হয়রানি বন্ধ চান ব্যবসায়ীরা

ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনায় বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও কর কর্মকর্তাদের হয়রানিকে বড় সমস্যা মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, পণ্য আমদানি, পরিবহন, কর প্রদানসহ নানা ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নিজেদের নানা ধরনের হয়রানির কথা তুলে ধরেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাভিত্তিক ২৫টি ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা। তাঁদের মতে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং কর কর্মকর্তাদের হয়রানিসহ ব্যবসার নানা সমস্যা দূর করা গেলে ব্যবসা করার পরিবেশ অনেকটাই উন্নত হবে।

ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের সমস্যা শুনতেই মূলত এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এফবিসিসিআই। সরকারের সঙ্গে বেসরকারি খাতের সম্পৃক্ততা বাড়ানোর অংশ হিসেবে ইআরপি (এনগেজ, রিফ্লেক্ট, প্ল্যান অব অ্যাকশন) শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে গতকাল শনিবার বিকেলে এই আলোচনার আয়োজন করা হয়। এতে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনসহ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ী নেতারা অংশ নেন।

এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি শেখ ফজলে ফাহিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে একেকটি অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের তিন মিনিট করে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। তাতে সংগঠনের নেতারা খাতভিত্তিক সুনির্দিষ্ট সমস্যা তুলে ধরেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হয়রানি নিয়ে এক ব্যবসায়ী কথা বলতে গেলে আয়োজকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, এখানে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা আছেন। তাই কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে না বলে সার্বিক সমস্যা নিয়ে মোটা দাগে কথা বলেন। এরপর ব্যবসায়ীরা বক্তব্য দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা সংযত হয়ে যান।

বাংলাদেশ অ্যাডহেসিভ ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, ঢাকায় পণ্য আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁরা প্রায়ই পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। একই অভিযোগ করেন পান রপ্তানিকারক সমিতির এক নেতা।

এনবিআরের হয়রানির কথা তুলে ধরেন বাংলাদেশ অ্যাসিড মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের এক নেতা। এ সময় তিনি আরও বলেন, সালফিউরিক অ্যাসিড আমদানিতে সব মিলিয়ে ১৩৭ শতাংশ কর দিতে হয়। রাসায়নিক আমদানির বর্তমান নীতিমালা ব্যবসাবান্ধব নয়, এ নীতিমালার সংস্কার দরকার।

 বিভিন্ন সংগঠনের নেতার বক্তব্যের একপর্যায়ে এফবিসিসিআই সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, ব্যবসায়ী সম্প্রদায় ও কর কর্তৃপক্ষের মধ্যে যাতে সম্পর্কের ব্যবধান তৈরি না হয়, সেদিকে সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে। নকর আদায়ের নামে হয়রানি করা কাম্য নয়।

বাংলাদেশ অ্যাকিউমুলেটর অ্যান্ড ব্যাটারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ব্যাটারি আমদানির কাঁচামাল সিসা বিদেশ থেকে উচ্চ করে আমদানি করতে হয়। কিন্তু এই সিসা গলিয়ে পুনরায় ব্যবহারের আগে তা চোরাই পথে ভারতে পাচার হচ্ছে। এটি বন্ধ না হলে এ শিল্পের টিকে থাকা কঠিন হবে।

বিউটি পারলার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ঢাকার বেশির ভাগ পারলারের উদ্যোক্তা ও সেবাগ্রহীতা হলেন নারী। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কর আদায়ে এসব পারলারে এনবিআরের পুরুষ কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়, এতে অনেক সমস্যা হয়।