চট্টগ্রামে ভূমি ব্যবহারের ছাড়পত্র মিলবে ৭ দিনে

চট্টগ্রামে বিনিয়োগকারীর ভূমি ব্যবহারের ছাড়পত্র পেতে ৪৫ দিন সময় লাগত। এখন থেকে সেটা ৭ থেকে ১৫ দিনে অনলাইনে দেওয়া হবে। এ জন্য বিনিয়োগকারীদের চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) কাছে যেতে হবে না। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) এক দরজায় সেবা বা ওয়ান স্টপ সার্ভিসের আওতায় অনলাইনে সেবাটি পাওয়া যাবে।

এটিসহ বিডার ওয়ান স্টপ সার্ভিসে নতুন করে তিনটি সেবা যুক্ত হয়েছে। বাকি দুটি হলো নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাইকরণ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের নিরাপত্তা ছাড়পত্র।

বিডার ওয়ান স্টপ সার্ভিসে আজ বুধবার এসব সেবা আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হয়। বিডা আয়োজিত ভার্চ্যুয়াল এক অনুষ্ঠানে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।

বিডা ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করে। এ পর্যন্ত ওয়ান স্টপ সার্ভিসের আওতায় বিডার নিজস্ব ১৪টি এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ৭টিসহ মোট ২১টি সেবা যুক্ত হলো। যদিও এ কার্যক্রমের আওতায় ৩৫টি সংস্থার ১৫০টি সেবা অনলাইনে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এখন থেকে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাইয়ের কার্যক্রম অনলাইনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে করা হবে। বিনিয়োগকারীরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের নিরাপত্তা ছাড়পত্র পাবেন তিন তিনের মধ্যে। আর চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ভূমি ব্যবহারের ছাড়পত্র দেবে ৭ থেকে ১৫ দিনে। যেটা আগে ৪৫ দিন লাগত।

দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের এক জায়গা থেকে বিভিন্ন সংস্থার সেবা দিতে সরকার ২০১৮ সালে ওয়ান স্টপ সার্ভিস আইন পাস করে। সংস্থাগুলো যাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিনিয়োগকারীদের সেবা দিতে বাধ্য থাকে, তা নিশ্চিত করতেই এই আইন করা হয়।

ওয়ান স্টপ সার্ভিস আইনের অধীনে বিডা, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ বেপজা ও বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনকে (বিসিক) রাখা হয়েছে। সমস্যা হলো, সরকারের ৩৫টি বিভাগ ও সংস্থা বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন ধরনের সেবা দেয়। তাদের অনেকের মধ্যেই এক দরজার অধীনে আসার ক্ষেত্রে অনীহা আছে।

নতুন তিন সেবা যুক্ত করার অনুষ্ঠানে সালমান এফ রহমান বলেন, এক দরজায় সেবার আওতায় বিনিয়োগকারীদের জন্য যত সেবা যুক্ত হবে, বিশ্বব্যাংকের সহজে ব্যবসা সূচক বা ইজ অব ডুয়িং বিজনেসে বাংলাদেশ তত উন্নতি করবে।

বিশ্বব্যাংকের ইজ অব ডুয়িং বিজনেস সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৮৯টি দেশের মধ্যে ১৬৮তম। এ ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশ অনেক ভালো অবস্থানে। বাংলাদেশ একেবারে পেছনের সারিতে। যদিও ২০২১ সালের মধ্যে এ ক্ষেত্রে অন্তত ৯৯তম হতে চায়। গত বছর সূচকে বাংলাদেশ আট ধাপ উন্নতি করেছে।

এ বিষয়ে সালমান এফ রহমান বলেন, ‘আমরা যেভাবে কাজ করছি, তাতে একটা বিশ্বাস এসেছে যে আগামী বছর আমরা লক্ষ্য অনুযায়ী উন্নতি করতে পারব।’

বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত বিডা ১২টি সংস্থার সঙ্গে সমঝোতা স্মারকে সই করেছে। কিছুদিনের মধ্যে আরও ১০টির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হবে। ডিসেম্বরের মধ্যে ৫০টি সেবা ওএসএসের মাধ্যমে দেওয়া সম্ভব হবে। তিনি বলেন, বাকি ১০০টি সেবা আগামী বছরের মধ্যে ওএসএসের অধীনে আনার লক্ষ্য নিয়ে কাজ চলছে।

অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মো. আলমগীর, গণপূর্ত সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. শহিদুজ্জামান প্রমুখ বক্তব্য দেন।