জিপির নিষেধাজ্ঞা কাটছে, এনওসি দিচ্ছে বিটিআরসি

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) কাছ থেকে অবশেষে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনাপত্তিপত্র (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট বা এনওসি) পাওয়া শুরু করল দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন।

বিটিআরসি গত ২২ জুলাই নিরীক্ষা থেকে পাওনা অর্থ আদায়ের পদক্ষেপ হিসেবে এনওসি দেওয়া বন্ধ করে দেয়। এ কারণে গ্রাহকদের নতুন নতুন প্যাকেজ দেওয়া ও সরঞ্জাম আমদানির সুযোগ বন্ধ হয়ে যায় গ্রামীণফোনের জন্য। বিভিন্ন সময় সেবার মান কমে যাওয়ার অভিযোগের জবাব হিসেবে এটিকে সামনে আনছিল গ্রামীণফোন।

বিটিআরসি গ্রামীণফোনের আবেদনগুলো ধাপে ধাপে ছাড়ছে। জানতে চাইলে গ্রামীণফোনের হেড অব এক্সটার্নাল কমিউনিকেশন মুহাম্মদ হাসান এক বিবৃতিতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্রামীণফোন আদালতের নির্দেশ মেনে চলছে। অন্যদিকে বিটিআরসিও আংশিকভাবে এনওসি ছাড় করে ইতিবাচকভাবে সাড়া দেওয়া শুরু করেছে।’ তিনি আরও বলেন, সব এনওসি দেওয়া হলে গ্রামীণফোনের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালানো ও গ্রাহকসেবা দিতে সুবিধা হবে।

নিরীক্ষা দাবি বাবদ গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকার পাওনা দাবি করে আসছে বিটিআরসি। এ টাকা আদায়ে গ্রামীণফোনের সরঞ্জাম আমদানি ও প্যাকেজ অনুমোদনের ওপর সংস্থাটি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে বিষয়টি আদালতে গড়ায়। একপর্যায়ে সুপ্রিম কোর্ট নিষেধাজ্ঞায় ছাড় পেতে হলে গ্রামীণফোনকে ২ হাজার কোটি টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। এ নিয়ে গ্রামীণফোন রিভিউ আবেদন করে। গত ২০ ফেব্রুয়ারি রিভিউ আবেদনের শুনানিতে আপিল বিভাগ ১ হাজার কোটি টাকা জমা দিয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি আবার আদালতে যেতে বলেন।


সে অনুযায়ী গ্রামীণফোন ১ হাজার কোটি টাকা জমা দেয়। আদালত ২৪ ফেব্রুয়ারি আদেশ দেন যে বাকি ১ হাজার কোটি টাকা পরিশোধের জন্য ৩১ মে পর্যন্ত সময় পাবে গ্রামীণফোন। অন্যদিকে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছিলেন, সেটা বহাল আছে। এর মানে হলো, গ্রামীণফোনের এনওসি পেতে আর কোনো বাধা নেই।

গত ২২ মার্চ গ্রামীণফোন বিটিআরসির কাছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আদেশের সত্যায়িত অনুলিপি বা সার্টিফায়েড কপি জমা দেয়।

গ্রামীণফোনের আগে আরেক অপারেটর রবি আজিয়াটা আদালতের আদেশ অনুযায়ী বিটিআরসিকে নিরীক্ষা দাবির টাকা দেওয়া শুরু করেছে। ১৩৮ কোটি টাকা দিতে রবি মাসে একটি করে মোট পাঁচ কিস্তিতে টাকা শোধের সুযোগ পেয়েছে। বিটিআরসি এরই মধ্যে রবির ওপর আরোপিত নানা নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। রবির কাছে বিটিআরসি মোট ৮৬৭ কোটি টাকা পাওনা দাবি করছে।
অবশ্য দুই অপারেটরের কেউ-ই এ নিরীক্ষা দাবি মেনে নেয়নি। তারা এ নিয়ে আলোচনা চায়। গ্রামীণফোনের মুহাম্মদ হাসান প্রথম আলোকে দেওয়া সর্বশেষ বিবৃতিতেও বলেন, গ্রামীণফোন নিরীক্ষা ও দাবির বিষয়ে একমত নয়। তারা বিরোধটির গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ সমাধান আশা করছে।