ট্রাম্পকে পছন্দ করুন আর না করুন...

ট্রাম্পকে নিয়ে দ্য ইকোনমিস্টে প্রকাশিত কার্টুন
ট্রাম্পকে নিয়ে দ্য ইকোনমিস্টে প্রকাশিত কার্টুন

ঠিক গত বছরের এই দিনে ডোনাল্ড ট্রাম্প আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় বসেন। এর আগে-পরে তাঁর নানা ধরনের বক্তব্য, নীতিগত সিদ্ধান্ত এবং ব্যক্তিগত আচরণ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে নিন্দা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। এতে তিনি দমবার পাত্র নন, যখন যা মনে হয় বা মুখে আসে-অকপটে বলে দেন। এ জন্য বলা হয়ে থাকে, ট্রাম্পের সমালোচনা করার মতো যেন আর কেউ বাকি নেই। 

ট্রাম্পের বিভিন্ন নীতি, সিদ্ধান্ত ও বক্তব্যের জের ধরে অনেকেই মনে করতে থাকেন, ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতিমালাও ভালো নয়। তাই যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি খারাপের দিকেই যাবে। কিন্তু সব শঙ্কা, সব রক্ষণশীল মনোভাব ভুল প্রমাণ করে মার্কিন অর্থনীতি অধিকতর চাঙা হয়ে উঠেছে। এমন ইঙ্গিতই মিলেছে দেশটির বিশ্বখ্যাত ম্যাগাজিন দ্য ইকোনমিস্ট-এর সর্বশেষ সংখ্যায়। সাপ্তাহিকীটির সংবাদ শিরোনাম ছিল, ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতিমালাও ততটা খারাপ নয়, যতটা ধারণা করা হয়েছিল।
এদিকে ইনভেস্টরস ডট কম নামে একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যম যেন আরেকটু এগিয়েই শিরোনাম করেছে, ‘তাঁকে ভালোবাসুন আর ঘৃণা করুন, অর্থনীতি চাঙা করার জন্য ট্রাম্প কিন্তু কৃতিত্বের দাবি রাখেন।’
দ্য ইকোনমিস্ট লিখেছে, ২০১৭ সালের দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে ৩ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে শ্রমিকের মজুরি। যেমন গত বছরের ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন, তখন দেশে বেকারত্বের হার বেড়ে ৪ দশমিক ৮ শতাংশে উঠেছিল। এক বছর পরে বেকারত্বের হার কমে ৪ দশমিক ১ শতাংশে নেমে এসেছে। ভোক্তাদের আস্থাসূচকও বেড়েছে। এসবে প্রমাণিত হয়, অর্থনীতি চাঙা করতে ট্রাম্প তাঁর প্রতিশ্রুতি পূরণ করে চলেছেন।
তবে ট্রাম্প ভাগ্যবানও বটে। কারণ, তাঁর এই এক বছরে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার-প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি। অর্থনীতিতে তাঁর সবচেয়ে বাজে ধারণা বা বক্তব্য ছিল বাণিজ্য নিয়ে, যা তিনি শিকেয় তুলে রেখেছেন। অর্থাৎ বাস্তবায়ন করেননি। যেমন চীন ও মেক্সিকোর পণ্য আমদানির ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি দিলেও শেষতক সেটি করেননি। একইভাবে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সম্পাদিত বাণিজ্য চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিলেও তা করেননি।
এদিকে ইনভেস্টরস ডট কম বলেছে, বিভিন্ন সূচকের অগ্রগতিতেই বোঝা যায়, মার্কিন অর্থনীতি চাঙা হচ্ছে। এ জন্য কৃতিত্ব পাবেন ট্রাম্প। অনলাইন গণমাধ্যমটি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের ইকোনমিক অপটিমিজম ইনডেক্স বা অর্থনৈতিক আশাবাদ সূচক এক লাফে ৬ শতাংশ বেড়ে ৫৫ দশমিক ১ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ব্যক্তিগত অর্থায়ন পূর্বাভাস সূচক বেড়ে ৬৪ পয়েন্টে উঠেছে। এটি ২০০৪ সালের পরে এই সূচকের সর্বোচ্চ অবস্থান।
সাম্প্রতিক এক জরিপেও অর্থনৈতিক অগ্রগতির কথা বলা হয়েছে। ওই জরিপে অংশ নেওয়া দুই-তৃতীয়াংশ উত্তরদাতাই বলেছেন, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ‘খুব ভালো বা ভালো অবস্থাতেই’ রয়েছে। অথচ ট্রাম্প যখন দায়িত্ব নেন, তখন মাত্র ৪৬ শতাংশ মানুষ এমন অভিমত দিয়েছে।
ইকোনমিস্ট বলছে, বাণিজ্যে বিদ্যমান দুরবস্থা দূর করতে পারলে চলতি ২০১৮ সালটিও মার্কিন অর্থনীতির জন্য ভালোই হবে।