ঢালিউড ২০১৩

প্রেমিক নাম্বার ওয়ান, নিঃস্বার্থ ভালোবাসা ও পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনী
প্রেমিক নাম্বার ওয়ান, নিঃস্বার্থ ভালোবাসা ও পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনী
মাই নেম ইজ খান
মাই নেম ইজ খান

এ বছর মুক্তি পেয়েছে ৫১টি চলচ্চিত্র। বেশ কিছুসংখ্যক ছবি আলোচনায় এসেছে। ডিজিটাল প্রযুক্তিতে নির্মিত হয়েছে অনেক ছবি। ছবি হিট হলেও লগ্নিকৃত টাকা ফিরে আসেনি অনেকের। আসুন ফিরে দেখা যাক ঢালিউড ২০১৩
সুসংবাদ একেবারেই নেই তা তো নয়। যেমন, টেলিভিশন ছবিটি বেশ কিছু আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছে। কিন্তু চলচ্চিত্রের দর্শক বেড়েছে কিংবা ভালো মানের অসংখ্য ছবি হচ্ছে আমাদের দেশে, এ কথা কিন্তু আমরা বলতে পারছি না। ২০১৩ সালটি তাহলে কেমন গেল?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে আড্ডা দিচ্ছিলেন একদল তরুণ। তাঁদের কাছে প্রশ্ন ছিল আমাদের, এ বছর চলচ্চিত্রের কোন বিষয়টি নজর কেড়েছে?
তর্ক-বিতর্কের পর ওরা ওঁদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিল: এবার ডিজিটাল প্রযুক্তিনির্ভর চলচ্চিত্র এসেছে। কম টাকায় ভালো চলচ্চিত্র তৈরি হওয়ার পথ খুঁজে পাওয়া গেছে। এবার হয়তো আমাদের চলচ্চিত্র এগিয়ে যাবে।
এ বছর মুক্তি পেয়েছে ৫১টি ছবি। এর মধ্যে পাঁচটি ছবি ছিল ৩৫ মিলিমিটারে নির্মিত। বাকিগুলো ডিজিটাল। কিন্তু এই ডিজিটাল ছবিগুলোর মধ্যে কোনো কোনোটি ছিল এতটাই দুর্বল যে এক বা দুই সপ্তাহের বেশি সেগুলো চালানো যায়নি কোনো হলে।

অন্য রকম ভালোবাসা
অন্য রকম ভালোবাসা

আমাদের দেশে শহর ও গ্রামপর্যায়ে প্রেক্ষাগৃহ আছে ৪৫০ থেকে ৫০০টি। দুই কোটি টাকার বেশি খরচ করে যেসব চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়েছে, সেগুলো হিট হলেও লগ্নিকৃত টাকা উঠিয়ে নিতে কষ্ট হয়েছে প্রযোজক-পরিবেশকদের, কারণ আমাদের দেশে চলচ্চিত্র বাজারটি মোটামুটি দেড় কোটি টাকার। এ বছরের হিট বা মোটামুটি অনেক প্রেক্ষাগৃহে চলেছে, এমন ছবিগুলোর মধ্যে জোর করে ভালোবাসা হয় না ১৪০টি হলে, নিষ্পাপ মুন্না ২০২টি, জটিল প্রেম ২০০টি, নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, অন্য রকম ভালোবাসা, দেহরক্ষী ১৭০টি,মাই নেম ইজ খান ১৫০টি, এর বেশী ভালোবাসা যায় না ১১০টি, প্রেম প্রেম পাগলামি ১৩৮টি, পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনী ১০৬টি হলে মুক্তি পায়। ৯০ থেকে ২০০ প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শনীর পরও কোনো কোনো ছবি পুঁজির পুরোটা তুলে আনতে পারেনি। রাজনৈতিক অস্থিরতা, ভিডিও পাইরেসি ইত্যাদির কারণে দর্শকদের বড় একটা অংশ হলমুখো হয়নি।
চলচ্চিত্র ব্যবসার কথা থাক। আমরা বরং খোঁজ নিয়ে আসি বছরজুড়ে চলচ্চিত্রের হালহকিকতের। অনন্ত জলিলের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা ছবিটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বেশ। সে আলোচনায় মুখরোচক রসিকতাও কম ছিল না। পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনী নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
ভিন্নধারার ছবি হিসেবে আলোচনায় থাকে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর টেলিভিশন। এ ছাড়া সৈয়দ অহিদুজ্জামান ডায়মন্ডের অন্তর্ধান, গাজী রাকায়েতের মৃত্তিকা মায়া, কাজী মোরশেদের একই বৃত্তে, বেলাল আহমেদের অনিশ্চিত যাত্রা ও রাজ্জাকের আয়না কাহিনী ভিন্নধারার ছবি হিসেবে বিবেচিত হয়।
এ বছর শাকিব খান অভিনীত নয়টি ছবি মুক্তি পায়। নতুন তারকা বাপ্পীর মুক্তিপ্রাপ্ত ছবির সংখ্যা সাত। অপু বিশ্বাসের তিনটি, মৌসুমীর দুটি, ফেরদৌসের দুটি, মাহির চারটি, ববির তিনটি, নিপুণের তিনটি, আঁচলের তিনটি, সাহারার তিনটি, আমানের চারটি, নিরবের তিনটি এবং ইমনের একটি করে ছবি মুক্তি পায়। আরিফিন শুভর দুটি ছবি মুক্তি পায় এ বছর। তাঁর অভিনয় আলোচনায় ছিল।
কেমন হবে ২০১৪ সালটি? চলচ্চিত্র কি ৩৫ মিমি থেকে ডিজিটালের দিকেই পুরোপুরি যাত্রা করবে, নাকি পাশাপাশি চলবে দুটোই? চলচ্চিত্রে কি নতুন মুখের আনাগোনা বাড়বে, নাকি পুরোনোরাই এগিয়ে নিয়ে যাবেন শিল্পটিকে? সে উত্তর তো এখন পাওয়া যাবে না। আমরা চোখ রাখব সামনের বছরের দিকে। মনে-প্রাণে চাইব, আমাদের চলচ্চিত্র ঘুরে দাঁড়াবে। লগ্নিকৃত টাকা ফেরত আসবে। অসাধারণ পরিচালনা-অভিনয়ে মুগ্ধ হবে দর্শক।