যেনতেনভাবে চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে

ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী, সাবেক চেয়ারম্যান, বিএসইসি
ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী, সাবেক চেয়ারম্যান, বিএসইসি

বর্তমানে যেভাবে বাজার চলছে, তা দেখে আমার মনে হয় না দেশে কোনো শেয়ারবাজার আছে। প্রতিদিনই দেখছি ৩০০ কোম্পানির মধ্যে ২৫০ কোম্পানির দামের কোনো হেরফের হয় না। অল্পসংখ্যক শেয়ারের হাতবদল হয়। এ বাজারে ক্রেতারা যেমন স্বাচ্ছন্দ্য পাচ্ছেন না, তেমনি বিক্রেতারাও। তাহলে কীভাবে এটা বাজার হয়? বাজার হলে তো সেখানে স্বাভাবিক লেনদেন হওয়ার কথা।

আমার কাছে মনে হচ্ছে, শেয়ারবাজারটা চালাতে হবে, তাই যেনতেন উপায়ে সেটি চালানো হচ্ছে। যার কারণে শেয়ারবাজারের স্বাভাবিক নিয়মনীতির সঙ্গে আমাদের বাজারের কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

শেয়ারের দাম একটি নির্দিষ্ট সীমায় বেঁধে দেওয়ার কারণে বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতার সংকট দেখা দিয়েছে। অনেকে শেয়ার বিক্রি করতে গিয়েও বিক্রি করতে পারছেন না। আবার সম্ভাব্য ক্রেতারা মনে করছেন, এটা আসল দাম নয়। জোর করে বেঁধে দেওয়া দাম। তাই নতুন ক্রেতাও বাজারে আসছেন না। এ কারণে লেনদেন নেমেছে অর্ধশত কোটি টাকায়।

আমি মনে করি, এ লেনদেন কয়েক মাস চললে বাজারসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো বিপদে পড়বে। এক্সচেঞ্জ থেকে শুরু করে ব্রোকারেজ হাউস, মার্চেন্ট ব্যাংক, মিউচুয়াল ফান্ড, সম্পদ ব্যবস্থাপক প্রতিষ্ঠান—কেউই টিকতে পারবে না। অনেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হবে। সেটি এখনকার চেয়ে আরও খারাপ হবে।

বাজেটে শেয়ারবাজারে কালোটাকা বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তাও আবার তিন বছর লক-ইনের (বিক্রি করা যাবে না) শর্তে। প্রথমত, আমি মনে করি না ঘোষণা দিয়ে এ দেশে কালোটাকার মালিকেরা টাকা সাদা করতে ঝাঁপিয়ে পড়বেন। কারণ, কোনো কালোটাকা অলস পড়ে নেই। কোনো না কোনোভাবে ওই টাকা বিনিয়োগ করা আছে। তাহলে নতুন করে কর দিয়ে কেন সেই টাকা সাদা করতে আগ্রহী হবেন লোকে? দ্বিতীয়ত শেয়ারবাজারে যে শর্তে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হয়েছে, তাতে কোনো বিনিয়োগ আসবে না। ধরা যাক, কারও হাতে ১০০ কোটি কালোটাকা আছে। তিনি ১০ কোটি টাকা কর দিয়ে বাকি ৯০ কোটি টাকা কেন তিন বছরের জন্য বাজারে ফেলে রাখবেন?