এ ছাড়া দেশি শাড়ি কাপড়, গুঁড়ো দুধ, মাছ, ডালডা, ঘি, মুরগি, ডিম, আটা-ময়দা প্রভৃতি জিনিসের দাম বেড়েছে।

গত এক বছরে দেশি মসুর ডালের দাম কমেছে ৭ দশমিক ৭ শতাংশ। আমদানি করা মসুর ডালে কমেছে ১২ দশমিক ২৪ শতাংশ। কমেছে ফার্মের ডিম, নারকেল তেল, আলু, রসুন, জ্বালানি তেলের দাম। সার্বিকভাবে মাছে দাম বাড়লেও দেশে উৎপাদিত কই ও ইলিশের দাম কমেছে।

অনুষ্ঠানে ক্যাবের আহ্বায়ক মোবাশ্বের হোসেন উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘আমার প্রতিবেশী আরও ধনী হয়েছেন। আমি আরও গরিব হয়েছি। দুজনে মিলে কিন্তু সম্পদ বেড়েছে। কিন্তু অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুফল মুষ্টিমেয় কয়েকজনের হাতে চলে যাওয়া খুবই বিপজ্জনক।’

ক্যাবের উপদেষ্টা এম শামসুল আলম বলেন, দ্রব্যমূল্য ও জীবনযাত্রা ব্যয়ের শিকার হয়েছে ১২ কোটি মানুষ। যাদের আয় দুই ডলারের নিচে।

অনুষ্ঠানে ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবির ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।