যে কারণে নিবন্ধন করতে পারেননি অনেকেই!

মেকাল হাসান
মেকাল হাসান

রাজধানীবাসীর বড় পরিসরে লোকসংগীতের পিয়াস মেটানোর উপায় ছিল আর্মি স্টেডিয়ামের লোকসংগীত উৎসব। সান কমিউনিকেশনসের আন্তর্জাতিক এই উৎসবে এ বছর নিবন্ধন করতে পারেননি অনেক লোক। দুঃখ ও ক্ষোভ নিয়ে অনেকেই যোগাযোগ করেছিলেন প্রথম আলোর সঙ্গে। আয়োজকদের কাছ থেকে জেনে নিয়ে আমরাও সাধ্যমতো জানাতে চেষ্টা করেছি কেন, কী কারণে এ বছর নিবন্ধনে এত জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।
উৎসব উপভোগে আগ্রহীদের অনেকেই অনলাইনে নিবন্ধন করতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। কেউ অনেকবার চেষ্টা করেও পারেননি। অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, চার সংখ্যার পিন কোড বা ভেরিফিকেশন কোড আসতে দেরি হওয়া, ই-মেইলে পাস না পৌঁছানো, নিবন্ধন শুরু হওয়ার দ্রুততম সময়ের ভেতরে তা বন্ধ হয়ে যাওয়া। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত স্বাধীন হক জানান, তিন দিন চেষ্টার পর নিবন্ধনে সফল হলেও ই-মেইলে টিকিট পাননি তিনি। ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক তানিয়া তানজিন বলেন, ‘কোডের জন্য অপেক্ষা করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। এ বছর বোধ হয় আর যাওয়া হলো না।’
আয়োজক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলাপে জানা গেছে, বহু মানুষ নিবন্ধন করার জন্য একসঙ্গে ওয়েবসাইটে প্রবেশ করায় প্রথম দিন একটু জটিলতা তৈরি হয়েছিল। পরে সেটি ঠিক হয়ে যায়। দুপুর ১২টার পর খুব দ্রুত সেটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে তাঁরা জানান, প্রতিদিনের নির্দিষ্ট কোটা পূরণ হয়ে যাওয়ার ফলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধন–প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। এ প্রসঙ্গে সান কমিউনিকেশনসের ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর তানভীর হোসেন প্রথম আলোকে জানান, স্টেডিয়ামে ধারণক্ষমতার কথা মাথায় রেখে খুব বেশি দর্শককে নিবন্ধনের সুযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, নিবন্ধনের জন্য ওয়েবসাইট খুলে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বহু মানুষ একসঙ্গে নিবন্ধন করতে থাকেন। স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতার মোট সংখ্যাকে পাঁচ দিয়ে ভাগ করে প্রতিদিন নির্দিষ্টসংখ্যক লোককে নিবন্ধনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সেটি পূরণ হয়ে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধন–প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেছে। তাঁরা জানান, আর্মি স্টেডিয়ামে প্রতিদিন ২৫ হাজার লোক এই উৎসব উপভোগ করতে পারবেন।
ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে এই মৌসুমে লোকসংগীতের আসর বসে। নিরাপত্তা ও নানা কারণে সারা দেশের বাউলদের আখড়াগুলোতে উপস্থিত হয়ে সংগীত উপভোগ করার সুযোগ যাঁরা পান না, তাঁদের জন্য লোকসংগীত উৎসবই ছিল একমাত্র ভরসা। এতে আন্তর্জাতিক লোকসংগীতশিল্পীদের সম্পৃক্ত করায় এই উৎসব হয়ে উঠেছে আরও আকর্ষণীয়। কিন্তু নিবন্ধন করতে না পারা বহু মানুষের খেদ ও তৃষ্ণা উভয়ই বাড়িয়ে দিয়েছে এই উৎসব।
৯ নভেম্বর থেকে রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে তিন দিনের ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকসংগীত উৎসব ২০১৭’। তৃতীয় এই আয়োজনে বাংলাদেশসহ আটটি দেশের লোকসংগীতশিল্পীরা গান পরিবেশন করবেন। সরাসরি মাঠে উপস্থিত থাকতে না পারলেও মাছরাঙা টেলিভিশনের সৌজন্যে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোকফেস্ট ২০১৭-এর ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে উৎসবটি উপভোগ করতে পারবেন পৃথিবীর লোকসংগীতপ্রেমী দর্শক–শ্রোতারা।