করোনা মোকাবিলায় ৭ সুপারিশ বিল্ডের

করোনাভাইরাসের কারণে দেশের জনজীবন ও অর্থনীতি সংকটাপন্ন অবস্থার মুখোমুখি। এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য ক্ষুদ্র মাঝারি ও বৃহৎ শিল্পের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক সহায়তা তহবিল (এসইএএফ) গঠনসহ সাতটি সুপারিশ করেছে ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে গঠিত গবেষণা সংস্থা বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড)।

বিল্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফেরদৌস আরা বেগম আজ বুধবার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানান। এতে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের সংকট মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সম্পদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জরুরি ভিত্তিতে নীতিমালা গ্রহণে সরকারকে সহায়তা করতে ‘কোভিড-১৯ সংক্রান্ত নীতিগত পত্র’ প্রণয়ন করেছে বিল্ড।

বিল্ডের সাত সুপারিশ
জাতীয় অর্থনৈতিক তহবিলের (এনইএফ) অধীনে বিশেষ অর্থনৈতিক সহায়তা তহবিল (এসইএএফ) গঠন করার সুপারিশ করেছে বিল্ড। এ তহবিলের মাধ্যমে করোনার কারণে উদ্ভূত বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে এমএসএমই খাত ও শিল্পকারখানায় তারল্য সহায়তা দিতে হবে। তবে তহবিল থেকে দেওয়া ঋণ হতে হবে সুদবিহীন, যা তিন মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ দীর্ঘ মেয়াদে পরিশোধের ব্যবস্থা থাকবে।

সব খাতের আয়কর ও করপোরেট করের হার ৫ শতাংশ হ্রাস করার সুপারিশ করেছে বিল্ড। যেসব প্রতিষ্ঠানের তিন বছরের কর পরিশোধের রেকর্ড রয়েছে তাদের অতিরিক্ত কর অব্যাহতি দেওয়া যেতে পারে মনে করে সংস্থাটি। বিল্ড বলেছে, বিলম্বিত কর প্রদানের প্রক্রিয়া চালু করতে হবে, যাতে ব্যবসায়ীরা আর্থিক সমস্যায় না পড়েন। অন্যদিকে কোনো প্রতিষ্ঠান যাতে কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করে, সে বিষয়ে সরকারকে ভূমিকা রাখতে হবে। কর্মসংস্থান ধরে রাখতে সরকারকে কিছু ব্যবস্থা নিতে হবে। যেমন এক বছরের জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে অতিরিক্ত ২ শতাংশ কর ছাড়ের ব্যবস্থা করতে হবে। নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারীদের কর সুবিধার মাধ্যমে প্রণোদনা দিতে হবে।

স্থানীয় ছোট প্রতিষ্ঠানগুলোর দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে বলে মনে করে ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে গঠিত এই গবেষণা সংস্থা। সংস্থাটি বলছে, ছোট প্রতিষ্ঠানগুলোর বড় চ্যালেঞ্জ তারল্য ধরে রাখা। একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে নগদ অর্থ হলো অক্সিজেনের মতো। শ্রমিকদের এই সংকটের সময় সরাসরি মজুরি দিতে হবে।

বিল্ডের সুপারিশে বলা হয়েছে, সামগ্রিক জাতীয় অর্থনৈতিক তহবিল (এনইএফ) জাতীয় বাজেটের ১০ থেকে ১২ শতাংশ, যা প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। এই অর্থ থেকে বিশেষ অর্থনৈতিক সহায়তা তহবিল (এসএএফ) গঠনে বরাদ্দ দিতে হবে। ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানগুলো সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। তাই তহবিলের অর্থ বরাদ্দে তাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।

স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে আগামী অর্থবছরের বাজেটে গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে বলে মনে করে বিল্ড। এ ছাড়া করোনার কারণে বিভিন্ন শিল্পে যেসব ক্ষতি হয়েছে সেসবের তথ্য সংগ্রহের জন্য একটি অনলাইন ফরম্যাট তৈরি করার সুপারিশ করেছে সংস্থাটি। এর মাধ্যমে সামগ্রিক লোকসান মূল্যায়ন ও বিভিন্ন খাতের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ সহজ হবে বলে মনে করে বিল্ড।