শিক্ষাজীবনেই পেশা জীবনের অভিজ্ঞতা

শিক্ষার্থীদের সামনে বক্তব্য রাখছেন ইউনিলিভারের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক কুনাল শর্মা। ছবি: সংগৃহীত
শিক্ষার্থীদের সামনে বক্তব্য রাখছেন ইউনিলিভারের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক কুনাল শর্মা। ছবি: সংগৃহীত

ধরুন, আপনার বিশ্ববিদ্যালয়-জীবন প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। অর্জিত শিক্ষা ঝুলিতে ভরে কর্মজীবন শুরু করার অপেক্ষায় আছেন। ঠিক এই সময়টাতে যদি স্বনামধন্য কোনো বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের হয়ে কিছু কাজ করার অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায়, নিশ্চয়ই মন্দ হয় না! বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য তেমনই একটা সুযোগ করে দেয় ইউনিলিভার বাংলাদেশ। সপ্তমবারের মতো আয়োজিত এই মহাযজ্ঞ অনেক শিক্ষার্থীরই চেনা। কর্মজীবনে প্রবেশ করার আগেই নিজেদের প্রস্তুতি যাচাই করার এক মঞ্চ বিজমায়েস্ত্রোস। এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবসায়িক সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করার দায়িত্ব দেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের। ইউনিলিভারের ব্যবসায়িক কার্যক্রম আছে যেসব দেশে, সেসব দেশের তরুণদেরই আয়োজকেরা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার আহ্বান জানান।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর আয়োজকদের কয়েকজন প্রতিনিধি হাজির হয়েছিলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে। সঙ্গে ছিলেন বর্তমানে ইউনিলিভার বাংলাদেশে কর্মরত নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রাক্তন দুই শিক্ষার্থী ফারদিনা হাবিব ও ফারিয়া হক। তাঁরা দুজনই এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছিলেন। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক কুনাল শর্মা। ‘লার্ন টু লিড’ শিরোনামে নেতৃত্ব-বিষয়ক একটি পর্বে বক্তব্য দেন তিনি। কুনাল শর্মা বলেন, ‘নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সঠিক বয়সের অপেক্ষা করতে হবে না। যেকোনো বয়সেই নেওয়া যায় নেতৃত্বের ভার। প্রয়োজন শুধু সামনে এগোনোর সাহস।’ বক্তব্যে তিনি তাঁর কর্মজীবন ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভাগাভাগি করেন। মিলনায়তনে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরও দেন তিনি।

এরপর মঞ্চে আসেন ইউনিলিভারের অ্যাকটিভেশন ম্যানেজার ফারদিনা হাবিব। বহুজাতিক এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা জানান তিনি। কিছুদিন আগেও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী ছিলেন। সে কথা স্মরণ করে ফারদিনা বলছিলেন, ‘আজ আমি দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কাজ করছি। এটা কোনোভাবেই সম্ভব হতো না, যদি এই সহায়তাটা না পেতাম।’ এ ছাড়া আয়োজনে বক্তব্য দেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আতিকুল ইসলাম।

ফারিয়া হক জানালেন বিজমায়েস্ত্রোসের বিস্তারিত। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে হবে তিনজনের দল হিসেবে। বিজয়ী দলকে নিয়ে যাওয়া হবে লন্ডনে অনুষ্ঠেয় ইউনিলিভার ফিউচার লিডারস লিগে। সেখানে তাঁরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে লড়বেন বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা প্রতিযোগীদের সঙ্গে। মূল পর্বে বিজয়ী দলের জন্য থাকবে আকর্ষণীয় পুরস্কার। এখানেই শেষ নয়, এরপর বিজয়ীরা সুযোগ পেতে পারেন ইউনিলিভার ফিউচার লিডারস প্রোগ্রামে (ইউএফএলপি)। এটি মূলত একটি ‘ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি প্রোগ্রাম’।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত এক শিক্ষার্থী, তালহা বিন সাত্তারের সঙ্গে কথা হলো। তাঁর বক্তব্য, ‘আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এত বড় একটা প্রতিষ্ঠানে কাজ করার অভিজ্ঞতা জানতে পেরে আমিও বেশ অনুপ্রেরণা পেলাম।’ তালহা বিন সাত্তারের মতো আরও যেসব শিক্ষার্থী অনুপ্রেরণার খোঁজ করছেন, তাঁদের জন্য সব শেষে একটা তথ্য জানিয়ে রাখি। ২০১৬ সালে বিশ্বের নানা দেশ থেকে অংশ নেওয়া প্রতিযোগীদের পেছনে ফেলে ইউনিলিভার ফিউচার লিডারস লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদেরই একটি দল!