কোরবানির আগে চামড়া ব্যবসায়ীদের ঋণের সুযোগ দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

চামড়া খাতের ঋণের প্রায় ৭০ শতাংশই খেলাপি হয়ে পড়েছে। এ খাতের উদ্যোক্তারা নতুন করে ঋণ নিতে পারছে না। এজন্য কোরবানীর ঈদকে সামনে এসব ঋণ সহজ শর্তে পুনঃতফসিল করার সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যাতে এসব উদ্যোক্তারা ঋণ নিয়ে কাঁচা চামড়া কিনতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংক আজ এ নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

এতে বলা হয়েছে, মাত্র ২ শতাংশ এককালীন জমা দিয়ে চামড়ার ঋণ পুনঃতফসিল করা যাবে। এই সুবিধা পেতে হলে ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে আবেদন করতে হবে। ব্যাংকগুলো নিজেরাই এ ঋণ পুন:তফশিল করতে পারবে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন লাগবে না।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, চামড়া শিল্পে সারা বছর ধরে ব্যবহৃত কাঁচামালের প্রায় অর্ধেকের যোগান আসে প্রতিবছর ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর চামড়া থেকে। এ সময় কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের প্রয়োজনীয় অর্থের যোগান নিশ্চিত করা সম্ভব হলে একদিকে মূল্যবান কাঁচামাল সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে, অন্যদিকে কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রির মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী আর্থিকভাবে উপকৃত হবে। তবে নিয়মিতভাবে পরিশোধ না হওয়ায় এ খাতের কিছু ঋণ খেলাপি (শ্রেণিকৃত) হয়ে পড়ছে। ফলে এ খাতে স্বাভাবিক ঋণ প্রবাহ বজায় রাখা অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হচ্ছে না।

এজন্য প্রকৃত চামড়া ব্যবসায়ীদের নিকট অর্থ প্রবাহ সচল রাখার উদ্দেশ্যে তাদের খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এগুলো হলো, ঋণ গ্রহীতাদের আওতার বাইরে কোনো কারণে ঋণ শ্রেণিকৃত হয়ে থাকলে এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সচল থাকলে তা পুনঃতফসিল সুবিধা দেওয়া যাবে। কেইস-টু-কেইস ভিত্তিতে এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ তলবি ও চলমান ঋণ সর্বোচ্চ ছয় বছর মেয়াদে এবং মেয়াদী ঋণ সর্বোচ্চ আট বছর মেয়াদে পুনঃতফসিল করা যাবে। কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়া কেনার জন্য নতুন ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে 'কম্প্রোমাইজড অ্যামাউন্ট' গ্রহণের শর্ত শিথিল করা যাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চামড়া খাতে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ৮ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। এর মধ্যে খেলাপি হয়ে গেছে ৫ হাাজার কোটি টাকার বেশি। ঋণের বড় অংশই সরকারি ব্যাংকের।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, গত কোরবানীতে চামড়া কেনা নিয়ে সংকট তৈরী হয়েছিল। এবার যাতে এমন সমস্যা না হয়, এজন্য চামড়া কিনতে ঋণ প্রদান সহজ করতেই এ উদ্যোগ। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যাংকগুলো ঋণ দেবে কিনা, এ নিয়ে সন্দিহান কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তারাই।