ব্যবসা সম্প্রসারণে বার্জার

>

• বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান বার্জারের যাত্রা শুরু হয় ১৭৬০ সালে
• বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ নামে কোম্পানির যাত্রা শুরু ১৯৮০ সালে
• ১৯৯৯ সালে তারা সাভারে একটি বড় কারখানা করে
• ২০০৫ সালে বার্জার পুঁজিবাজারে নিবন্ধিত হয়
• পাঁচ বছরে বার্জারের বিক্রি বেড়েছে ৮৭ %
• অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৩০ একর জমি নিচ্ছে তারা 

দেশের রঙের বাজারের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ তাদের উৎপাদনসক্ষমতা সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে। এ লক্ষ্যে তারা চট্টগ্রামের মিরসরাই ও ফেনী ঘিরে প্রতিষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে ৩০ একর জমি ইজারা নিচ্ছে। আজ বুধবার এ বিষয়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) সঙ্গে বার্জারের চুক্তি সই হবে।

বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান বার্জারের যাত্রা শুরু হয় ১৭৬০ সালে। এ দেশে স্বাধীনতার আগে থেকে তারা ব্যবসা করছে। ১৯৭০ সালে তারা চট্টগ্রামে প্রথম কারখানা করে। তবে বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ নামে কোম্পানির যাত্রা শুরু হয় ১৯৮০ সালে। ১৯৯৯ সালে তারা সাভারে একটি বড় কারখানা করে। ২০০৫ সালে বার্জার পুঁজিবাজারে নিবন্ধিত হয়।

বার্জারের সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের (এপ্রিল-মার্চ) তাদের পণ্য বিক্রির পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৬৪৮ কোটি টাকা, যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ১৩ শতাংশ বেশি। পাঁচ বছর আগের তুলনায় গত বছর প্রতিষ্ঠানটির পণ্য বিক্রির পরিমাণ ৮৭ শতাংশ বেশি। বর্তমানে বার্জার বিভিন্ন ধরনের রং, আঠা ও নির্মাণ খাতের রাসায়নিক উৎপাদন করছে।

জানতে চাইলে বার্জারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রূপালী চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা প্রতি চার-পাঁচ বছরে কোম্পানিকে দ্বিগুণ করি। ভবিষ্যৎ সম্প্রসারণের অংশ হিসেবেই মিরসরাইয়ে জমি ইজারা নেওয়া হচ্ছে।’

বেজা জানিয়েছে, মিরসরাই ও ফেনীতে যে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে, সেটির আয়তন হবে ৩০ হাজার একর। সেখানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি ও অন্যান্য অবকাঠামো নিশ্চিত করা হচ্ছে। মিরসরাইয়ে বার্জারকে জমি বরাদ্দের বিষয়ে চুক্তির জন্য আজ এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

মিরসরাইয়ে বার্জার বিশেষায়িত রঙের কারখানা করতে চায়। পাশাপাশি ভবিষ্যতে কোনো বিনিয়োগকারীর সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগ করলে সেটাও মিরসরাইয়ে করবে তারা। এ ছাড়া মিরসরাইয়ে কেন্দ্রীয় ওয়্যারহাউস এবং অন্যান্য অবকাঠামো করার চিন্তাও আছে বার্জারের। বেজার কাছে বার্জার আপাতত ২৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে, যা পরে বাড়তে পারে।

জানতে চাইলে রূপালী চৌধুরী বলেন, ‘দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বিশেষায়িত রঙের চাহিদা তৈরি হবে। আমরা সেই বাজারে নজর দিয়ে মিরসরাইয়ে কারখানা করার চিন্তা করছি।’

২০১৭-১৮ অর্থবছরে বার্জারের বিক্রি বাড়লেও মুনাফা কমেছে। আলোচ্য সময়ে তাদের নিট মুনাফা দাঁড়ায় ১৬৭ কোটি টাকা, যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ৬ শতাংশ কম। গতকাল মঙ্গলবার দিন শেষে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) কোম্পানিটির ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ১ হাজার ২২৬ টাকা।

জানতে চাইলে রূপালী চৌধুরী বলেন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম কম ছিল। দেশেও বিক্রি ভালো হয়। ফলে আগের বছরের তুলনায় ওই বছর মুনাফা অনেক বেশি হয়। সর্বশেষ বছর বিশ্ববাজারে কাঁচামালের দাম বেড়ে গেলেও দেশে রঙের দাম বাড়ানো যায়নি। ফলে বিক্রি বাড়লেও সে হারে মুনাফা বাড়েনি। তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে বার্জার আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে।